সেন্টমার্টিনের সমুদ্রসৈকতে ১৮৩টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত
Published: 7th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফে সেন্টমার্টিনের সমুদ্রসৈকতে ১৮৩টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত করা হয়েছে। এসব বাচ্চা সেন্টমার্টিন মেরিন পার্ক হ্যাচারিতে জন্ম নেয়।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সমন্বয়ক আলী হায়দার।
আলী হায়দার জানান, চলতি বছর সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৮০০-এর বেশি কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করেছেন ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সদস্যরা। এসব ডিম পরিবেশ অধিদপ্তরের হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়।
তিনি আরও জানান, গত এক সপ্তাহ আগে আরও ১৭০টি কচ্ছপের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। দুই মাস আগে সংগ্রহ করা ১৮৩টি ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়, যা এবার বঙ্গোপসাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিন মেরিন পার্কে সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ার তদারকি করা হয়। কয়েক বছর ধরে ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনটি দ্বীপের সৈকত থেকে কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণে কাজ করছে।
কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্তকালে ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সমন্বয়ক আয়াত উল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মী আবদুল আজিজসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
আলী হায়দার বলেন, “প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে কচ্ছপসহ সকল সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য নিরাপদ প্রজনন ও আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পৃথিবীকে মানুষের বসবাস উপযোগী রাখতে হলে প্রাণীকুলের উপস্থিতি জরুরি। তারই অংশ হিসেবে কচ্ছপের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সাগরে অবমুক্ত করা হচ্ছে।”
ঢাকা/তারেকুর/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নারীর ভূমিকা মূল্যায়নে সোনারগাঁয়ে ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযান
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন, জ্বালানি অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে নারীর ভূমিকা মূল্যায়নের দাবিতে এক ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে শনিবার (৮মার্চ) দুপুরে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির (ইএসএডিএস), ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) এবং বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়।
এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সারাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করে নারীদের জ্বালানি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা।
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতামূলক বার্তা তুলে ধরেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জ্বালানি খাতে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং জ্বালানির ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ইএসএডিএস-এর মহাসচিব মীযানুর রহমান বলেন, “দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৪৬ শতাংশই গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত হয়, যার প্রধান ব্যবহারকারী নারীরা। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি নির্ভরতা এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, নারীরা জ্বালানি খাতে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা পরিবর্তন করা জরুরি।
প্রচারাভিযানে আরও বলা হয়, ফসিল ফুয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারণে নারীরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিশেষ করে, স্থানীয় এলাকায় বহিরাগতদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় নারীরা চলাচল, স্বাস্থ্যসেবা ও মৌলিক চাহিদা পূরণে সমস্যার সম্মুখীন হন। পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ঊওঅ) প্রক্রিয়ায় তাদের নামমাত্র পরামর্শের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তৎপরতা খুবই কম।
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারী আকলিমা আক্তার বলেন, "বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে নারীদের বিশেষ প্রয়োজন, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে নির্গত বিষাক্ত ধাতু নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। তবুও নারীরা ক্ষতিপূরণের অধিকার পান না, কারণ তাদের নামে জমির মালিকানা থাকে না।"
প্রচারাভিযান কর্মীরা নারীদের জন্য সহজে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় প্রচারাভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফারজানা, আফসানা, রুমি, নাসরিন, জহিরুল ইসলাম জহির, জান্নাতুল ভূঁইয়া, মীমরাজ হোসেন, ইমরানসহ অন্যান্য অংশগ্রহণকারী।