রবিবার (৯ মার্চ, ২০২৫) শেষ হতে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসরেরে। ২২ দিনব্যাপী চলা এই আসরের পর্দা নামছে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের মধ্যকার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের মধ্য দিয়ে। আয়োজক পাকিস্তান হলেও রোহিত শর্মারা ফাইনালে উঠায়, দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচে যে ৫টি বিষয় শিরোপা নির্ধারণে প্রভাব রাখতে পারে তা তুলে ধরা হলো।
হেনরির শুরুটা
উইলিয়াম ওরর্ক এবং কাইল জেমিসন থাকার পরও নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ম্যাট হেনরি। আসরে এখন পর্যন্ত ১০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় শীর্ষে আছেন ৩৩ বছর বয়ী পেসার। এই ভারতের বিপক্ষেই গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, সেটাও দুবাইয়ে।
আরো পড়ুন:
বাড়তি ভ্রমণে বিরক্ত মিলার ফাইনালে কিউইদের সমর্থক
ভারতের বিপক্ষেও জিততে চাই: স্যান্টনার
হেনরির বলে কাঁটা পড়েছিলেন শুবমান গিল ও বিরাট কোহলির মত টপ ওর্ডার ব্যাটসম্যানরা। হেনরির বোলিং তোপেই ভারতকে ৩০ রানের মাঝে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ফাইনালে এই গতি তারকা শুরুর দিকের বোলিংয়ের উপর নিউ জিল্যান্ডের সফলতা অনেকখানি নির্ভরশীল।
রহস্যময়ী স্পিনার বরুণ
স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী এবারের আসরের প্রথম দুটি ম্যাচ খেলনি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল তার প্রথম ম্যাচ। সে ম্যাচে ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে কিউইদের বেটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন তিনি। এটি ছিল এই ৩৩ বছর বয়সী স্পিনারের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওডিআই। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ববিপক্ষেও দুই উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
বরুণ অনেক ধরনের ভ্যারিয়েশন নিয়ে বোলিং করেন। স্পেশালি তিনি লেগ স্পিন এবং গুগলি দুটাই সাইড ওয়ান অ্যাকশনে করেন। তাই ব্যাটসম্যান বলের সিম পজিশন না বুঝলে ধরতে পারেন না বল কোন দিকে ঘুরবে। যে ধরনের উইকেটে ফাইনাল হবে, সেখানে বরুণ খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন।
রাচিন ও উইলিয়ামসন সেট হয়ে গেলে
কিউদের উঠতি তারকা রাচিন রাবীন্দ্র ও সবচেয়ে অভিজ্ঞ যোদ্ধা কেইন উইলিয়ামসন লাহোরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। বাঁহাতি রাচিন ও উইলিয়ামসন সেমিফাইনালে ১৬৪ রানের ম্যাচ জেতানো এক পার্টনারশিপ গড়েছিলেন। দুজনই স্পিন ভালো খেলেন, তাই ভারতীয় স্পিনারদের বিপক্ষে লড়াই করতে তারা সক্ষম।
৩৪ বছর বয়সী উইলিয়ামসন অনশ্য গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ৮১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন। কিউই কাপ্তান মিচেল স্যান্টনার বলেছেন, উইলিয়ামসন ও রাচিনের ব্যাটিং এমন একটা পুঁজি এনে দেতে পারে যা বোলারদের কিছুটা সহজ করে।
রোহিতের শুরু
ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা এখনও টুর্নামেন্টে তার সেরাটা দিতে পারেননি, তার সর্বোচ্চ ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে করা ৪১ রান। তবে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান বড় করতে না পারলেও দ্রুতগতির একটা শুরু এনে দেন ভারতকে, যা প্রতিপক্ষে বোলারদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।
রোহিত তার ইনিংস গুলো বড় করতে না পারায় সমালোচকরা রোহিতের সমালোচনা করেছেন। তবে হেড কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছেন, “আপনি রান দিয়ে মূল্যায়ন করেন; আমরা ম্যাচে তার (রোহিতের) প্রভাব দিয়ে মূল্যায়ন করি। এটিই পার্থক্য।”
উইকেট
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে আলোচনা চলছে প্রথম থেকেই। কারণ ভারত তাদের সব ম্যাচ একই ভেন্যুতে খেলেছে। এই পিচ তাদের চাহিদা অনুসারেই তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া এই উইকেটের কথা মাথায় রেখেই ভারত তাদের দলে ৫ জন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়েছে।
দুবাইয়ের পিচ ‘স্লো এবং লো’ যা স্পিনারদের সাহায্য করে। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৬৫ রানের লক্ষ্য ভারত ১১ বল বাকি থাকতে টপকিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের উইকেটে বড় রান হয়েছে। যেখানে নিউ জিল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফির রেকর্ড ৩৬২ রান করে। তাই ব্যাটিং স্বর্গ থেকে ‘স্লো ও লো’ উইকেটে গিয়ে কিউইরা কতটা মানিয়ে নিতে পারে সেটা দেখার বিষয়।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট ন ফ ইন ল উইল য
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানায়।
রবিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান করেছেন। আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে জানান, আজ সকাল থেকেই বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান করেছেন। তবে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তারা কেউই অফিস করছেন না।
বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কর্মবিরতি পালন করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগেরদিন বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। একপর্যায়ে তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন; সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো. আশিকুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন—বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) ও রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), আল ইসলাম (৩৮), শহিদুল ইসলাম (৪২), ও তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), সাজ্জাদ হোসেন (৩০) ও আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯)।
ঢাকা/এনটি/ইভা