lশৈশবের প্রিয় মুহূর্ত 
আমাদের বাড়ির দালান-ঘরের ছিল টানা বারান্দা। সন্ধ্যার পর সেই টানা বারান্দায় দাদী, মা-চাচীরা শীতলপাটি বা পিঁড়ি পেতে বসতেন। আমি বসতাম এদের কারো কোলে। রূপকথা শোনার সময়গুলো ছিল অতি প্রিয়।
lযখন আপনি নবীন লেখক
লিখতাম। তবে প্রকাশের ব্যাপারে ছিল ভয়, দ্বিধা, সংকোচ। কালেভদ্রে কোথাও কোনো লেখা ছাপা হলে কাউকে জানাতাম না।
লেখক হওয়া তো অনেক বড় বিষয়। আমি সেই চেষ্টা করছি; ভেবে খুব লজ্জা পেতাম।
lআড্ডা-তর্কের সঙ্গী যাঁরা
কৈশোর, যৌবনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে আড্ডার সঙ্গী ছিল সহপাঠীরা। সমবয়সী প্রতিবেশী, চাচাতো-জেঠাতো ভাইদের কেউ কেউ, এদের সঙ্গে শুধু আড্ডাই নয়, ঝগড়াঝাটি হতো, আপস হতো।
ঢাকার জীবনে আড্ডার অনেক সঙ্গী পেয়ছি। শাহদাত বুলবুল, আবিদ আজাদ, শিহাব সরকার, মাশুক চৌধুরী এরা ছিল আড্ডার বিশেষ সঙ্গী। পরবর্তীকালে আড্ডা হতো রফিক আজাদ, সিকদার আমিনুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ, অরুণাভ সরকার— এদের সঙ্গে।
বন্ধুদের কেউ কেউ ছিলেন, আড্ডার জন্যই যেন তারা বেঁচে আছেন। একটি আড্ডাাকে এরা পৌঁছে দিতেন অন্য একটি তুমুল আড্ডায়। সকালের আড্ডাকে নিয়ে গেছেন দুপুরআড্ডায়, বিকেলআড্ডায়, সন্ধ্যাআড্ডায়, (গভীর) রাত্রিআড্ডায়। এরা যেন আড্ডার জন্যই বেঁচে ছিলেন, মরে গেছেন আড্ডার পথে হাঁটতে হাঁটতে। নাওয়া-খাওয়া নেই, ঘুম-বিশ্রাম নেই; আড্ডার স্রোতে ভেসে চলছেন, ঝড়েপড়া নৌকোর মতো ডুবেও গেছেন। গোলাম সাবদার সিদ্দিকী, নাসিরুল ইসমান বাচ্চু, মাসুদ আহমেদ মাসুদ— কি আশ্চর্য আগুনযুবক! পুড়ে পুড়ে নিঃশব্দে থামিয়ে দিয়েছেন জীবনের মায়াবী যাত্রা।
lপ্রথম প্রকাশিত বই ঘিরে স্মৃতি
আমার প্রথম কাব্য ‘পাথরের ফুল’ বেরোয় ১৯৮৮ সালে। লাইনো টাইপে, কাজী হাসান হাবিবের চমৎকার প্রচ্ছদে। অনেকেই আগ্রহ দেখালেন। কিন্ত ওই বছরের বন্যায় প্রেস, বাঁধাইখানা তলিয়ে যাওয়ায় আমার বইয়ের অধিকাংশ কপি ভেসে গেল। পরে বইটি আবার ছাপা হয়েছিল। এখনকার মতো পাকা বুদ্ধি থাকলে, দ্বিতীয়বার ছাপা হওয়া বইটিকে ‘দ্বিতীয় সংস্করণ’ চালিয়ে দিতে পারতাম।
lপ্রিয় লেখক যাঁরা এবং যে কারণে তাঁরা প্রিয় 
এ প্রশ্নের জবাব দেওয়া কঠিন। প্রিয় লেখকের তালিকাটি দীর্ঘ। অনেক লেখকের প্রতি ভালোবাসা রেখে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার চিরপ্রিয় লেখক। কারণ বলতে পারব না। তবে তাঁর দিকে হাত বাড়ালে খালি মনে ফিরতে হয় না।
lএখন যা লিখছি, পড়ছি
সকালে রবীন্দ্রনাথ এবং রাতে জীবনানন্দ দাশ পাঠ আমার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। একটা সময় ছিল গান শোনার প্রধান মাধ্যম ছিল ক্যাসেট প্লেয়ার। ক্যাসেটের সংগ্রহ যার বেশি, সে ইচ্ছে মতো গান শুনতে পারে। তখন আমি রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’ হাতের কাছে রাখতাম। সকালে গান পড়তাম। সে অভ্যেস এখনো আছে। তবে এখন ‘ইউটিউব’ সক্রিয় করে রবীন্দ্রনাথের গান শুনি। রাতে, জীবনানন্দ আছেন আগের মতোই।
শীত, গ্রীষ্ম, বর্যা নেই— প্রায় প্রতিদিন আমি বুদ্ধদেব বসু অনূদিত কালিদাসের ‘মেঘদূত’ পাঠ করি। 
এখন পড়ছি মৈত্রেয়ী দেবীর ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’। গত বছর একটি ঈদসংখ্যায় মহাকবি কালিদাসকে নিয়ে উপন্যাস লিখেছিলাম। এবার বইমেলায় বই হয়ে বেরিয়েছে। অনেক দিন থেকে মাথায় ঘুরছে, সংস্কৃত ভাষার অন্যতম প্রধান নাট্যকার ও কবি বানভট্টকে নিয়ে উপন্যাস লেখা যেতে পারে। সেই সুবাদ এখন বানভট্টের আত্মজীবনী পড়ছি। নাড়াচাড়া করছি বানভট্টবিষয়ক দুটি বই। এলোমেলো নানা পাঠ তো আছেই।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
‘চোখের জলের দাগ মুছে দিতে চাই
           অন্য কারো চক্ষুঝরা জল’

