অতীত বলব? খারাপ লাগে, মনে হয় এই তো সেদিনের কথা। পল্টনের এনএসসি ভবনের সংবাদ সম্মেলনের কক্ষ তখন হইচইয়ে তুঙ্গে। কাঠগড়ায় প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। খালেদ মাসুদ পাইলট তখন প্রতিষ্ঠিত তারকা। কেন পাইলটকে বাদ দিয়ে ২০০৭ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে মুশফিকুর রহিম নামে সদ্য গোফ ওঠা কিশোরকে দলে নেওয়া হয়েছে? ব্যাখ্যা দিতে দিতে এসি রুমের মধ্যেও ঘামছিলেন ফারুক আহমেদ। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে পরিচিত সাংবাদিকদের কাঁধে হাত রেখে বলেছিলেন, ‘ভরসা রাখুন, এই ছেলেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের লিটল মাস্টার হবে।’ তার পর তো এত বছর। ওয়ানডে থেকে তাঁরও যাত্রা ফুরাল। মুশফিকুর রহিম; নামটির সঙ্গে মিশে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি প্রজন্মের ইতিহাস। যেখানে সাক্ষী হয়ে আছে সাফল্য, দ্বন্দ্ব, চিড় খেয়ে যাওয়া সম্পর্ক; আরও কত না বলা কথা। মুশি জানেন যে তাঁর বিষয়ে দু-একটি নয়, আমরা সকলেই বেশ কিছু কথা জানি। এই যেমন তিনি ভালো ক্রিকেটার, প্রচণ্ড পরিশ্রমী, প্রবল শৃঙ্খলাপরায়ন, নিষ্ঠা ও একাগ্রতায় দ্বীপের মতো এক ফালি রোদ্দুর। এর বাইরে একজন মুশফিক আছেন, যাকে আবিষ্কার করেছেন তিনি নিজেই। মানব মনের দ্বান্দ্বিক টানাপোড়েনে হিংসা, লালসা, চিন্তাকে কখনোই প্রশ্রয় দেননি। ‘সারাজীবন তো আর ক্রিকেটার থাকব না, তখন আমাকে আমার রেকর্ড নয়, ভালো ব্যবহার, ভালো আচরণের জন্যই হয়তো মনে রাখবেন।’ মিরপুরে কোনো এক ঘটনার পর বছর পাঁচেক আগে বলা মুশফিকের সেই কথাটি এখন ভীষণভাবে কানে বাজছে। আসলে মায়া আর দায়িত্ববোধ থেকে মুশফিক তাঁর ভালোবাসার ক্রিকেট জগৎকে একটা পবিত্র জায়গা হিসেবে গড়ে নিয়েছেন। যিনি কিনা ব্যবসা বোঝেন না, রাজনীতি বোঝেন না, কানকথায় সুর তুলতে জানেন না, ছলাকলার মন্ত্র জানেন না; তিনি জানেন শুধু ক্রিকেট খেলতে। এ কারণেই হয়তো পঞ্চপাণ্ডবের একজন হয়েও কোথায় গিয়ে যেন গ্ল্যামারাস ব্যাপারটি সেভাবে তাঁকে স্পর্শ করেনি। কিন্তু মায়া যে বড় প্রপঞ্চময়, সে বাঁধন যে ছিড়তেই হয়। প্রত্যেকেরই বিকল্প আছে, দ্বিতীয়টি প্রথমটিকে সরিয়ে দেয় শুধু।
যেদিন থেকে তাঁকে চিনি বলে নিজে বিশ্বাস করেছি, সেদিন থেকেই বুঝেছি ক্রিকেট তাঁর কাছে প্রার্থনার মতো। তাঁর সতীর্থদের একজনের কাছে শুনেছি, হয়তো কোনো ম্যাচে ভালো রান করতে পারেননি, কেন পারেননি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নির্ঘুম কাটিয়েছেন। পরের দিন সবার আগে মাঠে গিয়ে একা একা অনুশীলন করেছেন। অন্য কাউকে নয়, নিজেকে নিজের কাছে কখনোই ফাঁকি দেননি। পরিশ্রম দিয়ে সৃষ্টি করা যায়– এই বিশ্বাসে নিজেকে বারবার ভেঙে গড়ার চেষ্টা করেছেন। আর সে কারণেই দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে তাঁর নাম জাতীয় দলে। নির্বাচকদের প্রভাবিত করে, বিসিবি সভাপতিকে চাপ দিয়ে জাতীয় দলে কখনও জায়গা চেয়েছেন– এমন অভিযোগ কোনো দৈনিকের সাংবাদিক কিংবা ইউটিউবারও বের করতে পারেননি। বরং পরিবারের চেয়ে এই ক্রিকেটকেই বেশি সময় দিয়েছেন। অবশ্য একটা দুর্বলতা তাঁর ছিল, এখন আছে কিনা জানি না। তিনি প্রচণ্ড অভিমানী। যাকে ভালোবাসেন, ভালো ভাবেন সে যদি কানকথা বলে, তাহলে আহত হন। ২০১৩ সালে যেমন জিম্বাবুয়ে সফরে সিরিজ হারার পর হঠাৎই অধিনায়ত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। এর পর ২০১৭ সালে এসে টেস্ট অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিয়েছিলেন। তখনও অভিমান পেয়ে বসেছিল তাঁকে। তাঁর মনে হয়েছিল প্রাপ্য সম্মান তিনি পাচ্ছেন না। ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারানোর পরও সংবাদ মাধ্যমে অধিনায়কত্বের প্রশংসা করা হয়নি। বরং সাবেক এক অধিনায়কের পরামর্শে টেস্ট জিতেছে এমন একটা ন্যারেটিভ প্রচারিত হয়। বিসিবির অন্দরমহল থেকেও তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে কানকথা শুরু হয়। অথচ অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়ে ড্রেসিংরুমে সবার সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য নিজের অভ্যাসের বাইরেও অনেক কিছু করেছেন! এমনকি ড্রেসিংরুমের যে গ্রুপিংয়ের কথা এতদিনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানেও মুশফিক গা বাঁচাতে পেরেছিলেন। শুধু কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রথম দফায় প্রতিবাদী মুখ ছিলেন। ক্রিকেটের বাইরে অনেকেই যেখানে বিজ্ঞাপনের বাজারের জন্য নিজেদের তৈরি করেছিলেন, সেখানেও বেশি সময় দিতে দেখা যায়নি তাঁকে। আত্মাভিমান তাঁর এতটাই প্রবল যে, একসময় সিদ্ধান্ত নেন আর কখনোই আইপিএলে নাম পাঠাবেন না। আর কখনোই জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করবেন না। জানি না, কী কারণে বুধবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি অবসরের ঘোষণা দিলেন। তবে আন্দাজ করতে পারি, হয়তো কারও কথা বা ফোনে তাঁর সেই আত্মাভিমানে আঘাত লেগেছিল। তবে বিশ্বাস করতে চাই, আবেগ নয়, বাস্তবতা স্বীকার করেই তিনি সরে গিয়েছেন। কারণ তিনি কখনোই নিজেকে ফাঁকি দিতে পারবেন না। তাই হয়তো ওয়ানডেতে আর তাঁকে দেখা যাবে না জাতীয় দলের জার্সিতে। অপেক্ষায় থাকব, আরও কয়েকটি বছর তাঁর সেই রংচটা টেস্ট ক্যাপ পরে মাঠে নামবেন। তিনি যেমন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পথিকৃত, তেমনি পথিকও তো বটে। ধন্যবাদ মুশি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল কর ছ ন কখন ই
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েল হত্যা করে, মিথ্যা বলে, আর পশ্চিমা মিডিয়া তা বিশ্বাস করে
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও সিভিল ডিফেন্সের ১৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা যোদ্ধা ছিলেন না। সন্ত্রাসীও ছিলেন না। তাঁদের কাছে কোনো রকেট বা অস্ত্র ছিল না। তাঁরা ছিলেন ত্রাণকর্মী, মানবতার সেবক। যখন যেখানে বোমা ফেলা হচ্ছিল, সেখানেই তাঁরা আহতদের সাহায্য করতে ছুটে গিয়েছিলেন। তাঁরা নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।
এর আগে গত ২৩ মার্চ গাজার দক্ষিণে রাফা এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী একটি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার গাড়ির বহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আটজন রেড ক্রিসেন্টের কর্মী, ছয়জন ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের কর্মী এবং একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছিল, এই গাড়িগুলো ছিল অপরিচিত। সন্দেহ করা হয়েছিল, গাড়ির মধ্যে যোদ্ধারা ছিলেন, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল।
