সাহরিতে কোন ধরনের খাবার খাওয়া বেশি উপকারী সে সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখেন না। সঠিক খাবার নির্বাচন করতে না পারায় সাহরিতে পেট ভরে খেয়েও সারাদিন নানা অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকে। তাই আপনাকে জানতে হবে এসময় কোন ধরনের খাবার কতটুকু খেতে হবে। জেনে নেওয়া যাক সাহরিতে কী খেলে সুস্থ থাকা সহজ হতে পারে-

১. উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার
রুটি, ভাত এবং আলুর মতো খাবারে জটিল কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে এবং হজম হতে বেশি সময় লাগে। এগুলো শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন কারণ এটি গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমের কারণ হতে পারে।
 

২.

ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং হোল গ্রেইন
এ ধরনের খাবার আপনার সাহরিতে থাকা উচিত। আপেল, কলা ও এপ্রিকটের মতো ফলে প্রচুর আঁশ থাকে এবং বার্লি, ছোলা এবং ওটসের মতো শস্যও থাকে। আঁশ পেট ভরিয়ে রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সাহরির সময় খাবারের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ প্রোটিন দিয়ে তৈরি করা উচিত এবং বাকিটা কার্বোহাইড্রেট হতে পারে। তবে খুব বেশি প্রোটিন বা ফাইবার খেলে তা দিনের বেলায় তৃষ্ণার্ত করে তোলে। এটি ঘটে কারণ প্রোটিন এবং ফাইবার উভয়ই হজম হওয়ার জন্য পানির প্রয়োজন হয়। তাই সাহরিতে আপনার খাবারের প্রায় ১০% ফাইবার থাকা উচিত।

৩. প্রোটিনের জন্য দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং চর্বিহীন মাংস
সাহরিতে দুধ, ডিম, মুরগির মাংস, দই এবং মসুর ডালের মতো প্রোটিন রাখুন। এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। সাধারণভাবে খাবারে ৬০-৮০ গ্রাম প্রোটিন যোগ করা উচিত।

৪. কম গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার
এই জাতীয় খাবার আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখে এবং ক্ষুধা নিবারক হিসেবে কাজ করে। এগুলো কিছু সময়ের জন্য শক্তি নির্গত করে এবং ক্লান্তি ও অলসতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। বাদাম ও বীজ খান, ফাইবারযুক্ত খাবার খান বা ঝোল-স্যুপ ইত্যাদি খান।

৫. হাইড্রেট করা খাবার এবং পানীয়
খুব বেশি কাপ চা বা কফি খাওয়া এড়িয়ে চলুন কারণ ক্যাফেইন পানির ঘাটতি সৃষ্টি করে যা তৃষ্ণা বাড়ায়। চিনিযুক্ত খাবার বা পানীয় খুব দ্রুত হজম হয় এবং তাড়াতাড়ি ক্ষুধার্ত করতে পারে। তবে অতিরিক্ত পানি পান করাও ঠিক নয়। এটি পেটের অ্যাসিডকে পাতলা করবে এবং পেট ফাঁপা ও বদহজমের কারণ হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বদহজমের সমস্যা দূর করতে যা করণীয়

অনেকেরই বদহজমের সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা এড়াতে কেউ কেউ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খান। যা ঠিক নয়। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলেই বদহজমের সমস্যা দূর করা সম্ভব। 

বদহজম এবং অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা কমাতে যা করতে পারেন-

১. সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকা যাবে না। তেলমসলা, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। 
২. খাবার খাওয়ার পর পরই পানি খাওয়া ঠিক নয়।  এর ফলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
৩. খুব পেট ভরে খাবার কখনই খাবেন না। একসঙ্গে অনেকটা খাবার না খেয়ে বার বার অল্প করে খেতে হবে। 
৪. বেশি রাত করে রাতের খাবার না খাওয়াই ভালো।

বদহজমের সমস্যা দূর করতে যা খাবেন-

১.নিয়মিত অল্প পরিমাণে টক দই খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিকস থাকে। যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে গ্যাস, অম্বল, বদহজমের সমস্যা দূর হবে। 

২. প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আদা চিবিয়ে খান। চাইলে আদার রস দিয়ে চা খেতে বা গরম পানিতে আদার রস মিশিয়ে খেতে পারেন। আদা বদহজম এবং পেট ফেঁপে থাকার সমস্যা দারুণ ভাবে দূর করে। 

৩. রোজ অল্প পরিমাণে পাকা পেঁপে খেলে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর হবে ভালভাবে। আর পাকা পেঁপে খেলে বদহজমের সমস্যা দূরে থাকবে। 

৪. সবুজ রঙের শাকপাতা জাতীয় খাবার খান। এইসব শাকপাতায় প্রচুর ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকায় অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সেই সঙ্গে বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটি, পেট ফেঁপে থাকার সমস্যা কমে। 
৫. নিয়মিত ওটস খেতে পারেন। ডায়েটারি ফাইবার যুক্ত ওটস খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়। পেটের নির্দিষ্ট এই সমস্যা দূর হলে, বদহজম হবে না। এর ফলে গ্যাস, অম্বল, পেট ফেঁপে থাকার সমস্যাও দেখা দেবে না। 
৬. নিয়মিত অল্প পরিমাণে চিয়া সিড এবং কলা খেলে পারেন। এই দুই উপকরণই অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আর অন্ত্র ভাল থাকলে বদহজমের সমস্যা, পেটের সমস্যা দূর হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বদহজমের সমস্যা দূর করতে যা করণীয়