পিটুনিতে নিহতের ঘটনায় আরও তিন হত্যা মামলা, পরিচয় মিলেছে চার লাশের
Published: 7th, March 2025 GMT
কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গণপিটুনির ঘটনায় আরও তিনটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ বাদী হয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি ও মাদারীপুর সদর থানায় দুটি হত্যা মামলা করেছে। এর আগে পালং মডেল থানায় আরও দুটি মামলা করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা করা হলো, যার তিনটি হত্যা, একটি ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় ও একটি অস্ত্র আইনে। ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানারগাঁও এলাকার এবাদুল ব্যাপারী (৪২), মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরচান্দা হাজী ছাবের আলী ব্যাপারীকান্দি এলাকার ছলেমান (৪১), কুতুবপুর হাচেন মাদবরকান্দি এলাকার সালাউদ্দিন মাদবর (৩০) ও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঠেংগামারি এলাকার সেক পান্নু (৪২)। আর দুজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় নদীতে নেমে ধাওয়া, পাল্টা গুলি-ককটেল, গণপিটুনিতে নিহত ২০১ মার্চ ২০২৫গণপিটুনির ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের দুজনের লাশ মাদারীপুর পৌর গণকবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিনজনের লাশ পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন। আর একজনের লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ও মাদারীপুর সদর উপজেলার বিদ্যাবাগিশ এলাকায় ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের লাশ কীর্তিনাশা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনের মৃত্যু হয়েছে তেতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ও একজনের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আরও পড়ুনকীর্তিনাশা নদীতে ডাকাত দলকে পিটুনির ঘটনায় আরও দুটি লাশ উদ্ধার, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০৩ মার্চ ২০২৫শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গণপিটুনির ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানা ও পালং মডেল থানায় তিনটি হত্যা মামলা, একটি অস্ত্র আইনে মামলা ও একটি ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা করা হয়েছে। ওই মামলাগুলো পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর নিহত ব্যক্তি ও আহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের বেশ কিছু মামলা রয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে। কার বিরুদ্ধে কোন থানায় কতটি মামলা আছে, আমরা তা–ও সন্ধান করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণপ ট ন র ঘটন প ট ন র ঘটন য় র উপজ ল র ন য় আরও প র সদর এল ক র র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
হজ ফ্লাইট শুরু, মধ্যরাতে ঢাকা ছাড়লেন ৩৯৮ যাত্রী
চলতি বছরের হজযাত্রা শুরু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে বাংলাদেশি হজযাত্রী বহনকারী প্রথম প্লেনটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সৌদি আরবের জাতীয় ক্যারিয়ার সাউদিয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এ বছরের হজ ফ্লাইট। প্রথম ফ্লাইটে (এসভি ৩৮০৩) পবিত্র হজ পালনের জন্য ঢাকা ত্যাগ করেন ৩৯৮ জন হজযাত্রী।
হজ যাত্রীদের জন্য ফ্লাইট চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। এ বছর ৮৭ হাজার ১০০ হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এবারও ‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন হবে যাত্রীদের।
আজ প্রথম দিনে মোট ১০টি ফ্লাইটে ৪ হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী সৌদি যাবেন। এর মধ্যে আটটি ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দায় কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং দুটি ফ্লাইট মদিনায় প্রিন্স মুহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, রাজধানীর আশকোনার হজ ক্যাম্পেই ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাওয়া যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। সৌদি আরব থেকে আসা ইমিগ্রেশনের ৭৫ সদস্যদের একটি দল শাহজালাল বিমানবন্দরে বসে সে দেশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবে। এতে হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। আর ফেরার সময় হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সৌদি আরবেই করতে হবে। আর সিলেট ও চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট দিয়ে গমনকারী যাত্রীদের সৌদি আরবের আগমনী ইমিগ্রেশন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে হজ ফ্লাইট-২০২৫ উদ্বোধন করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এ সময় তিনি হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। উপদেষ্টা হজযাত্রীদের সৌদি আরবের আইনকানুন মেনে চলা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান। খালিদ হোসেন বলেন, এ দেশের হজযাত্রীরা যাতে যৌক্তিক খরচে হজ পালন করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি।
এ বছর তিনটি এয়ারলাইন্স ২৩২টি প্রাক-হজ ফ্লাইটের মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাংলাদেশ বিমান ১১৮টি প্রাক-হজ ফ্লাইটে ৪৪ হাজার ৩০৭ জন, সাউদিয়া ৮০টি ফ্লাইটে ৩২ হাজার ৭৪০ জন ও ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইটে ১৩ হাজার ৬৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে। ৩১ মে প্রাক-হজ ফ্লাইট শেষ হবে। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি মাধ্যমে এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর হজযাত্রীদের জন্য যোগাযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন দরকারি ফিচার সম্বলিত একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের হজ প্রিপেইড কার্ড ও মোবাইল সিম রোমিং সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।