ইফতার রাজনীতিতে দল চাঙ্গা করতে চান নেতারা
Published: 6th, March 2025 GMT
তৃণমূল নেতাকর্মীকে আরও চাঙ্গা ও ঐক্যবদ্ধ করতে পুরো রমজানে বিভাগজুড়ে ইফতার মাহফিল আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট বিএনপি। এর মাধ্যমে দল গোছানো এবং নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে বলেও মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ এই ইফতার মাহফিলকে ভোটের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন।
এ ছাড়া প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলেও এখন নতুন নতুন সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে দলের নেতাকর্মীকে। বিশেষ করে তারা জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে চিন্তিত। এ কারণে দলকে সংগঠিত করাই মূল কাজ বলে তারা মনে করছেন।
শেখ হাসিনার পতনের আগে সবকিছুতেই নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের। ৫ আগস্টের পর সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে সিলেট বিএনপি। গত সাত মাসে দলে ঘটে গেছে নানা বিতর্কিত ঘটনা। চোরাই চিনিকাণ্ড, পাথর লুট, দলীয় কোন্দলে কর্মীর মৃত্যু, মামলা বাণিজ্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়িত, জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থি প্রার্থীদের ভরাডুবি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি বাতিল, জেলা ও নগর বিএনপির চার নেতাকে শোকজসহ নানা ঘটনায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, ঐক্য না থাকায় এই মুহূর্তে সিলেট বিএনপিতে শৃঙ্খলা নেই। কর্মীরা নেতাদের কথা কোনোভাবেই মানতে নারাজ। দলের চেইন অব কমান্ড অনেকটা ভেঙে পড়েছে।
ফলে ইফতারের মাধ্যমে মাঠ নিজেদের দখলে রাখা, মাহফিল থেকে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবি আরও জোরালো করা এবং নির্বাচন কোনোভাবে বিলম্বিত হলে নেতাকর্মীরা যাতে ভেঙে না পড়েন, সেজন্য তাদের ধরে রাখার কৌশল নিয়েছে বলে জানান নেতারা।
জানা গেছে, বিভাগের প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন, নগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলটির নেতাদের ইফতার মাহফিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাহফিল সফল করতে সিলেটজুড়ে প্রচারও চালাচ্ছে দলটি। এ জন্য একাধিক টিমও গঠন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দল চাঙ্গা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণে সিলেটে বিএনপি নেতাদের ওপর চাপ বেশি। সব স্থান থেকেই তাদের চাপে রাখা হয়েছে। এবার তাদের নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
নগর বিএনপির আরেক নেতা বলেন, ইফতার মাহফিল এমনভাবে করতে বলা হয়েছে, যাতে সব মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। এ ছাড়া এবার সাধারণ মানুষকে যেমন সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে, ঠিক তেমনি হাটবাজার, খোলা ময়দানে ইফতার মাহফিল করারও নির্দেশনা রয়েছে।
ইফতার মাহফিল সফল করতে ২ মার্চ নগর বিএনপির আওতাধীন নবগঠিত ছয় থানার আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবদের নিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী জরুরি সভা করেন। সভায় সব থানা কমিটির ইফতার মাহফিল করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এমএ সালাম বলেন, তারেক রহমানের ইচ্ছা তাঁর দলের নেতাকর্মীরা যেন কোনোভাবেই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন না হন। তাই সবাইকে এবারের ইফতারে সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভেদ নয়, ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে এবং দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে, দলের পক্ষ থেকে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাদামাটা ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সেভাবেই কাজ করছি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ আহমদ সিদ্দিকী বলেন, অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে টিকে আছেন নেতাকর্মীরা। আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন গণতান্ত্রিক যাত্রা টিকিয়ে রাখতে হলে জনসম্পৃক্তার বিকল্প নেই। এই ইফতার মাহফিল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
পিএসসি সংস্কারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ৭ দফা
পিএসসি সংস্কারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ৭ দফা
অথর: ০২২৮৮
সেকশন: রাজধানী, বাংলাদেশ
ছবি:
ক্যাপশন: পিএসসি সংস্কার এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে। ছবি: প্রথম আলো
ট্যাগ: সরকারি কর্ম কমিশন, পিএসসি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএস
মেটা: পিএসসি সংস্কারে সাত দফা দাবি ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এক্সসার্প্ট: সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ৪৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ করা এবং প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করা; প্রতিটি বিসিএস পরীক্ষার নির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করা।
হেডিং: পিএসসি সংস্কারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ৭ দফা
প্রতিবেদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সংস্কার এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিসহ সাত দফা দাবি ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ৪৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ করা এবং প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করা; প্রতিটি বিসিএস পরীক্ষার নির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করা; সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে ভেরিফিকেশনে হয়রানি লাঘবের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গেজেট প্রকাশ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করা; মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবার চাকরি নিশ্চিত করা।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে বেসরকারি খাতে চাকরির পরীক্ষার আবেদন ফি সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে সাত দিনের মধ্যে কমিশন গঠন, বিসিএসসহ সব চাকরির পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ এবং বিসিএস প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, অন্যথায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া।
এই আন্দোলনের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হুসাইন বলেন, ‘৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে আমাদের পিএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য রাজপথে দাঁড়াতে হবে, এটা মেনে নিতে পারছি না। আমরা ভেবেছি, অন্তর্বর্তী সরকার নিজ উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করবে। কিন্তু তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, ‘পিএসসি সংস্কারের জন্য আন্দোলন করছি, এটাই শেষ নয়। যদি সংস্কার না হয়, তাহলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, একই দিনে একাধিক পরীক্ষা নেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে শান্ত চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।