জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা আইসিসিতে পাঠানোর আহ্বান জানালেন টবি ক্যাডম্যান
Published: 6th, March 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই আইনবিশেষজ্ঞ আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি এই সুপারিশ তুলে ধরেন।
বৈঠকে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সহযোগিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ ছাড়া বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর ছত্রচ্ছায়ায় থাকা অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিপূরক বিচারব্যবস্থার আওতায় আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
বৈঠকের শুরুতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।
ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত নৃশংসতার বিচার চলছে।
বৈঠকে বিভিন্ন আইনি কাঠামো, নতুন সংযোজন ও অতীতের স্বৈরাচারী শাসন থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
জি৩৭ চেম্বার্সের প্রধান টবি ক্যাডম্যান আইসিটির আইনি ও বিধিবদ্ধ কাঠামো সংশোধনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করা দরকার, যাতে এটি আগের স্বৈরাচারী শাসনের ধারাবাহিকতা মনে না করা হয়।
এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডসংক্রান্ত বিষয় ও প্রমাণ গ্রহণের নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার বিষয়েও আলোচনা হয়, যাতে ন্যায়বিচার ও সুবিচারের সর্বোচ্চ মান বজায় থাকে।
অধ্যাপক ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তাঁদের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের জানা উচিত, ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী, বিক্ষোভকারী ও শ্রমিকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল কে এবং মূল অপরাধীরা কারা। জাতিসংঘের তদন্ত দল শেখ হাসিনা সরকারের আসল চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন আমাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
বৈঠকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও চুরি হওয়া সম্পদ উদ্ধারের পদক্ষেপ, আইসিটি ও প্রসিকিউশন টিমের সম্পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা, সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদান, অভিযুক্তদের জন্য সুবিচার নিশ্চিতে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া আগের সরকারের আমলে লুটপাট হওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকের শেষে টবি ক্যাডম্যানকে উপহার ও ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ: গ্রাফিতি অব বাংলাদেশস নিউ ডন’ বইটি উপহার দেন, যা বাংলাদেশের নতুন যুগের আশা ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর আইস ট
এছাড়াও পড়ুন:
এআইয়ের দুর্বলতা শনাক্তে ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত পুরস্কার দেবে মাইক্রোসফট
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) বিভিন্ন সুবিধার নিরাপত্তা দুর্বলতা শনাক্ত করতে পারলে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেবে মাইক্রোসফট। ডায়নামিকস ৩৬৫ ও পাওয়ার প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট সেবা ও পণ্যে থাকা ত্রুটি শনাক্ত করে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার পেতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
পাওয়ার প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন প্রতিষ্ঠানের তথ্য বিশ্লেষণ ও কাজ অটোমেশনের প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ডায়নামিকস ৩৬৫ হলো গ্রাহক, পণ্য, কর্মী ও কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত বিজনেস অ্যাপ্লিকেশন।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, মডেল ম্যানিপুলেশন, ইনফারেন্স ম্যানিপুলেশন ও ইনফারেনশিয়াল তথ্য ফাঁসের মতো ত্রুটি শনাক্ত করে প্রমাণসহ জমা দিতে পারলেই ৫০০ থেকে ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে। নিরাপত্তা দুর্বলতার গুরুত্ব, প্রভাব ও প্রতিবেদনের মানের ওপর নির্ভর করে পুরস্কারের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
গত বছর ‘ইগনাইট’ সম্মেলনে মাইক্রোসফট ‘জিরো ডে কোয়েস্ট’ নামে একটি বিশেষ হ্যাকিং ইভেন্ট চালু করে। ক্লাউড ও এআই প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যে থাকা ত্রুটি শনাক্তের এ কার্যক্রমে গবেষকেরা ৬০০টির বেশি নিরাপত্তা দুর্বলতা শনাক্ত করেন। এ বিষয়ে মাইক্রোসফট সিকিউরিটি রেসপন্স সেন্টারের (এমএসআরসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট টম গ্যালাঘার জানিয়েছেন, হ্যাকিং ইভেন্টে ৬০০টির বেশি নিরাপত্তা দুর্বলতার তথ্য পাওয়া গেছে এবং সন্ধানদাতাদের ১৬ লাখ ডলারের বেশি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির চ্যাটবট কোপাইলটের মাঝারি মাত্রার দুর্বলতার জন্য পুরস্কারের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি কোপাইলটের অন্যান্য দুর্বলতা খুঁজে পেতে পুরস্কারের পরিমাণও দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে গবেষকেরা এআই নিরাপত্তা গবেষণায় আরও বেশি উৎসাহিত হন।
সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার