কাজে আসছে না সোয়া দুই কোটি টাকার পাতকুয়া
Published: 6th, March 2025 GMT
কথা ছিল সৌরবিদ্যুৎ চালিত ডাগওয়েল বা পাতকুয়ার সাহায্যে চাষিদের সবজি ও বোরো ক্ষেতে সেচের পানি সরবরাহ করা হবে। কৃষক বিনা খরচে তা পাবেন। কিন্তু মাঠে গিয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। অবকাঠামোর অস্তিত্ব ঠিক থাকলেও অধিকাংশ ডাগওয়েল অকেজো। কোথাও ট্রান্সমিটার নেই আবার কোথাও নেই পানি তোলার পাইপ ও পানির ট্যাঙ্কি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রয়াত সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকা শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২০১৬-১৭ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন ২৩টি ড্রাগওয়েল বা পাতকুয়া। উদ্দেশ্য ছিল বিনা খরচে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের সবজি ও বোরো ক্ষেতে সেচ দেওয়া। সৌরবিদ্যুৎ চালিত এসব পাতকুয়ার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প। আর কৃষি বিভাগ সেচকাজের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে আসছিল। কিন্তু এসব পাতকুয়ায় শুরুতে কিছু পানি উঠলেও বছর যেতেই পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিটি পাতকুয়ার পানি সুবিধা পাওয়ার জন্য ৪১ সদস্যের কৃষক গ্রুপ করা হয়। গ্রুপের প্রত্যেক সদস্য মাসিক স্বল্প টাকা জমা করেন, যা দিয়ে কুয়ার সমস্যা দেখা দিলে মেরামত করা যায়। কিন্তু পাতকুয়ার পানিতে ৪০ জন তো দূরে থাক দু’জন কৃষকের চাহিদাও মেটানো যাচ্ছে না। টাকা দিয়ে সেচের পানি দিয়ে ফসল করতে হচ্ছে তাদের। মাঠে অবকাঠামো থাকলেও সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাতকুয়া কেন অকেজো হয়ে আছে, এর সদুত্তর দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
চাষিদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে তদারকি না করায় এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না করায় সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা গচ্চা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষকও বিনা খরচে সেচসুবিধা পাচ্ছেন না।
নালিতাবাড়ী উপজেলার মানিককুড়া গ্রামের কৃষক নবী হোসেন বলেন, ‘এ পাতকুয়া দিয়ে আমাদের দুই শরিকের জমিতেই পুরোপুরি পানি দেওয়া সম্ভব হয় না। অন্যদের পানি কীভাবে দিব? এই পাতকুয়া পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন পাতকুয়া থেকে ঠিকমতো পানি বের হয় না। তাই কেউ সেচের জন্য আসেও না। ক্ষেতে পানি দিতে না পারলে তো আর মাসিক চাঁদাটা কেউ দিতে চায় না।’
একই উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া এলাকার কৃষক হাবিবুল্লাহ, শহিদুল ইসলাম ও বুলবুল আহমেদ জানান, ওই পাতকুয়া দিয়ে এক বছর বেশ ভালোই পানি উঠছে। কিন্তু কিছু দিন থেকে এটা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তারা টাকা দিয়ে অন্য সেচপাম্প থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদ করছেন। পাতকুয়ার খোঁজ নিতে কেউ আসে না। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা লাভের পরিবর্তে লোকসানই হচ্ছে। তবে প্রকল্পটি চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয় চাষিদের।
কথা হয় নকলা উপজেলার রামপুর গ্রামের পাতকুয়া কৃষক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, এখানে ৪১ জনকে পানি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পানি ঠিকমতো ওঠে না। ক্ষেতে পানি দেওয়া যায় না। তাই কেউ চাঁদাও দেয় না। যে উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। দেখাশোনা বা রক্ষণাবেক্ষণে কেউ না থাকায় এটি ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (ক্ষুদ্র সেচ) শেরপুরের সহকারী প্রকৌশলী শামিমা নাসরিন কণা বলেন, ‘পাতকুয়া সম্পর্কে আমি এখন পর্যন্ত কিছু জানি না। ওই সময় যারা কর্মরত ছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে বলতে পারব।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স রব দ য ৎ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএল দিল্লি–কলকাতা
বয়স ৩৭ ছুঁইছুঁই। স্বাভাবিকভাবেই সেরা সময় পার করে এসেছেন সুনীল নারাইন। এবারের আইপিএলেও বল হাতে খুব একটা ভালো করতে পারছিলেন না। সর্বশেষ দুই ম্যাচে ছিলেন কিছুটা খরুচে, পাননি কোনো উইকেট।
প্রশ্নটা তাই কলকাতা নাইট রাউডার্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজগুলোতে বেশি উঠছিল—নারাইন কি ফুরিয়ে গেলেন?
না, নারাইন এখনো ফুরিয়ে যাননি। ‘বুড়ো’ বয়সেও যে তাঁর বোলিং অনেক কাছে রহস্যময় হয়ে আছে, আজ চোখের পলক ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে সেটাই যেন বুঝিয়ে দিলেন! দিল্লি ক্যাপিটালসের মুঠো থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়ে ১৪ রানে জেতালেন কলকাতাকে।
নিজেদের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে কলকাতাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল দিল্লি। টপ ও মিডল অর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যানের অবদানে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান করেছিল কলকাতা। লক্ষ্য তাড়ায় ৯ উইকেটে ১৯০ রানে থেমেছে দিল্লি। এ জয়ে আইপিএলের প্লে–অফে খেলার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতা।
টপাটপ ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন নারাইন