Samakal:
2025-04-08@15:03:17 GMT

জাকাত আদায়ের ফজিলত

Published: 6th, March 2025 GMT

জাকাত আদায়ের ফজিলত

জাকাত ইসলামী জীবন বিধানের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম মৌলভিত্তি এবং অবশ্য পালনীয় আর্থিক ফরজ ইবাদত। ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হলো জাকাত। এটি আত্মার পরিশুদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যার সমাধান করে সমাজে সাম্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। জাকাত বছরের যে কোনো সময় আদায় করা যায়। তবে অনেকে অধিক সওয়াবের আশায় রমজানে জাকাত আদায় করে থাকেন।
‘জাকাত’ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি, প্রাচুর্য ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায়– আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শরিয়াতে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ কোরআনে বর্ণিত আট প্রকারের কোনো এক প্রকার লোক অথবা তাদের প্রত্যেকের মাঝে দান করে মালিক বানিয়ে দেওয়াকে ‘জাকাত’ বলা হয়।
কোরআন মাজিদ ও হাদিসে নববিতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জাকাতের বিধান ও প্রাসঙ্গিকতার বর্ণনা এসেছে। জাকাত শব্দটি কোরআনে ৩২ বার, সালাতের সূত্রে ২৬ বার, স্বতন্ত্রভাবে ৪ বার, ‘পবিত্র’ অর্থে ২ বার এবং ১৯টি সুরায় আলোচনা এসেছে।

জাকাত ও সাদাকাত মহান প্রভুর নৈকট্য লাভের সুস্পষ্ট উপায় উল্লেখ করে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে–
‘তাদের সম্পদ থেকে সাদাকা তথা জাকাত গ্রহণ করুন। এর দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন।’ (সুরা তাওবা: ১০৩)
ইসলামের অপরাপর ফরজ বিধানের মতো জাকাতও একটি ফরজ বিধান। কোরআনে বর্ণিত  আছে– ‘তোমরা সালাত কায়েম করো ও জাকাত প্রদান করো, আর রুকুকারিদের সঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা আল বাকারা: ৪৩) 

জাকাত ইসলামের পাঁচটি রুকনের অন্যতম। রাসুল (স) ইরশাদ করেন– ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ (স) আল্লাহর রাসুল। সালাত কায়েম করা, জাকাত দেওয়া, হজ করা এবং রামাদানের সাওম পালন করা।’ 
জাকাত কাদের ওপর ফরজ? চাঁদের হিসাবে বছর পূর্ণ হওয়ার সাপেক্ষে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক সব মুসলিম, স্বাধীন, জ্ঞানসম্পন্ন, বালেগ নরনারীর ওপর জাকাত ফরজ। চার প্রকার সম্পদে জাকাত দেওয়া ফরজ– 
প্রথম প্রকার (সোনা-রুপা ও নগদ দেশি-বিদেশি মুদ্রা): এ জাতীয় সম্পদ যখন নিসাব পরিমাণে পৌঁছে তখন এগুলোর জাকাত দেওয়া ফরজ। (সুরা তাওবা ৩৪ নম্বর আয়াতের মর্ম)
এ ছাড়া লাভের উদ্দেশ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য রাখা সব প্রকার মালপত্রই বাণিজ্যিক পণ্য। এসব পণ্যের মূল্য যখন নিসাব তথা স্বর্ণ কিংবা রূপার নিসাব পরিমাণে পৌঁছে তখন উহার জাকাত দেওয়া ফরজ। (হেদায়া: ৮১)

উৎপাদিত ফসলেরও জাকাত আছে। ধান, গম, ভুট্টা, যব, খেজুর, কিশমিশ ইত্যাদি ফসল যখন নিসাব পরিমাণে পৌঁছে তখন এসব শস্যাদির জাকাত দেওয়া ফরজ। (সুরা আনআম : ১৪১ নম্বর আয়াতের মর্ম)
এর বাইরে গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া, উট ও এ জাতীয় প্রাণী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে পৌঁছলে এটাকে বলা হয় নিসাব পরিমাণ সংখ্যা। নিসাব পরিমাণ সংখ্যায় উপনীত হলে এ জাতীয় পশুতে জাকাত দেওয়া ফরজ। (সহিহ বুখারি: ১৪৬০, মুসলিম: ৯৯০)

পবিত্র কোরআনে আট প্রকারের লোক জাকাতের অর্থ পাওয়ার হকদার বলে ইরশাদ হয়েছে– ‘নিশ্চয় তোমরা জাকাত দেবে– (১) ফকির, (২) মিসকিন, (৩) এ কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের (৪) ইসলাম গ্রহণ করতে পারে সম্ভাব্য এমন অমুসলিমদের তাদের অন্তর আকৃষ্ট করার জন্য, (৫) দাসমুক্তির নিমিত্তে (৬) ঋণগ্রস্ত লোকদের, (৭) আল্লাহর রাহে জিহাদে এবং (৮) অভাবী পথচারী মুসাফিরদের। এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা তাওবা : ৬০)
রমজানে জাকাত আদায়ের মাধ্যমে অধিক নেকি অর্জন সম্ভব। তবে যাদের ওপর জাকাত ফরজ, তারা যেন সঠিকভাবে জাকাত আদায় করি। 

মুহাম্মদ ফয়েজুল্লাহ: অধ্যক্ষ, বসুরহাট ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন স ব পর ম ণ পর ম ণ স ইসল ম র আল ল হ ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি বই বোঝাই পিকআপ আটক করল শিক্ষার্থীরা

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি বই বোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার রাঢ়ীখাল গ্রামের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ ফটকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আটক করা ওই বইগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফেরত নেওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেহানা নাসরিন জানান, দু’দিন পরই এসএসসি পরীক্ষা। তাই কক্ষ পরিষ্কার করার জন্য ভেতরে থাকা পুরাতন বই বাইরে আনা হয়। এরপর ওই বই কে বা কারা পিকআপ ভ্যানে বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছিল তা তিনি জানেন না। এ সময় শিক্ষার্থীরা বই বোঝাই পিকআপ ভ্যান আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে। পরে বইগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর রাখা হয়। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে দু’জন শিক্ষক জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে শতভাগ নিশ্চিত না হওয়ায় ও তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার প্রদ্বীপ পাল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে তিনি জানতে পেরেছেন বইগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে পিকআপ ভ্যানে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ ব্যাপারে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