হিযবুত তাহরীরের কর্মসূচি ঘিরে বাইতুল মোকাররামসহ পুরো এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ শুক্রবার সকাল থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে জাতীয় মসজিদ এলাকায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর নাইটেঙ্গেল মোড়, পুরানো পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল ও গুলিস্থানসহ আশপাশের প্রতি মোড়ে মোড়ে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। পাশাপাশি বাইতুল মোকারম মসজিদের উত্তর গেটে জল কামান, এপিসি ও প্রিজন ভ্যান মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুরো এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এ বিষয়ে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহরিয়ার আলী সমকালকে বলেন, বাইতুল মোকাররম ও আশপাশের পুরো এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে। এখানে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রোগ্রাম করার প্রশ্নই আসে না। 

তিনি আরও বলেন, নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ শুক্রবার হিযবুত তাহরীর রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘মার্চ ফর খিলাফত’–এর ডাক দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপি গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, হিযবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধঘোষিত কোনো সংগঠন সভা, সমাবেশ ও যেকোনো উপায়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন। জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হিযবুত তাহরীর তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মনিরুল ইসলাম (৪০), মোহতাসিন বিল্লাহ (৪০), মাহমুদুল হাসান (২১)। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সেক্টর-১১ ও সেক্টর-১২ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা বাইতুল মোকাররাম মসজিদ এলাকায় ‘মার্চ ফর খিলাফত’ নামক সমাবেশ পালন সংক্রান্ত গোপন পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানা গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য় ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুমের ঢেউ, বেড়েছে রহস্যজনক মৃত্যু

শওকত আহমেদের মৃতদেহ যখন পাওয়া গেল, তখন তাঁর চোখ দুটি ছিল রক্তাক্ত। তাঁর চুল খসে পড়ছে। ১৮ বছর বয়সী এ যুবকের হাত-পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছিল। তাঁর বাবা মোহাম্মদ সাদিক এসব তথ্য জানান। ঘটনাটি গত ১৬ মার্চের। এর তিন দিন পরই সাদিক জানতে পারেন তাঁর বড় ছেলে রিয়াজও (২৫) মারা গেছেন। তারা দু’জনই এক মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন। 

ভারত শাসিত কাশ্মীরের গুজ্জার সম্প্রদায়ের মানুষ তারা। স্থানীয় আইন প্রয়োগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, শওকত ও রিয়াজ কাশ্মীরের কুলগাম অঞ্চলের একটি নালায় ডুবে গিয়েছিলেন, যা তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। তাদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ‘সম্ভাব্য আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। 
কিন্তু সাদিক ও গুজ্জার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ বয়ান মানতে নারাজ। সাদিক জানেন না তাঁর দুই ছেলের গুম হওয়া ও পরে মারা যাওয়ার আসল কারণ কী; এটি নিরাপত্তা বাহিনী করেছে, নাকি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, তাদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

সরকারি বাহিনী এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বয়ানের ওপর গভীর অবিশ্বাস রয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের, যেখানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে বেড়েছে গুম। এসব গুমের কিছুদিন পরই মিলছে মৃতদেহ। মুখতার আহমদ আওয়ান নামে ২৪ বছরের আরেক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন, যার খোঁজ এখনও মেলেনি। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বের হয়ে আর ফেরেননি। 

সরকারের ওপর অনাস্থা কাশ্মীরের ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। অ্যাসোসিয়েশন অব প্যারেন্টস অব ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসন্সের (এপিডিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে ভারত শাসিত এলাকাটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার কাশ্মীরি নিখোঁজ হয়েছেন।

কেবল এ তিনজনই নয়, কাশ্মীরে যেন গুমের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। গত ৫ মার্চ কুলগামের পাশের কাঠুয়া জেলা থেকে যুগেশ সিং (৩২), দর্শন সিং (৪০) ও ১৫ বছরের বরুণ সিং নিখোঁজ হন। তারা বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কয়েকদিন পর কাঠুয়া থেকেই মোহাম্মদ দিন ও রহমান আলি নামে আরও দুই কিশোর গুম হয়। এক মাস পার হলেও এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি। 

২০২০ সালে ভারতের এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজৌরি জেলায় গুজ্জার সম্প্রদায়ের তিন তরুণকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে। এতে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজানোর অভিযোগ আনা হয়। কোর্ট মার্শালে ওই কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত হন। তবে পরে তিনি জামিন পেয়ে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রূপগঞ্জে শ্রমিক অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ
  • মব ঠেকাতেই হবে
  • গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ১৭ এপ্রিল সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ
  • রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ : আহত শতাধিক 
  • রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহ
  • ঈদযাত্রায় নিহত ৩৫২, দুর্ঘটনা ও হতাহত গত বছরের তুলনায় কম: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
  • ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুমের ঢেউ, বেড়েছে রহস্যজনক মৃত্যু
  • প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে ভাঙচুর মন্দ বার্তা দেয়
  • প্রশাসনের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই
  • মার্কিন দূতাবাসের সামনে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী