Prothomalo:
2025-04-08@09:54:23 GMT

এ অরাজকতা বন্ধ করতেই হবে

Published: 7th, March 2025 GMT

একের পর এক মব সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও এর মোকাবিলায় সরকারকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা কারও কারও বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। কয়েক দিন আগে ঢাকায় দুই ইরানি নাগরিক মব সহিংসতার শিকার হন। এর আগে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি রাজনৈতিক দলের দুই কর্মী গণপিটুনিতে মারা যান। গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীও হেনস্তার শিকার হন।

তবে এসব ছাড়িয়ে যে ঘটনা জনমনে মারাত্মক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, তা হলো গুলশানের ৮১ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির চতুর্থ তলার বাসায় মধ্যরাতে একদল লোকের তাণ্ডব, ভাঙচুর ও ডাকাতি। তাণ্ডবের আগে ওই ব্যক্তিরা গুজব ছড়িয়ে দেন যে সাবেক এমপি তানভীর ইমামের মালিকানাধীন এই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁরা এতটাই বেপরোয়া ছিলেন যে এসএমএসের মাধ্যমে সাংবাদিকদের আগাম খবর দিয়ে বাসায় হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিস্ময়কর হলো, বাসাটি সাবেক এমপি তানভীর ইমামের নয়, তাঁর সাবেক স্ত্রীর, যঁার সঙ্গে ১২ বছর আগে তাঁর সম্পর্কের ইতি ঘটে।

পুলিশের ভাষ্য হলো, বাসার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক শাকিল আহমেদ অবৈধ অস্ত্র ও টাকা থাকার গুজব ছড়িয়ে লোকজন জড়ো করেছেন। পুলিশ শাকিল, তাঁর ছেলেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। টিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ২৫ থেকে ৩০ ব্যক্তি হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। অন্যরা কোথায় গেলেন?

কূটনৈতিক এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশানে যদি দুর্বৃত্তরা সাংবাদিকদের ডেকে মধ্যরাতে এ রকম ঘটনা ঘটাতে পারে, তাহলে নাগরিকদের নিরাপত্তা কোথায়? এতে প্রমাণিত হয় যে কোনো ব্যক্তি মব তৈরি করে যেকোনো বাসায় হামলা চালাতে পারে। ঘটনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ চেষ্টা মাত্র। তাদের ভাষ্য, গুলশানের ওই বাসায় অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে ‘তল্লাশি’র নামে ২০ থেকে ২৫ জন লোক দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে পড়েন।

কোনো ব্যক্তি চাইলেই কি কোনো বাড়িতে ‘তল্লাশি’ চালাতে পারেন? কোথাও অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। দেশে আইনের শাসন থাকলে মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা এ রকম ‘তল্লাশি’ চালাতে পারত না। কোনো বাসায় অবৈধ অস্ত্র কিংবা অর্থ লুকানো থাকলে তাঁরা থানা-পুলিশকে খবর দেবেন। সমাজবিরোধী কিংবা আইন অমান্যকারী কোনো ব্যক্তি থাকলেও সেটা দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের নয়।

গত বছরের আগস্টে যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন বিশৃঙ্খল অবস্থা কিংবা মব সহিংসতার কারণ হিসেবে পুলিশ নিষ্ক্রিয় বলে দোহাই দেওয়া হতো। সাত মাস পরও সেই অজুহাত কোনোভাবে চলে না; যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি, সেনাসদস্যরাও নিয়োজিত। গুলশান-বারিধারার মতো কূটনৈতিক এলাকায় যদি মানুষ এ রকম মব তৈরি করে মধ্যরাতে বাড়ি ভাঙচুর করতে পারে, অন্যান্য স্থানে কী ঘটতে পারে, অনুমান করা কঠিন নয়।

সরকার কত বাহিনী নিয়ে কত প্রকার অভিযান চালাচ্ছে, সেই হিসাব জনগণ জানতে চায় না। তারা চায় ঘরের ভেতরে ও বাইরে জানমালের নিরাপত্তা। ঘটনার পেছনে না দৌড়ে সরকারের উচিত শক্ত হাতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। মব সহিংসতার নামে দেশব্যাপী যে অরাজকতা চলছে, তা বন্ধ করতেই হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দলীয় শৃঙ্খলারক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না

দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রম, রাজনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা করেছেন সিলেট জেলা ও নগর বিএনপির নেতারা। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা জানান, দলীয়শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। কেউ যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় কারও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডকে পুরো দলের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করার অনুরোধ জানান নেতারা। 

বিএনপি নেতারা চা-শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত চা শিল্প বর্তমানে চরম সংকটে। চা-শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় মালিকপক্ষ, সরকার ও শ্রমিক সংগঠনকে একযোগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। রমজানে চা-শ্রমিকদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয় বলে তারা জানান।

সভায় আরও জানানো হয়, গত বছর গণআন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে সিলেট বিএনপি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, ঈদ উপলক্ষে সিলেট নগর ও জেলার প্রতিটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল। এজন্য পুলিশ, র‌্যাব, ট্রাফিক বিভাগ, হাইওয়ে ও রেলওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও একটি নতুন আগামীর স্বপ্নে জনগণের যে প্রত্যাশা রয়েছে, তা তারা সরাসরি উপলব্ধি করতে পেরেছেন।

সভায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। 

সভায় বক্তারা বলেন, পবিত্র রমজানে জেলার প্রতিটি উপজেলা-পৌরসভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে এবং মহানগরীর থানার ওয়ার্ড-পাড়াগুলোতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল করায় সাধারণ জনগণের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের যোগাযোগ আরও গভীর হয়েছে। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক পিপি, শাহজামাল নুরুল হুদা, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাজিম উদ্দিন লস্কর ও সামিয়া বেগম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. আশরাফ আলী ও রহিম মল্লিক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রশাসনের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই
  • মার্কিন দূতাবাসের সামনে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • যুবলীগ সন্ত্রাসীর হামলায় আহত শাহিনকে দেখতে গেলেন বাবু, শাস্তি দাবি
  • দলীয় শৃঙ্খলারক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না
  • কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ 
  • মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়