দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে নতুন বন্ধু খুঁজতে হবে
Published: 6th, March 2025 GMT
উদীয়মান ‘এশিয়ান টাইগার’ বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ যেমন সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতেও অনেক অবদান রাখছে। যেমন– যুক্তরাষ্ট্রে যে আটটি দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পড়তে যায়, বাংলাদেশ তার অন্যতম। প্রতিবছর পড়তে যাওয়া ১৪-১৫ হাজার শিক্ষার্থীর টিউশন ফি, জীবনযাত্রার ব্যয় থেকে যুক্তরাষ্ট্র মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অবকাঠামো উন্নয়নের ইট-বালুকণার সঙ্গেও বাংলাদেশিদের ঘাম-শ্রম জড়িয়ে আছে। বৃহৎ অর্থনীতিগুলোতে বড় অবদান রাখার পরও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের সম্মানজনক জায়গা তৈরি না হওয়ার বড় কারণ গত ৫০ বছরে আমরা স্বতন্ত্র পরিচয়, স্বতন্ত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। আমরা রাষ্ট্র পেয়েছি, তবে ‘নেশন বিল্ডিং’ হয়নি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সেই সুযোগ এনে দিয়েছে, যেখানে জাতীয় স্বার্থে সব রাজনৈতিক দল, ধর্ম, বর্ণের লোক একত্র হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ১০ কোটিই তরুণ, যাদের বয়স ৪০ বছরের নিচে। এই ১০ কোটি তরুণ আগামী দিনে রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই তরুণরা বাংলাদেশের স্বতন্ত্র পরিচয়ের ব্যাপারে একমত। ফলে আমরা যদি স্বতন্ত্র পরিচয় বিশ্বপরিমণ্ডলে প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারব।
এদিকে কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতেও নতুন মেরূকরণ হচ্ছে। আগে দক্ষিণ এশিয়ায় আমেরিকার ফোকাস ছিল– ‘ওয়ার অন টেরর’। সেখান থেকে সরে এসে তারা বর্তমানে ‘অ্যান্টি ইসলামোফোবিয়া ডে’ পালন করছে। ওয়ার অন টেররের রাজনীতি নতুন পর্যায়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলছে। আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকেও নতুন বন্ধু খুঁজতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে মুখে বলা হতো, ভারত আমাদের একমাত্র বন্ধুরাষ্ট্র। এর বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো রাষ্ট্রকে আমরা বন্ধু হিসেবে দেখাতে পারিনি; আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, মানবসম্পদ রপ্তানিসহ নানা বিষয়ে অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারেনি। শুধু ভারতনির্ভরতার কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক কিছুই একপক্ষীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হতো।
বাংলাদেশে যেমন সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার পতন হয়েছে, তেমনি প্রতিবেশী মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর পতনও প্রায় হয়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় সরকারের পতন হয়েছে; নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তানে নতুন সরকার এসেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় সব রাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের ফলে এ অঞ্চলে নতুন একটি সমীকরণ দাঁড়িয়েছে। এখানে বাংলাদেশ কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটা নির্ধারণ করবে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কতটা জনগণকেন্দ্রিক। আমরা যদি ভালো সম্পর্কের ভিত্তিতে সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটাতে পারি তাহলে আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পারবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। কিন্তু দেশটি বড় ভুল করেছে শেখ হাসিনাকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে। ফলে শেখ হাসিনার সঙ্গে সঙ্গে এখানে তাদেরও পরাজয় ঘটেছে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হলে তাদের স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে– বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জড়িত নয়। এটি তাদের সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ সমস্যা, স্থানীয়ভাবেই সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারতের সঙ্গে নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, মিয়ানমার ও চীনের সীমান্তও রয়েছে। কিন্তু কোনো সীমান্তে বেসামরিক নাগরিক হত্যাকাণ্ড না হলেও বাংলাদেশ সীমান্তে সেটা ঘটে। ভারতের অভিযোগ, তারা চোরাকারবারিদের প্রতি গুলি চালায়। কিন্তু পাকিস্তান বা নেপাল সীমান্তেও মাদক, চোরাকারবারি ঘটে; সেখানে তারা সরাসরি গুলি করে না। বিষয়টি নিয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজের দিক থেকে কাজ করতে হবে। ভারতকেও বুঝতে হবে, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির পরিবর্তন হচ্ছে।
অন্যদিকে আশঙ্কা রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা ইস্যুকেন্দ্রিক তহবিল বরাদ্দ কমিয়ে দেবে। ফলে আমাদের দক্ষতাভিত্তিক অর্থনীতির চিন্তা করতে হবে। আমরা যদি আমেরিকার বাজারে সস্তায় শ্রম, সুলভ মূল্যে পণ্য রপ্তানি করতে পারি তাহলে ট্রাম্পের মেয়াদেও ভালো সম্পর্ক সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আইসিটি ও রপ্তানিমুখী কৃষির মতো খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আগামী দিনে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের তৈরি শিল্প থেকে বিভিন্ন খাতে ব্যবসার সম্পর্কে যেতে হবে। আমরা যদি চীনের থেকে কম দামে পণ্য, ভারতের থেকে কম মজুরিতে আইটি ইঞ্জিনিয়ার দিতে পারি, তাহলে আমেরিকা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে বাধ্য হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের তরুণদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলে বিশ্বমণ্ডলে কর্মসংস্থানের উপযোগী প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করা জরুরি। বাংলাদেশের নাগরিক পরিশ্রমী ও বিশ্বস্ত হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছে। আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় গৌরবজনক ভূমিকা পালন করছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অনন্য বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে; এখন প্রয়োজন কেবল দক্ষতা বৃদ্ধি ও উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম।
