গ্রাহক মুর্তজা আলীর বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছে ইস্টার্ণ ব্যাংক
Published: 6th, March 2025 GMT
মানহানির অভিযোগে মুর্তজা আলী নামের এক গ্রাহককে বিবাদী করে মানি মোকদ্দমা করেছে ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি। ঢাকার প্রথম যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে ৪ মার্চ এ মামলা করেছেন ইস্টার্ণ ব্যাংকের আইন বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা এইচ এম হাসান মাহমুদ। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী।
মামলায় বিবাদীর বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার ডিক্রি জারির আদেশ চেয়েছে ইস্টার্ণ ব্যাংক। আদালত বিবাদীর বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় ইস্টার্ণ ব্যাংক বলেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার বিবাদী মুর্তজা আলী ইস্টার্ণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যাংকের সুনাম নষ্টের জন্য চট্টগ্রামের আদালতে মিথ্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ব্যাংকের কারও বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে ইস্টার্ণ ব্যাংক আরও উল্লেখ করেছে, গোলাম মুর্তজার দায়ের করা মিথ্যা মামলার ঘটনাটি ফলাও করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করা হয়। এতে ব্যাংকের সুনাম নষ্ট হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালকেরা সবাই সম্মানিত পরিবারের সদস্য, উচ্চশিক্ষিত এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। মূলত হয়রানি ও সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য এ মামলা করেছেন মুর্তজা আলী।
উল্লেখ্য, গ্রাহকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যানসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যের ওপর হামলা
ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এবার ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের রানি কমলাপতি রেলস্টেশনে (পুরোনো নাম হাবিবগঞ্জ স্টেশন) রেলওয়ে পুলিশের এক উর্দিধারী কর্মীর ওপরে হামলা হয়েছে।
পুলিশের সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা জানিয়েছে, তিনজন তরুণ একজন রেলওয়ে পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই তরুণেরা তাঁর ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেছেন। তরুণেরা তাঁকে গালিগালাজ এবং আপত্তিকর ধর্মীয় মন্তব্য করেন। ওই পুলিশ সদস্যের নাম নজর দৌলত খান।
গত শনিবার দিবাগত রাত দুটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত তরুণদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি দুজন এখনো পলাতক। তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানায়, হেড কনস্টেবল নজর দৌলত এবং তাঁর দল দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে স্টেশন চত্বরে গিয়েছিলেন। তাঁরা যখন এ কাজ করছিলেন তখন নজর দৌলত একটি থেমে থাকা গাড়ির মধ্যে একদল তরুণকে মদ্যপান করতে দেখেন। তিনি তাঁদের চলে যেতে বললে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণেরা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালায়।
গতকাল রোববার ঘটনার একটি ভিডিও ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিও পুলিশের কাছেও স্বাভাবিকভাবে পৌঁছায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণেরা শুধু নজর দৌলতকে মারধরই করেননি, তাঁর ধর্ম উল্লেখ করে অবমাননাকর মন্তব্যও করেছেন।
সন্দীপ ও কমল রঘুবংশী নামের নজর দৌলতের অন্য দুই সঙ্গী কনস্টেবল তাঁকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্ত তরুণদের একজন তাঁদের বলে, ‘তোমরা হিন্দু ভাই, তোমরা এখান থেকে সরে যাও।’
ওই তরুণ আরও বলেন, ‘হিন্দু ভাইয়েরা বুদ্ধিমান আর এই লোক (দৌলত খান) তাদেরই বক্তৃতা দিচ্ছে।’
রেলওয়ে স্টেশনে আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মদ্যপ তরুণেরা পুলিশের জিপের দরজা জোর করে খুলছেন এবং কনস্টেবলকে গাড়ির ভেতরে ঢুকে মারধর করছেন।
উপপরিদর্শক (এসআই) রামদয়ালকে উদ্ধৃত করে দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত তিন তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জিতেন্দ্র যাদব নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর দুই পলাতক সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস থেকে এখন পর্যন্ত মুসলিম সমাজের ওপরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কখনো ধর্মীয় সম্পত্তি, কখনো মাদ্রাসা বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সমাজের স্কুল, কখনো তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সাধারণ মানুষের ওপরে হামলার ঘটনা প্রবলভাবে বেড়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
তবে একজন পুলিশ কর্মীকে বেছে নিয়ে নির্দিষ্টভাবে হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভবত এই প্রথম ঘটল।