হিজরতের বছর ৬২২ সালে শুরু হয় মসজিদে নববির নির্মাণকাজ। ৬২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় সাত মাস সময় লাগে এর কাজ শেষ হতে। মদিনায় প্রবেশের পর রাসুল (সা.)-এর উট কাসওয়া যে জায়গাটিতে বসে পড়েছিল, সেখানেই তৈরি করা হয় ঐতিহাসিক মসজিদে নববি। মদিনার দুই এতিম বালক সাহল ও সোহাইলের কাছ থেকে ১০ দিনারের বিনিময়ে জায়গাটি কিনে নেওয়া হয়। টাকা পরিশোধ করেন হজরত আবু বকর (রা.
হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) হিজরত করে মদিনায় এসে বনি আমর ইবনে আওফ গোত্রের এলাকার উঁচুভূমিতে পৌঁছে চৌদ্দ রাত অবস্থান করলেন। বনি নাজ্জারের লোকজন তাঁকে ঘিরে ছিল। সবার মনে একটাই আকুতি, নবীজি (সা.) যেন তাদের মেহমান হন। আল্লাহর কুদরতি ফায়সালাকারী উট আবু আইয়ুব আনসারি (রা.)–র বাড়িতে এল। সেখানেই নবীজি (সা.) অবস্থান করলেন।
সাহাবি আনাস (রা.) বলেছেন, যেখানে নবীজির (সা.) উট থেমেছিল, তার চৌহদ্দি বা সীমানায় ছিল একটি বাগান। বাগানটিতে ছিল খেজুরগাছ, কিছু কবর আর কিছু ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ।
আরও পড়ুনউয়ায়েস করনির কাহিনি৩১ মার্চ ২০২৪নামাজের সময় হলেই নবীজি (সা.) নামাজ আদায় করতেন। নবীজি (সা.) মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে নির্দেশ পেলে বনি নাজ্জার গোত্রের নেতাদের ডেকে পাঠালেন। তারা এলে তিনি তাদের বললেন, বনি নাজ্জার, তোমাদের এই বাগানটি অর্থের বিনিময়ে আমার কাছে বিক্রি করবে?
তারা বলল, না, আল্লাহর শপথ, আমরা অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করব না। তবে আমরা আল্লাহর কাছেই এর প্রতিদানের প্রত্যাশা রাখব।
বাগান মালিকদের অনুমতি পেয়ে নবীজি (সা.) নির্দেশ দিলেন, খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলো, কবরগুলো খুঁড়ে ফেলো এবং ধ্বংসাবশেষগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দাও। নামাজের স্থানটুকু পবিত্র হলে ভূপৃষ্ঠের যেকোনো জায়গায় নামাজ পড়তে কোনো বাধা নেই।
তারা খেজুরগাছের গুঁড়িগুলো কিবলার দিকে সারি করে রেখে দরজার দু পাশে পাথর স্থাপন করল।
আনাস (রা.) বলেন, এসব কাজ করার সময় তারা এক সুরে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন।
তাদের সঙ্গে নবীজিও এক স্থানে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণই প্রকৃত কল্যাণ। তুমি আনসার ও মুহাজিরদের সাহায্য করো।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫২৪)
আরও পড়ুনমুঠোফোনে দেখা যাবে মদিনার মসজিদে নববির ভেতরে-বাইরে৩০ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সেহরিতে রান্নার চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, স্বামী-স্ত্রীসহ দগ্ধ ৬
চাঁদপুরে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ হয়েছে। রোববার ভোরে শহরের কোড়ালিয়া এলাকায় একটি বাসায় সেহরির খাবার রান্নার সময় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের মধ্যে চারজনকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজন চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
দগ্ধ ছয়জনের মধ্যে আব্দুর রহমান সরদার (৬৫), তাঁর স্ত্রী শাহানুর বেগম (৫৫), পুত্রবধূ খাদিজা আক্তার (৩২) ও ছোট ছেলে মঈন (১৮) নামে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠান চিকিৎসক। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আব্দুর রহমানের বড় ছেলে ইমাম হোসেন সরদার (৩২) ও মেজ ছেলে মিরাজের স্ত্রী দিবা আক্তার (২১)।
গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারো করছেন পরিবারের স্বজনরা। আব্দুর রহমান সরদারের ভাগিনা শাহ আলম জানান, পরিবারের লোকজন ভোর রাতে সেহরি খাওয়ার জন্য উঠে। এ সময় রান্নাঘরে চুলা জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে রান্না ঘরসহ কয়েকটি কক্ষের আসবাবপত্র ও লেপ-তোষক পুড়ে যায়। প্রতিবেশীদের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, ঢাকায় যাদের পাঠানো হয়েছে, তাদের শরীরে কারও ৫০ ভাগ ও কারও ৬০ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জনের শরীরের ২০ ভাগ পুড়ে গেছে।