আ’লীগ নেতার কারখানার ধুলায় অতিষ্ঠ মানুষ
Published: 6th, March 2025 GMT
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভূপতিপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার বিটুমিন-পাথর মেশানো কারখানা বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ-মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তারা ড্রাম ফেলে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
এ সময় মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু-ধারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের যাত্রীরা। তবে দুপুরে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কারখানাটি বন্ধ করা হলে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেন।
জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের ভূপতিপুর এলাকায় ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাশে সদর পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাসুমের ঠিকাদারি কাজের জন্য স্পল্ট প্লান্ট নামের বিটুমিন-পাথর মেশানোর কারখানা রয়েছে। ১০ বছরের বেশি সময় কারখানাটিতে বিটুমিন-পাথর মেশানোর সময় প্রচুর ধুলা নির্গত হয়। এতে আশপাশের মানুষের ধুলায় বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, বাড়িতে খাবার রাখা যায় না, ধুলায় শ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। বারবার এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানানো হলেও কাজে আসেনি। ফলে এলাকার নারী-পুরুষ মিলে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা স্থায়ীভাবে কারখানাটি বন্ধের দাবি জানান।
ঘটনাস্থলে এসে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসসহ পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কারখানাটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা খোলা হবে না বলে জানান। এতে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভূপতিপুর এলাকার গৃহবধূ জাহানারা বেগম বলেন, পাথরের ধুলায় বাড়িতে থাকতে পারেন না। খাবার, কাপড় সব ধুলায় ভরে যায়। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বহুবার কারখানা মালিককে জানালেও কাজ হয়নি। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কারখানার কাজ চালিয়ে গেছেন।
অপর এলাকাবাসী মনিরুল ইসলাম বলেন, এ কারখানার ধুলার যন্ত্রণায় রাস্তা বা বাড়ি কোথাও টেকা যায় না। মানুষের ক্ষতি করার জন্য দায়ী এই কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন। কারণ প্রশাসনকে বহুবার জানানো হলেও তারা কোনো কাজ করেনি।
এলাকাবাসীর দাবির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হলো জানতে চাওয়া হলে ঘটনাস্থলে থাকা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, কারখানাটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে
দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে।
এলাকাবাসীর দাবির বিষয়ে জানতে কারখানা মালিক সদর পৌর আওয়ামী লীগের
সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাসুমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে কারখানার ম্যানেজার রিজভী শেখ বলেন, প্রশাসনের কথামতো তারা কারখানাটি আপাতত বন্ধ রেখেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল এল ক ব স ঝ ন ইদহ র এল ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৫ ও বিএনপি ৯ পদে জয়ী
কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগপন্থী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সহিদুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আমিনুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থী প্রার্থীরা ৫টিতে এবং বিএনপিপন্থী প্রার্থীরা ৯টি পদে জয় পেয়েছেন।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে আইনজীবী সমিতির ভবনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে ৬০৬ জন ভোটারের মধ্যে ৫৩৭ জন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। পরে দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনজীবী এস এম মাহবুবুর রহমান।
ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামীপন্থী আইনজীবী সহিদুল আলম ৪৪১ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ ৮০ ভোট পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপিপন্থী আইনজীবী আমিনুল ইসলাম ২৯১ ভোট পেয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীপন্থী শেখ শহিদুল ইসলাম ১৩৪ ভোট পেয়েছেন।
সভাপতি সহিদুল আলম ছাড়া আওয়ামীপন্থী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের জয়ী অন্য প্রার্থীরা হলেন সহসভাপতি পদে আবদুর রাশিদ ভূঞা, সদস্য পদে কফিল উদ্দিন, মো. সারোয়ার জাহান ও মো. সোহাগ মিয়া।
সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ছাড়া বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্যানেল থেকে জয়ী প্রার্থীরা হলেন সহসভাপতি পদে মো. মানিক, সহসাধারণ সম্পাদক পদে নাদিরা সুলতানা ও শাহিনূর কলি, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল বোখারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এ এম সাজ্জাদুল হক, অডিটর পদে আবু বাক্কার সিদ্দিক, সদস্যপদে মোহাম্মদ আহসানুজ্জামান ও আবু তাহের। এর মধ্যে সদস্য পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।