lগ্রন্থনা : ফরিদুল ইসলাম নির্জন
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তৃতীয় পক্ষের অ্যাপে মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং

বিকাশের মতো তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মে উচ্চ মূল্যে মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। ‘মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং: এ কল ফর রেগুলেটরি অডিট অ্যান্ড কনজিউমার প্রোটেকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোবাইল অপারেটর অ্যাপে তালিকাভুক্ত দাম এবং বাহ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে চার্জ করা মূল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এ তথ্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাকেজগুলো অনুমোদিত মূল্যের চেয়ে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি হারে বিক্রি হয়েছিল। মোবাইল অপারেটরের নিজস্ব অ্যাপে ৩০ দিনের ৪৫ জিবি ডেটা প্যাকের দাম ছিল ৪৯৭ টাকা, কিন্তু একই প্যাকটি বিকাশের মাধ্যমে ৫৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি।

১৯৮ টাকায় তালিকাভুক্ত একটি ৭ দিনের ২৫ জিবি প্যাক বিকাশের মাধ্যমে একই দামে ২০ জিবি প্যাক হিসাবে বিক্রি হয়েছিল, যা ৮০ শতাংশ ওভারচার্জ।

২২৭ টাকা মূল্যের একটি সাত দিনের ৪০ জিবি প্যাক বিকাশে একই মূল্যের জন্য ৩৫ জিবি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিত্তি মূল্যের তুলনায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি।

৭  দিনের ১০ জিবি এবং ৩-দিনের ৫ জিবি বিকল্পগুলোসহ অন্যান্য প্যাকেজগুলোও ৫৫ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জে বিক্রি হয়েছে।
ফয়েজ আহমেদ লেখেন, বিটিআরসিতে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের অধীনে একটি সুষ্পষ্ট প্রাইসিং রেগুলেশন রয়েছে। তার তোয়াক্কা না করে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাক্কলন অতিরিক্ত মূল্য আদায় গ্রাহকস্বার্থ ও রাষ্ট্রের সার্বিক স্বার্থবিরোধী বলেই বিবেচিত হওয়া উচিত। বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের রেগুলেটরি শাস্তির মুখোমুখি করা দরকার বলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