চাঁদপুরে কিশোরী ভাগনিকে নির্যাতনের অভিযোগে মামা-মামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে গতকাল বৃহস্পতিবার মামা-মামির বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওই কিশোরী। পরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নির্যাতনের শিকার রোজিনা আক্তার (১৫) চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের আলী আহম্মদ ভূঁইয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন আলী আহম্মদ ভূঁইয়া। রোজিনা চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ‘এক বছর আগে রোজিনাকে ঢাকায় আমার বড় মেয়ের কাছে দিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে না জানিয়ে রোজিনার মামা রুবেল মোল্লা তাঁর প্রতিবন্ধী সন্তান রিফাতকে দেখাশোনা করার কথা বলে তাকে (রোজিনা) ঢাকায় বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু রোজিনাকে গৃহকর্মীর কাজ করানো হতো। গত জানুয়ারিতে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে চলে আসেন রুবেল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। এক বছর ধরে আমাদের সঙ্গে রোজিনাকে দেখা করতে এবং কথা বলতে দেননি তাঁরা।বৃহস্পতিবার বিকেলে রোজিনা মামা-মামির নির্যাতন সইতে না পেরে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন রোজিনার অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথম থানায় নিয়ে যায় এবং হাসপাতালে ভর্তি করায়।’

রোজিনা জানায়, নানা অজুহাতে মামা-মামি তাকে মারধর করত। ধারালো দা, ছুরি দিয়ে শরীরে আঘাত করেছে। পিঠে ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়েছে। গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিত। পায়ের আঙুলগুলো থেঁতলে দিয়েছে। ঠিকমতো খাবার দিত না। মা–বাবার সঙ্গেও দেখা বা কথা বলতে চাইলে দিত না। গতকাল বাসায় মামি ছিল না। তখন সে ঘর থেকে পালিয়ে বাইরে চলে আসে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহার মিয়া বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শনিবার (৮ মার্চ) রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানায়।

রবিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান করেছেন। আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসি কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে জানান, আজ সকাল থেকেই বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান করেছেন। তবে  যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তারা কেউই অফিস করছেন না।

বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কর্মবিরতি পালন করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগেরদিন বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। একপর্যায়ে তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন; সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করেন।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো. আশিকুর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন—বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) ও রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), আল ইসলাম (৩৮), শহিদুল ইসলাম (৪২), ও তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), সাজ্জাদ হোসেন (৩০) ও আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯)।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