বর্তমানে দেড়-দুই কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। কিন্তু আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কেবল বৈদেশিক সম্পর্কে সীমাবদ্ধ। এটাকে প্রবাসীদের জন্য সেবামূলক নীতিতে রূপান্তর ঘটাতে হবে। বিভিন্ন দেশে আমাদের মিশনগুলোর মূল কাজ হবে প্রবাসীদের উত্তম সেবা দেওয়া, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভাষা শিক্ষা, ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি, চিকিৎসা সহায়তা ও মৃত্যুর পর লাশ দেশে আনার বিষয়ে সাহায্য করা। মিশনগুলোতে তরুণ ও সক্রিয় লোকজনকে যুক্ত করাও জরুরি।
আমাদের মানবসম্পদ রপ্তানির খাতে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে হবে। নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশে সীমিত না রেখে সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। শুধু গার্মেন্টস বা চামড়ার ওপর নির্ভর না করে নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরির কথা ভাবতে হবে। আবার প্রবাসীরাও যাতে দেশে দ্রুত ও নির্বিঘ্নে বিনিয়োগ করতে পারে, সে জন্য বিদ্যমান আইন সহজ করতে হবে।
সর্বোপরি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য জরুরি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমার, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বেশি। এটাকে টেকসই করা গেলে বৈদেশিক বিনিয়োগ অনেক বাড়বে। আমাদের বৈশ্বিক অবস্থানও সুদৃঢ় হবে।
আকরাম হুসাইন: যুগ্ম সদস্য সচিব, জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি)
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত স বতন ত র র র জন ত র জন ত ক ত র পর আম দ র প রব স আম র ক ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই মাসের ব্যবধানে চীন ও জাপান সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চীন ও জাপান সফরে যাচ্ছেন। ২৬ মার্চ থেকে ২৯ মে তথা প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি সফর অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার চীন ও জাপান সফরের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। দেশ দুটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, মূলত দুই দেশেই দুটি পৃথক বহুপক্ষীয় ফোরামে অংশ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পরে চীন ও জাপান নিজেদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টাকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ২৬ থেকে ২৯ মার্চ চীন সফর করবেন। তিনি ২৬ মার্চ দুপুরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা অধ্যাপক ইউনূসের। সম্মেলন শেষে ২৮ মার্চ তিনি বেইজিংয়ে সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। ২৯ মার্চ তিনি দেশে ফিরবেন।
অন্যদিকে জাপানের টোকিওতে ২৯ ও ৩০ মে নিক্কেই ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
প্রসঙ্গত, বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ায় যোগ দিতে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান ২৫ দেশের এই জোটের মহাসচিব ঝ্যাং জুন। ওই সময় দুই দেশের সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিতে মার্চে প্রধান উপদেষ্টাকে বেইজিং সফরে নিতে চায় চীন। প্রধান উপদেষ্টাকে বেইজিং সফরে নিতে চীনের পক্ষ থেকে ভাড়া করা উড়োজাহাজ পাঠানোর বিষয়টিও বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করতে মনোযোগ দিচ্ছে চীন। বিশেষ করে দুই দেশের সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিতে সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার জন্য সহায়ক সময় হিসেবে দেশটি বিবেচনা করছে। এরই অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে উচ্চতর পর্যায়ে সফর আয়োজনের প্রস্তাব দেয় চীন। এরই ধারাবাহিকতায় গত জানুয়ারিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বেইজিং সফর করেন।
সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের শর্তচীন দুই দেশের মধ্যে উচ্চতর সফর বিনিময়ে আগ্রহী হলেও বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় পরিসরে আলোচনার বিষয়টিতে প্রাধান্য দিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে ৫ আগস্ট–পরবর্তী পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, ঢাকা–ওয়াশিংটন সম্পর্ক চীন কীভাবে দেখছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৌতূহল—এসব বিষয়কে বিবেচনায় রেখেছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে পুরোপুরি দ্বিপক্ষীয় পরিসরে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক না হলে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর নিয়ে বাংলাদেশ ততটা আগ্রহী ছিল না।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনকে বলা হয়েছিল, সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিশ্চিত হলে প্রধান উপদেষ্টার সফরটি হতে পারে। পরে চীনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
স্বাস্থ্য কূটনীতির পথ ধরে আকাশপথে যোগাযোগঢাকা–বেইজিং সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিকে সামনে রেখে দুই দেশ চিকিৎসা খাতে নিবিড় সহযোগিতায় মনোযোগ দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে গত জানুয়ারিতে বেইজিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে চীনের কুনমিংয়ের তিনটি শীর্ষস্থানীয় বিশেষায়িত হাসপাতালে বাংলাদেশের নাগরিকদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই তিন হাসপাতালের পাশাপাশি একটি ক্যানসার হাসপাতালকেও বাংলাদেশের রোগীদের জন্য নির্বাচিত করা হচ্ছে। কুনমিংয়ে চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশের রোগীদের প্রথম দল ১০ মার্চ চীন যাচ্ছে।
কুনমিংয়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি বাংলাদেশে প্রথম মৈত্রী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দুই দেশ কাজ করছে। এ ছাড়া ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশেষায়িত আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে সহায়তা দিতে যাচ্ছে চীন।
ইউনান প্রদেশে চিকিৎসাসেবার পথ সুগম করতে আকাশপথে চট্টগ্রাম ও কুনমিংয়ের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ও চীন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে কুনমিংয়ে সরাসরি উড়োজাহাজ চলাচল শুরু হবে। এর পাশাপাশি দুই দেশ চট্টগ্রাম ও সাংহাইয়ের মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগের বিষয়ে আলোচনা করছে।