দোহারে জমি নিয়ে বিরোধে বসতবাড়িতে হামলা, টাকা-স্বর্ণালংকার লুট
Published: 7th, March 2025 GMT
ঢাকার দোহারে জমিসংক্রান্ত ঘটনার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটায় উপজেলার মুন্সিকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুতারপাড়া ইউনিয়নের মুন্সীকান্দা মৌজায় আবদুর রব মোল্লা প্রায় ৩০ বছর ১২ শতাংশ খাসজমি দখল করে আসছিলেন। গত বছর স্থানীয় শেখ চুন্নু মিয়াসহ ৯ জন বাদী হয়ে ওই জমি দখলমুক্ত করতে একটি রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন জমি দখলমুক্ত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকার রাতে আবদুল কামাল, আবু কালাম, রাহিম, সুমন মোল্লা, রিফাত, আসলামসহ ২০-২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শেখ চুন্নু মিয়ার বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
ভুক্তভোগী চুন্নু মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন বলেন, হামলাকারীরা ঘরের আলমারি থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় তিনি রব মোল্লাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে দোহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে জানতে অভিযুক্ত আবদুল কামালের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি। তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘কামাল এসব করেনি। তারা নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে মামলার ষড়যন্ত্র করছে।’
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ওই ঘটনায় চুন্নু মিয়ার ছেলে জাকির বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
সরাইলে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরকান্দা গ্রামের আমীর আলীর বংশ এবং চান্দের বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে চান্দের বংশের শাহনেওয়াজ নামের এক তরুণের সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ জন্য চান্দের বংশের লোকজন আমীর আলীকে দায়ী করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, থানার ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনও, ওসি এবং সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন, সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান চৌধুরী, এএসআই আলা উদ্দীন, পুলিশ সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও মশিউর রহমান ইটের আঘাতে আহত হন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ রাতে চারজনকে আটক করে।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আমীর আলীর পক্ষের লোকজন চান্দের বংশের অন্তত ১০টি বতসবাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এ ছাড়া শাহজাহান মিয়ার বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর।
সরাইল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আলী মিয়া (৪০) ও কানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি চান্দের বংশের পক্ষের। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতের ঘটনায় আমরা ইটের আঘাতে ব্যথা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রামের অবস্থা শান্ত রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ইউএনও মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। রাতের অন্ধকারে ইটের আঘাত পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটি হতেই পারে। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কথায় কথায় সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আমি চাই এখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করুক।’