রিফাত রাদওয়ান নামে নিহত চিকিৎসাকর্মীদের একজনের মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া ফুটেজে দেখা যায়, গাড়িগুলোতে স্পষ্টভাবে লালবাতি জ্বলছিল; সেগুলো চিহ্নিত অ্যাম্বুলেন্স ছিল এবং কোথাও কোনো অস্ত্র দেখা যায়নি। তারপর শুরু হয় ইসরায়েলি বাহিনীর প্রচণ্ড গুলি।
পরে রিফাতের মরদেহ আরও ১৩ জনের সঙ্গে একটি গণকবরে পাওয়া যায়। তাঁদের কয়েকজনের দেহে সরাসরি হত্যার চিহ্ন ছিল—মাথা বা বুকে গুলি লেগেছিল। কারও কারও হাত বাঁধা অবস্থায় ছিলেন।
মৃত্যুর পরও তাঁদের প্রমাণ দিতে হলো যে তাঁরা ত্রাণকর্মী ছিলেন।
তারপরও পশ্চিমা গণমাধ্যমের বড় অংশ প্রথমেই ইসরায়েলের কথাই প্রচার করল, ‘ইসরায়েল বলছে…’, ‘আইডিএফ দাবি করছে…’, ‘একজন সামরিক সূত্র জানিয়েছে…।’ এসব কৌশলে সাজানো বাক্য যেন রেড ক্রিসেন্টের রক্তমাখা ইউনিফর্মের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। যেন তারা সত্যের চেয়ে বেশি ‘সত্য’।
এটা নতুন কিছু নয়। এটা একবারের ভুলও নয়।
এটাই একটা সিস্টেম।
এখানে ফিলিস্তিনিদের শুধু বেঁচে থাকাই অপরাধের মতো মনে করা হয়। আমাদের অস্তিত্বকেও সন্দেহের চোখে দেখা হয়—প্রথমে সবাইকে বোঝাতে হয় যে আমরা কোনো হুমকি নই, আমাদের জীবনও মূল্যবান, তারপর হয়তো কেউ আমাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবে। এটাই হচ্ছে মানবতা হারানোর আসল রূপ।
আমি গাজায় জন্মেছি, সেখানেই বড় হয়েছি। আমি জানি, রেড ক্রিসেন্টের ইউনিফর্মের অর্থ কী। এর মানে হলো, সব শেষ হয়ে গেলেও আশার একটা আলো আছে। এর মানে হলো, কেউ আসছে সাহায্য করতে—লড়াই করতে বা হত্যা করতে নয়, জীবন বাঁচাতে। এর মানে হলো, ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও কারও কাছে জীবন এখনো মূল্যবান।
বিশ্বকে এখনই ফিলিস্তিনিদের প্রমাণ করতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে যে তাঁরা মানুষ। আমরা মিথ্যা বলি আর আমাদের হত্যাকারীরা সত্য বলে—এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যাঁরা শুধু ফেরেশতা, শুধু তাঁদের জন্য শোক প্রকাশ করা যাবে, এই ভাষ্যকে আর প্রচার করতে দেওয়া যাবে না।আমি এটাও জানি, সেই আশাকে হারালে কেমন লাগে। সেখানে চিকিৎসাকর্মীদের প্রথমে হত্যা করা হয়, তারপর তাঁদের সম্মান নষ্ট করা হয়। তাঁদের সততা নিয়ে বিতর্ক তোলা হয় আর তাঁদের সহকর্মীরা গণকবর খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। তাঁদের সন্দেহের চোখে দেখা হয়, তারপর ভুলে যাওয়া হয়।
মানবতা হারানো শুধু কথার কথা নয়, এটা শুধু গণমাধ্যমের কাঠামো বা রাজনৈতিক ভাষার সমস্যা নয়। এটা হত্যা করে। মুছে ফেলে। এটা পুরো জাতিগোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পরও বিশ্বকে চোখ ফিরিয়ে নিতে বলে। এটা আমাদের বলে দেয়: তোমার জীবন ততটা মূল্যবান নয়; তোমার শোক সত্যি কি না, তা আমরা যাচাই না করা পর্যন্ত শোক বলে বিবেচিত হতে পারে না; তোমার মৃত্যু দুঃখজনক কি না, তা আমাদের ছাড়পত্রের ওপর নির্ভরশীল।
এ কারণেই এই ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও উদ্ধারকর্মীর মৃত্যু এত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের গল্প নয়। এটি সেই অবিশ্বাসের প্রক্রিয়ার গল্প, যা প্রতিবার ফিলিস্তিনিরা নিহত হলে উঠে আসে। এটি সেই বাস্তবতা, যেখানে আমাদের নিজেদেরই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হতে হয়, নিজেদের আইনি লড়াই চালাতে হয়, নিজেদের প্রচারের কাজ করতে হয় এবং সবকিছুর সঙ্গে মরদেহের জন্য শোকও করতে হয়।
