Samakal:
2025-03-06@21:34:40 GMT

পাঁচ ফর্মার বইটি

Published: 6th, March 2025 GMT

পাঁচ ফর্মার বইটি

আমাদের সময়ের আড্ডা-তর্ক   ছিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগকেন্দ্রিক। সেসব ছিল নিখাদ মেধাবী আড্ডা ও সৃষ্টিশীল তর্ক। জ্ঞান ও পাঠাভিজ্ঞতা বিনিময় ছাড়াও নির্মল আনন্দের সেইসব আড্ডায় থাকতেন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, কামাল চৌধুরী, মঈনুল আহসান সাবের, জাফর ওয়াজেদ, খায়রুল আনোয়ার, তুষার দাশ, আলী রীয়াজ, সুব্রত শংকর ধর, গোলাম ফারুক খান, রেজা সেলিম, আফতাব আহমেদ ও আরও অনেকেই। প্রথম যৌবনের সময়জ্ঞানরহিত আড্ডার সেইসব সঙ্গীর মধ্যে এখন তুষার দাশ, সিদ্ধার্থ হক, ফরিদ কবির, মঈনুল আহসান সাবের, ইশতিয়াক রেজার সঙ্গে এখনও আড্ডা হয়। বাকিদের সঙ্গে অনিয়মিত। দেখা হয় কালেভদ্রে।    
আমার প্রথম বই– গল্পগ্রন্থ বৈরী স্রোত, প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ১৯৯০। 
১৯৮৮ সালে সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের এক পর্যায়ে তিনি জানতে চান আমার কোনো গল্পগ্রন্থ আছে কিনা। কোনো বই নেই জানার পর তাঁর একটি কথা আমার ভেতরে গভীরভাবে দাগ কেটে যায়। তিনি বলেন, একটি বই থাকলে বোঝা যায় লেখক ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন। বিচ্ছিন্নভাবে পত্রপত্রিকায় ছাপা লেখা দিয়ে সেটি পরিমাপ করা যায় না। নিজেকে পরিমাপ করার জন্যই একটি গ্রন্থ থাকা দরকার।
আমার বন্ধু ফয়জুল লতিফ চৌধুরী আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে ‘অধুনা’ নামে একটা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছিলেন। আমার একটা গল্পগ্রন্থ প্রকাশের আগ্রহ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ উপলক্ষে ছুটি নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকা আসি আমি। প্রুফ দেখার কাজটি অত্যন্ত আনাড়ির মতো করেছিলাম বলে অনেক ভুল রয়ে গিয়েছিল। ততদিনে অধুনার জায়গায় এসেছে দেশ প্রকাশন। 
দেশ প্রকাশনের অফিস ছিল জোনাকী সিনেমা হলের উল্টো দিকে নয়াপল্টনের গলিতে ‘রূপ’ বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের অফিসে। রূপ-এর কর্ণধার ইউসুফ হাসান সানন্দে দেশ প্রকাশনের জন্য তাঁর অফিসটি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। দেশ প্রকাশনের যাবতীয় কাজে স্বেচ্ছাভূমিকায় জড়িত ছিলেন ইউসুফ হাসান, কবি তারিক সুজাত, কাফি এবং তুহিন। শেষোক্ত দুজনই অকালপ্রয়াত। 
মোট দশটি গল্প নিয়ে পাঁচ ফর্মার বইটি প্রথম হাতে নিয়ে যে অনুভূতি হয়েছিল সেটি এই মুহূর্তে স্মৃতিতে নেই। মনে পড়ে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বইটি দেখি। বইটির প্রোডাকশনে যে খামতিগুলো ছিল সেসব আমার দৃষ্টিতে ধরা পড়েনি। পরবর্তী সময়ে বের হওয়া বইগুলো দেখার পর ধীরে ধীরে সেসব খামতি বুঝতে পারি। ফন্ট ছিল খুব ছোট, সম্ভবত ৮ বা ১০ পয়েন্ট। ছোট হরফ এবং কাগজের মানের কারণে পাঁচ ফর্মার বইটিকে দেখায় তিন ফর্মার মতো। 
দ্বিতীয়ত, নিজের অজ্ঞতার কারণে অসংখ্য ভুল বানান এবং ছাপার ভুল ছিল বইটি জুড়ে। আসলে আমার যেমন প্রথম বই, তেমনি সেটা প্রকাশের সঙ্গে কারিগরিভাবে যারা জড়িত ছিলেন, তাদেরও হাতেখড়ি হচ্ছিল প্রকাশনা জগতে। বইটির একটিমাত্র কপি এখনও শেলফের একপাশে ক্ষীণস্বাস্থ্যের অবহেলিত সন্তানের মতো পড়ে থাকে, তবুও লেখকের কাছে প্রথম গ্রন্থ একটা মাইলফলক হিসেবেই রয়ে যায়, কারণ, এটি দিয়ে তৈরি হয় তার দাঁড়ানোর প্রথম ভিত। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই ফর ম র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশ্নের জন্ম দিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বললেন স্মিথ

