মাছরাঙা টেলিভিশনে আজ শুরু হচ্ছে ‘সেরা রাঁধুনী’। রান্নাবিষয়ক এই রিয়েলিটি শো প্রতি শুক্র ও শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রচারিত হবে। সারা দেশ থেকে রান্নার প্রতিভা খুঁজে আনতে অষ্টমবারের মতো এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে স্কয়ার গ্রুপের মসলার ব্র্যান্ড ‘রাঁধুনী’। ‘সেরা রাঁধুনী’ বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশের সব বিভাগ মিলে মোট ১১টি অডিশন হয়। এরপর ঢাকায় গ্র্যান্ড অডিশন করে স্টুডিও রাউন্ডের জন্য প্রতিযোগীদের বেছে নেওয়া হয়।
স্টুডিও রাউন্ডে ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার রান্নায় পারদর্শিতা যাচাইয়ের পাশাপাশি পরিবেশনা, উপস্থাপন, বাচনভঙ্গি, ব্যক্তিত্ব, বিক্রয় দক্ষতা, নেতৃত্বগুণ, খাবারের ব্যবসা চালানোর ক্ষমতা, বিভিন্ন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক বুদ্ধি ও দক্ষতা প্রয়োগের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচিত হবেন ‘সেরা রাঁধুনী সিজন ৮’।
ঢাকায় গ্র্যান্ড অডিশন করে স্টুডিও রাউন্ডের জন্য প্রতিযোগীদের বেছে নেওয়া হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম যন্ত্রে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে সেই শিশুর
তিন দিনেও জ্ঞান ফেরেনি লাইফ সাপোর্টে থাকা মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটির। তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাকে সেখানে নেওয়া হয়।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে গতকাল মাগুরা সদর থানায় মামলা করেছেন। এতে আসামি করা হয়েছে চারজনকে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলো– শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ, সজিবের ভাই রাতুল শেখ, বাবা হিটু শেখ ও মা জাবেদা বেগম। এজাহারে বলা হয়েছে, আট বছরের শিশুটিকে ধর্ষণ করে তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ।
বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত বুধবার রাতে মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় সে। বৃহস্পতিবার সকালে অচেতন অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন হিটুর স্ত্রী জাবেদা বেগম। পরে তিনি পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর স্বজন হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে আনা হয় ঢামেক হাসপাতালে।
গতকাল দুপুরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভেন্টিলেটর যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। পাশবিক নির্যাতনের কারণে শিশুটির যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে। চেপে ধরার কারণে তার গলার আঘাত গুরুতর। শিশুটির চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই বোর্ডে চারটি বিভাগের চিকিৎসকরা রয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, দুপুরে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে আসেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। উপদেষ্টার নির্দেশ ও শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে শিশুটিকে বিকেলে সিএমএইচে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্বজন জানান, খাওয়া-দাওয়া না করায় শিশুটির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিকেল তাঁকে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেওয়া হয়েছে।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, এজাহারভুক্ত চারজনকে আগেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। রোববার তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এজাহারে যা বলা হয়েছে
শিশুটির মা ঢাকা থেকে স্বামী ও বড় মেয়েকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন রাতে বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বড় মেয়েকে তার শ্বশুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও প্রতিবাদ কেউ করেনি।
সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাস উপদেষ্টার
গতকাল দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। এ সময় তিনি বলেন, যে শিশুটি এখনও মেয়ে হয়ে ওঠেনি, নারী হয়ে ওঠেনি, তার গায়ে হাত দেয় কী করে? দেশটা কী কাপুরুষের দেশ হয়ে গেল? যারা আট বছরের মেয়ের গায়ে হাত দিল! এর পরও কাপুরুষগুলো পুরুষ হয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপদেষ্টা আরও বলেন, দোষীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।