নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মুখপাত্র উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। 

গ্রেপ্তাররা হলেন- মনিরুল ইসলাম (৪০), মোহতাসিন বিল্লাহ (৪০), মাহমুদুল হাসান (২১)।

সিটিটিসি সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে সিটিটিসির একটি দল উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সেক্টর-১১ ও সেক্টর-১২ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা বাইতুল মোকাররাম মসজিদ এলাকায় ‘মার্চ ফর খিলাফত’ নামক একটি সমাবেশ পালন সংক্রান্ত গোপন পরিকল্পনা করছিল।

জানা গেছে, আজ শুক্রবার হিযবুত তাহরীর রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘মার্চ ফর খিলাফত’–এর ডাক দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপি গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, হিযবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধঘোষিত কোনো সংগঠন সভা, সমাবেশ ও যেকোনো উপায়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন। জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেলেন কিহাক সাং

বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক আয়ে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেডে) পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার হাতে এ স্বীকৃতি তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) ও বস্ত্র খাতে অসামান্য অবদান রাখছেন কিহাক সাং। তিনি ১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশে আসার পর থেকে এ শিল্প খাতে সহায়তা করে আসছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি পেলেন ‘সম্মানিত নাগরিক’ মর্যাদা।

কিহাক সাংয়ের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকত্বের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তুলে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে কিহাক সাং তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।’

কিহাক সাং বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কিহাক সাং বাংলাদেশের শিল্পের সঙ্গে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন, এখন তা এক শিল্পসামাজ্যে রূপ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রধম বিদেশি বিনিয়োগকারী।

ইয়াংওয়ান ১৯৮০ সালের মে মাসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল রপ্তানি খাতে প্রথম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এই শিল্পে নারীদের কর্মসংস্থানের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত।  

অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
কেন এবং কীভাবে কিহাক সাংকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার ধারণাটা এলো, তা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়ার ধারণাটি প্রথম আলোচনা হয়েছিল চীনের হাইনানে, মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে। তখন বিওএও ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস। সেখানে এক বৈঠকে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন প্রধান উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসা করেন, কিহাক সাং, যার হৃদয়ে বাংলাদেশ এবং যিনি কোরিয়ান ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত করেছিলেন, তাকে সম্মানিত করার কোনো পরিকল্পনা বাংলাদেশের আছে কি না?

এরপরই ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে উপস্থিত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন ড. ইউনূস। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে আজ বিনিয়োগ সম্মেলনে কিহাক সাং বলেন, “আমি সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়ে সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি।”

তিনি লিখেছেন, “আজ আমরা একজন আবেগাপ্লুত সাংকে দেখেছি, যিনি তার হৃদয়ের কথা বলছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব একদিন না একদিন পাবেনই। তিনি পেয়েছেন এবং সেটি এসেছে তার প্রত্যাশার পাঁচ বছর আগেই।”

“সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পাওয়ার মাধ্যমে কিহাক সাং মর্যাদাপূর্ণ এক গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেন। তিনি যাদের সঙ্গে আছেন, তারা হলেন—কাজী নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, ফাদার মারিনো রিগন ও গর্ডন গ্রিনিজ। এদের প্রত্যেককেই বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের একজন বলেই গণ্য করেন,” লিখেন আজাদ মজুমদার।

ঢাকা/হাসান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