কক্সবাজারের টেকনাফে সেন্টমার্টিনের সমুদ্রসৈকতে ১৮৩টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত করা হয়েছে। এসব বাচ্চা সেন্টমার্টিন মেরিন পার্ক হ্যাচারিতে জন্ম নেয়। 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সমন্বয়ক আলী হায়দার।

আলী হায়দার জানান, চলতি বছর সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৮০০-এর বেশি কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করেছেন ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সদস্যরা। এসব ডিম পরিবেশ অধিদপ্তরের হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, গত এক সপ্তাহ আগে আরও ১৭০টি কচ্ছপের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। দুই মাস আগে সংগ্রহ করা ১৮৩টি ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়, যা এবার বঙ্গোপসাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিন মেরিন পার্কে সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ার তদারকি করা হয়। কয়েক বছর ধরে ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনটি দ্বীপের সৈকত থেকে কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণে কাজ করছে।

কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্তকালে ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সংগঠনের সমন্বয়ক আয়াত উল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মী আবদুল আজিজসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

আলী হায়দার বলেন, “প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে কচ্ছপসহ সকল সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য নিরাপদ প্রজনন ও আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পৃথিবীকে মানুষের বসবাস উপযোগী রাখতে হলে প্রাণীকুলের উপস্থিতি জরুরি। তারই অংশ হিসেবে কচ্ছপের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সাগরে অবমুক্ত করা হচ্ছে।”

ঢাকা/তারেকুর/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পাতে ফিরবে হারিয়ে যাওয়া গোটালি মাছ

দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে হারিয়ে যেতে বসা গোটালি মাছ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নীলফামারীর সৈয়দপুরে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।

সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আজহার আলী বলেন, তাঁদের গবেষণাকে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে মাছটি চাষি পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ফলে মাছটি আবার খাল-বিল ও নদী-নালায় পাওয়া যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

এই গবেষক বলেন, ইনজেকশন প্রয়োগ করার সাত–আট ঘণ্টা পর স্ত্রী গোটালি মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর ডিম থেকে রেণু বের হয়। সঠিক পরিচর্যায় ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তা আঙুলি পোনায় পরিণত হয়।

গোটালি মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Crossochelius latius’। সুস্বাদু এ মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় মাছের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল।

সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সূত্র জানায়, মিঠাপানির জলাশয়, পাহাড়ি ঝরনা ও অগভীর স্বচ্ছ নদী ছিল গোটালি মাছের আবাসস্থল। একসময় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও আত্রাই নদী ছাড়াও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী ও কংস, সিলেটের পিয়াইন এবং পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদীতেও প্রচুর পরিমাণে মিলত গোটালি মাছ। নানা কারণে গোটালির প্রজনন হুমকিতে পড়ে। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) মাছটিকে বিপন্ন প্রজাতি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তালিকায় বিলুপ্ত প্রজাতির ২৬১টি মাছের নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যে ৬৪টি মাছ দেশের নদী-নালা থেকে একেবারে হারিয়ে গেছে। আর বিলুপ্ত প্রজাতি থেকে ৪১টি মাছের প্রজনন প্রযুক্তি সফল হয়েছে। সেখান থেকে ১২টি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের পোনা চাষি পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে।

দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে হারিয়ে যেতে বসা গোটালি মাছ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাতে ফিরবে হারিয়ে যাওয়া গোটালি মাছ