এই বোঝা আর কাউকে বইতে হয় না। যখন কোনো পশ্চিমা সাংবাদিক নিহত হন, তাঁদের সম্মান জানানো হয়। যখন কোনো ইসরায়েলি নাগরিক মারা যান, তখন তাঁদের নাম আর ছবি বিশ্বজুড়ে স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। কিন্তু যখন কোনো ফিলিস্তিনি মারা যান, তখন তাঁর পরিবারের প্রথম কাজ হয় প্রমাণ করা, যে তিনি সন্ত্রাসী ছিলেন না।
আমাদের সব সময় দোষী ধরে নেওয়া হয়, যতক্ষণ না নির্দোষ প্রমাণিত হই। অনেক সময় সেটা প্রমাণ করাও সম্ভব হয় না।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইসরায়েলের কথা বেশি গুরুত্ব পায়, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কথা গুরুত্ব দেওয়া হয় কম। ইসরায়েল যদি কোনো দাবি করে, তা যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিশ্বাস করা হয়; কিন্তু ফিলিস্তিনিরা কিছু বললে তা সন্দেহের চোখে দেখা হয়। এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন তাঁদের দুঃখ-কষ্ট, কান্না বা শোক তাঁদের কথাকে অবিশ্বাস্য বা অতিরঞ্জিত করে তোলে; অর্থাৎ ফিলিস্তিনিরা যা বলছেন, তা সত্য হলেও তাঁদের যন্ত্রণা দেখিয়ে তাঁরা বেশি বলছেন বা বাড়িয়ে বলছেন—এমন ধারণা তৈরি করা হয়।
এই গণমাধ্যমের ধারা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোকেও প্রভাবিত করে—অস্ত্র বিক্রি থেকে শুরু করে কূটনৈতিক দায়মুক্তি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে নীরবতা থেকে জাতিসংঘে ভেটো দেওয়া পর্যন্ত। সবকিছু একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। ফিলিস্তিনিদের পুরোপুরি মানুষ বলে যেহেতু গণ্য করা হয় না, সেহেতু তাদের হত্যাকারীদেরও পুরোপুরি দায়ী করা হয় না।
এর মানসিক চাপও ভয়াবহ। আমরা শুধু শোক করি না; আমাদের শোকের স্বীকৃতির জন্যও লড়তে হয়। আমরা শুধু আমাদের মৃত ব্যক্তিদের দাফন করি না; তাঁদের মৃত্যু স্বীকার করানোর জন্যও সংগ্রাম করি। আমরা এমন এক মানসিক চাপে বাস করি, যা কোনো সম্প্রদায়ের সহ্য করা উচিত নয়। আমাদের প্রতিনিয়ত প্রমাণ করতে হয় যে আমরা তা নই, যা বিশ্ব আমাদের ভেবে নিয়েছে।
এই ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও উদ্ধারকর্মী ছিলেন সত্যিকারের নায়ক। তাঁরা বিপদের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের জনগণের সেবা করেছিলেন। তাঁরা জীবনের পবিত্রতায় বিশ্বাস করতেন। তাঁদের স্মৃতি সম্মানের যোগ্য। অথচ তাঁদের গল্পও একটি বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বকে এখনই ফিলিস্তিনিদের প্রমাণ করতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে যে তাঁরা মানুষ। আমরা মিথ্যা বলি আর আমাদের হত্যাকারীরা সত্য বলে—এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যাঁরা শুধু ফেরেশতা, শুধু তাঁদের জন্য শোক প্রকাশ করা যাবে, এই ভাষ্যকে আর প্রচার করতে দেওয়া যাবে না।
আল–জাজিরা থেকে নেওয়া
ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ
আহমেদ নাজার একজন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নাট্যকার।