আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে গত বছর জুনে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সুনীল ছেত্রী। নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেন কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিপক্ষে গত ৬ জুন। তাঁর বিদায়ে ভারতের আক্রমণভাগ কিছুটা হলেও শক্তি হারায়। তবে আট মাস পর আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছেন ভারতীয় ফুটবলের এই কিংবদন্তি।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় ফুটবল দলের এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে জানানো হয়, সুনীল ছেত্রী আবারও ফিরছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে। ভারতের কোচ মানোলো মার্কেজ বলেছেন, ‘এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টে যেসব ম্যাচ সামনে আছে, তার গুরুত্ব বুঝে জাতীয় দলকে শক্তিশালি করতে আমি সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে তাঁর ফেরার বিষয়ে কথা বলেছি। সে রাজি হওয়ায় আমরা তাঁকে স্কোয়াডে অর্ন্তভুক্ত করেছি।’

আগামী ১৯ মার্চ মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারতের প্রীতি ম্যাচের দলে রাখা হয়েছে তাঁকে। এরপর ২৫ মার্চ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষেও ছেত্রীকে ভারতের দলে রাখা হয়েছে। দুটি ম্যাচই হবে শিলংয়ে।

২০০৫-এর ১২ জুন পাকিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন ছেত্রী। অভিষেক ম্যাচেই গোল করেন। ২০০৭ সালে নেহরু কাপ ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। প্রথম ম্যাচে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ভারতের ৬-০ গোলের জয়ে দুটি গোল ছেত্রীর।

ভারতের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা ৪০ বছর বয়সী ছেত্রী। নামের পাশে ১৫১ ম্যাচে ৯৪ গোল, যেটি আন্তর্জাতিক ফুটবলে চতুর্থ সর্বোচ্চ। ছেত্রীর চেয়ে বেশি গোল করেছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি ও ইরানের আলি দাই। ছেত্রী চারবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা খেলোয়াড় (২০১১, ২০১৫, ২০২১ ও ২০২৩)। সাফের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৩ গোলেরও মালিক।

ছেত্রী না থাকলে শিলংয়ের ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পেত। বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরাও সেভাবেই হয়তো তাঁর পরিকল্পানা সাজাচ্ছিলেন। কিন্তু ছেত্রীর ফেরার ঘোষণায় এখন নতুন করে সবকিছু ভাবতে হবে বাংলাদেশ কোচকে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি

২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতের কথা। ভিয়ারিয়ালের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে লিগে টানা ষষ্ঠ জয় আদায় করে নেয় বার্সেলোনা। কিন্তু জিতেও যেন স্বস্তি ছিল না বার্সা শিবিরে। হাঁটুতে মারাত্মক চোট পেয়ে যে স্ট্রেচারের করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে শূন্যে লাফিয়ে বল ধরার পর পড়ে গিয়ে ডান হাঁটুতে এই চোট পান জার্মান গোলরক্ষক।

সে সময়েই বোঝা যাচ্ছিল, খারাপ কোনো খবর পেতে যাচ্ছে বার্সেলোনা। হয়েছেও তাই। জানা যায়, গুরুতর এই চোটে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে টের স্টেগেনের। দলের প্রধান গোলরক্ষককে হারিয়ে বার্সার তখন পাগলপ্রায় দশা।

ইনিয়াকি পেনিয়া দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে থাকলেও মৌসুমজুড়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখা কঠিনই ছিল। আর কোনো কারণে যদি তাঁকেও হারাতে হয়, তখন কী হবে! সব মিলিয়ে বার্সার আরেকজন গোলরক্ষককে দলে টানা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়।

কিন্তু লা লিগার দলবদলের দুয়ার তখন বন্ধ হওয়ায় বিকল্প পথের সন্ধান করতে হয় বার্সাকে। এর মধ্যে একটা পথ পেয়েও যায় তারা। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) বিশেষ শর্ত মেনে গোলরক্ষক ভেড়ানোর সুযোগ পায় কাতালান ক্লাবটি। শর্তটি হচ্ছে চোটাক্রান্ত খেলোয়াড়টিকে চার মাসের বেশি সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে হবে।

আরও পড়ুনআলিসন ও সেজনি: মানব থেকে অতিমানব০৬ মার্চ ২০২৫

পাশাপাশি যে খেলোয়াড়টি তারা নেবে, তাঁকে ফ্রি এজেন্ট হতে হবে এবং দলবদল শেষ হওয়ার আগেই আগের ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে হবে। এ ছাড়া নতুন যে গোলরক্ষককে তারা কিনবে, তাঁকে আহত গোলরক্ষকের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন দেওয়ার অনুমতি পাবে ক্লাবটি। যেমন বার্সায় টের স্টেগেন বেতন পান বছরে ৯০ লাখ ইউরো। এখন নতুন গোলরক্ষকের বেতন হতে পারবে বছরে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ ইউরো।

এত শর্ত মেনে খেলোয়াড় খুঁজে বের করা সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এই কঠিন শর্তই বার্সাকে পৌঁছে দেয় ভয়চেক সেজনির কাছে। যিনি এক মাস আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট জুভেন্টাসের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি ছিন্ন করে হয়ে যান ফ্রি এজেন্ট।  

দলের সঙ্গে ট্রফি হাতে সেজনির উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি