সিরিয়ায় আসাদের অনুসারীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ, ৭০ জনের বেশি নিহত
Published: 7th, March 2025 GMT
সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের অনুসারীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘সিরীয় উপকূলে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্য এবং ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন কয়েকজন আহত ও বন্দী হয়েছেন।’
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া–নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটির কাছে এলাকাটির অবস্থান। গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার ইসলামপন্থী সরকারের সঙ্গে যুক্ত বাহিনীর ওপর এটি সবচেয়ে সহিংস হামলা। এ ঘটনার পর আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেখানে কারফিউ ঘোষণা করা হয়।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বিপুলসংখ্যক সেনা জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে।
হোমস ও আলোপ্পো শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, হোমসের আবাসিক এলাকার রাস্তায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। যদিও বিবিসি ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আবদুল গনি লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
হাসান আবদুল গনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে খুনি ও অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে। স্পষ্ট করে বলছি, অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।’
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য এ অঞ্চল একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন। সেখানে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দ্রুজ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।
আলাউইত সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকা কর্মীরা বলেছেন, আসাদের পতনের পর থেকে সম্প্রদায়টির মানুষেরা বিশেষ করে গ্রামীণ হোমস ও লাতাকিয়া এলাকায় সহিংসতা ও হামলার শিকার হয়েছেন।
সিরিয়াভিত্তিক বার্তা সংস্থা স্টেপ জানিয়েছে, ‘নিহত প্রায় ৭০ জনের সবাই’ সাবেক সরকারপন্থী যোদ্ধা। তবে এর আগে এএফপির প্রতিবেদনে ৪৮ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়ে বলা হয়, এর মধ্যে সরকারি বাহিনীর ১৬ জন, আসাদপন্থী ২৮ জন আর ৪ জন বেসামরিক নাগরিক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধ স্থাপনার চাপে ধসে পড়েছে ডাকঘরের প্রাচীর
সিলেটের ওসমানীনগরে অবৈধ স্থাপনার চাপে গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়ার ঘটনা ঘটলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা যায়, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে রয়েছে গোয়ালাবাজার ডাকঘর (সাব-পোস্ট অফিস)। ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে মহাসড়কের জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে দোকানপাট তৈরি করে ভোগদখল করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে উঁচু করে মাটি ভরাটের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর হেলে পড়তে শুরু করে। সম্প্রতি ডাকঘরের ২৫ থেকে ৩০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ধসে মাটিতে পড়ে গেছে। এ ছাড়া ৭০ থেকে ৮০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়লেও কয়েকটি গাছের সঙ্গে আটকে আছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের সামনের ফটকের সীমানা ছাড়া বাকি অংশজুড়ে রয়েছে অনেক দোকানপাট। সেসব দোকানে বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করছেন অনেকে। এ ছাড়া রয়েছে একটি শ্রমিক সংগঠনের অফিস। এসব স্থাপনার চাপে পোস্ট অফিসের সামনের সীমানা প্রাচীরের একাংশ ধসে পড়েছে। সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে এক কোণে ভাগাড় তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া পোস্ট অফিসের সামনে মহাসড়ক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ট্রাক ও পিকআপ রাখার স্ট্যান্ড।
গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার জ্যোতিষ চন্দ্র সরকার বলেন, এক ঝড়বৃষ্টির
রাতে ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীরের একাংশ ধসে পড়ে যায়। প্রাচীরের অপর অংশ ধসে পড়ে গাছের সঙ্গে আটকে আছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
সিলেটের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীরসংলগ্ন সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে তারা বিষয়টি
সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানিয়েছেন। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন,
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এ মহাসড়ক নির্মাণ কাজের সময় অবৈধ স্থাপনাগুলো এমনিতেই উচ্ছেদের আওতায় আসবে। দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।