ভারতের বিপক্ষে মঙ্গলবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালে যখন ব্যাটিং করছিলেন স্টিভেন স্মিথ, তখন মনে হচ্ছিল ‘স্লো ও লো’ উইকেটে বিপদে পড়া দলের কিভাবে খেলতে হয় তার একটা ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। অথচ পরের দিনই কিনা একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। অবাক করা বিষয় হচ্ছে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অব্যাহত রাখবেন তিনি। যা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আর চালিয়ে যাবেন টেস্ট ক্রিকেটও।

স্মিথ সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর তৎক্ষনিকভাবেই তার সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তার শেষ ওডিআই ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। অর্থাৎ ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার দলের অংশ হতে চাচ্ছেন না তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অজিদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে স্মিথই অধিনায়ক্ত্ব করেছিলেন।

ওয়ানডেতে দুটি বিশ্বকাপ জেতেছেন স্মিথ। ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে এবং ভারতে অনুষ্ঠিত সবশেষ ২০২৩ সালে। তাছাড়া অয়ানডে ক্যারিয়ারে অনেক সুখস্মৃতি আছে বলেও উল্লেকজ করেন তিনি। স্মিথ বিদায়ী বার্তায় বলেন তিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ার দারুণ উপভোগ করেছেন, “এটি একটি চমৎকার যাত্রা ছিল এবং আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। অনেক দারুণ সময় এবং অসাধারণ স্মৃতি রয়েছে। দুটি বিশ্বকাপ জেতা ছিল একটি বড় মাইলফলক। পাশাপাশি অনেক দুর্দান্ত সতীর্থরা যারা এই যাত্রা ভাগ করেছেন।”

আরো পড়ুন:

টেস্টে স্মিথের ক্যাচের ডাবল সেঞ্চুরি

‘দশ হাজারি’ ক্লাবে স্টিভেন স্মিথ

অধিনায়ক কামিন্স এবং নির্বাচকদের ২০২৭ সালের দল গঠনের চাপ আছে। তাদেরকে সেই সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে এই অবসরের একটা কারণ আচক্সহে বলে উল্লেখ করেছেন স্মিথ। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে সাদা বলের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে যাচ্ছেন না কেন? এর কারণ সম্ভবত সারা বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে নিজের বাজারদ র উপরের দিকেই রাখাটা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

স্মিথ বলেন, “এখন ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি ভালো সুযোগ এসেছে দলের। তাই এটা অনুভব হচ্ছে যে সরে যাওয়ার সঠিক সময় এটি।”

যদিও টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নিজের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বলে বিশ্বাস করেন স্মিথ, “টেস্ট ক্রিকেট এখনও আমার অগ্রাধিকার এবং আমি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, শীতকালীন ক্যারিবিয়ান সফর এবং ঘরের মাটীয়তে অ্যাশেজ সিরিজ নিয়ে সত্যিই উত্তেজিত। আমি মনে করি আমি এখনও ওই পর্যায়ে অনেক কিছু অবদান রাখতে পারব।”

স্মিথের ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল ২০১০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর ১৭০ ওয়ানডেতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেন। যেখানে ৪৩.২৮ গড়ে ও ৮৬.৯৬ স্ট্রাইকরেটে ৫৮০০ রান করেছেন তিনি। ১২টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি পেয়েছেন ৩৫টি হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়াও পার্ট টাইম বোলিং করে তুলেছেন ২৮টি উইকেট।

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়াম ভবনে বিস্ফোরণ এখনও রহস্যে ঘেরা
  • তিন দফা সময় পেলেও জমা দিয়েছেন অর্ধেক
  • প্রশ্নের জন্ম দিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বললেন স্মিথ
  • ওয়ানডে থেকে অবসরে স্টিভ স্মিথ
  • বেতনের ৪৮ লাখ টাকা এখনও পাননি সাকিব