রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতার ফ্ল্যাটে ঢোকার খবর পেয়ে পুলিশের অভিযান
Published: 7th, March 2025 GMT
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফ্ল্যাটে ঢুকেছেন, এই খবর পেয়ে পুলিশ ভবনটিতে অভিযান চালায়। কিন্তু ওই নেতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাউকে পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মোস্তাক আহমেদ ওরফে ‘ব্যাটারি বাবু’। তিনি নগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। নগরের স্টেডিয়াম মার্কেটে তাঁর ‘সাব্বির আয়রন স্টোর’ নামের একটি ব্যাটারির দোকান আছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ব্যাটারি বাবু নামে পরিচিত। তিনি গত জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। গণ–অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন।
২০০৩ সালে ক্রিকেটার জিকো হত্যা মামলার আসামি ছিলেন মোস্তাক আহমেদ। ওই মামলা হওয়ার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে চলেন যান। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালের দিকে তিনি দেশে ফেরেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক বেচাকেনার অভিযোগও আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে খবর ছড়িতে পড়ে মোস্তাক আহমেদ রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে উঠেছেন। এলাকার লোকজন ভবনটি ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সেখানে যায় থানা-পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সিআরটি। এ ছাড়া ছিলেন সেনা ও র্যাবের সদস্যরা। পুলিশের সদস্যরা ভেতরে গিয়ে তল্লাশি করলেও মোস্তাক আহমেদের খোঁজ পাননি। আজ শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ভবনটি ঘিরে রাখেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, গতকাল রাত তিনটা পর্যন্ত অভিযান চলেছে। কিন্তু আসামিকে পাওয়া যায়নি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ত ক আহম দ র সদস নগর র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত, কেউ শঙ্কামুক্ত নন: চিকিৎসক
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের সবার শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। ১৩ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক।
চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন ইকবাল (৪০); তাঁর মা মমতাজ বেগম (৭৫); স্ত্রী ইসরাত জাহান (৩৬); দুই মেয়ে ইসয়াত (৫) ও ইসতিমাম (১১) এবং ভাগ্নি মুশফিকা (২০)। আরও চিকিৎসা নিচ্ছেন মো. ইউনুস মিয়া (৭৪); তাঁর স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৬০); ছেলে বুলবুল (৩৭) ও মো. আমিন (২৩); মেয়ে মোছা. শিল্পী (৪২); নাতি তালহা (৪) এবং আসবাবপত্রের দোকানের কর্মচারী শাকিব হোসেন (২২)।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রত্যেকেরই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মুশফিকা ও মমতাজকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদের সাধারণ শয্যায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে কারও অবস্থাই শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় প্রচণ্ড ধোঁয়ায় একজন মারা গেছেন। তাঁর নাম আমিন উদ্দিন (৭৫)। তিনি যশোরের দক্ষিণ সুরমার আলী আকবরের ছেলে। আমিন উদ্দিন ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আসবাবপত্রের একটি দোকান দেখাশোনা করতেন। তিনি রাতে সেখানেই ঘুমাতেন।
আসবাবপত্রের দোকানের মালিক আতিকুর রহমান বলেন, ভবনের নিচতলায় থাকা লেপ-তোশকের একটি দোকানে আগুন লাগে। এতে পুরো ভবনে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় তলায় থাকা আমিন উদ্দিন ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, আমিন উদ্দিনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে নাজিমউদ্দিন রোডের পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগার খবর পাওয়া যায় বলে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে আগুন নেভায়।
শাহজাহান তাৎক্ষণিকভাবে প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বাসাগুলো থেকে মোট ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।