ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্য রোজার উপকারিতা
Published: 7th, March 2025 GMT
ফ্যাটি লিভারের রোগীদের লিভাবে অতিরিক্ত চর্বি জমে যায়। অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ার কারণে লিভাবে প্রদাহজনিত সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীতে ক্রনিক হেপাটাইটিস এমনকি ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ফ্যাটি লিভারের রোগীদের জন্য রোজা রাখার বহুমাত্রিক উপকারিতা রয়েছে।
ডা. এম. সাঈদুল হক, লিভার, গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বলেন ,‘‘ অধিক আহার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য ত্রিশটি রোজা রাখা শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। রোজায় আমরা সুবহে সাদিক থেকে মাগরিব পর্যন্ত পানাহার থেকে যে বিরত থাকি এরপরে ইফতার এবং রাতের খাবার গ্রহণ করি এবং সেক্ষেত্রে যদি আমাদের মধ্যে পরিমিতি বোধ আসে তাহলে দেখা যায় ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্ত থাকতে পারি। আর সপ্তাহে দুই দিন আমরা অনেকেই রোজা রাখি নফল ইবাদত হিসেবে কিংবা বিভিন্ন উপলক্ষে আমরা রোজাগুলো রাখি সে রোজাতেও কিন্তু ব্যাপক উন্নতি লাভ করে। এখানে যেটি হয় যে ফ্যাটি লিভারে যে অতিরিক্ত চর্বি জমে, সেই চর্বি গলে যায়। রোজায়া আমাদের কোষগুলো রি-জেনারেশন করতে পারে অর্থাৎ কোষের ভেতরে যে ময়লা আবর্জনাগুলো জমে যায় এবং অতিরিক্ত খাদ্যকণা বা চর্বি জমে যায় সেগুলো ঝেড়ে ফেলার সুযোগ পায়।’’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘লিভারের চর্বি ঝরে গেলে লিভার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায় এবং নতুন করে কর্মউদ্দীপনা তৈরি করে। আমরা যারা ফ্যাটি লিভার চিকিৎসা করি তারা রোগীদের পরামর্শ দেই, প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে, সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখতে হবে এবং নিয়ম করে ওষুধ খেতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
হার্টের রোগী রোজা রাখতে চাইলে করণীয়
দেশে জিকা ভাইরাসের প্রথম ‘ক্লাস্টার’ শনাক্ত, আক্রান্ত ৫
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন এটি পৃথিবীব্যাপী একটি মেডিকেল সাইন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময় পানাহার থেকে বিরত থাকলে শারীরিক সুস্থতা লাভ হয় এবং আমারা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারি।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত, এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পাকিস্তানের হাতে আছে। খবর আল জাজিরার।
আজ বুধবার ভোরে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আতাউল্লাহ তারার অভিযোগ করে বলেছেন, “ভারত গত সপ্তাহের পহেলগামে হামলাকে ‘মিথ্যা অজুহাত হিসেবে’ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সম্ভাব্য আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে।”
মন্ত্রী তার দাবির সমর্থনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করেননি এবং ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরো পড়ুন:
‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
পহেলগাম হামলা: প্রতিশোধ নিতে সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদি
তারার ‘এক্স’ পোস্টে বলেছেন, “যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। এই অঞ্চলে যেকোনো গুরুতর পরিণতির জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।”
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আসিফও রয়টার্সকে বলেছিলেন, পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘আসন্ন’ ইসলামাবাদ অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
আসিফ বলেন, “ইসলামাবাদ উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে, আমাদের অস্তিত্বের প্রতি সরাাসরি হুমকি সৃষ্টি হলে আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগ্রামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে পাকিস্তান পরোক্ষাভাবে জড়িত থাকার কথা ভারত বলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে ধারণা করা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কিন্তু ইসলামাবাদ ঘটনার সঙ্গে কোনো ভূমিকা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
পহেলগ্রামে হামলার ঘটনার পর, প্রতিবেশী দেশ দুটি একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ভিসা বাতিল এবং ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ৭৪০ কিলোমিটার (৪৬০ মাইল) বাস্তব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর গত কয়েকদিন ধরে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটছে। উত্তেজনা কমানোর জন্য দুই পক্ষকে আন্তর্জাতিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশকে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ এর দিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং ... তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ না করার জন্য বলছি।”
মুখপাত্র আরো বলেন, “রুবিও মঙ্গলবার বা বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে কথা বলবেন এবং অন্যান্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও একই কথা বলতে উৎসাহিত করবেন।”
জাতিসংঘ বলেছে, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন এবং ‘এমন সংঘর্ষ এড়াতে প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন যার পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে’।
ঢাকা/ফিরোজ