অনেক লম্বা পথ। সে হেঁটে চলেছে। তার প্রতি পদক্ষেপের পেছনে ছোট ছোট ধূলিকণা বুনো আক্রোশের মতো ঘুরতে ঘুরতে উড়ে আবার মাটিতে পড়ে যাচ্ছে।
সে তালে তালে দ্রুত পা ফেলতে লাগল। তার বাম হাত খোলা; জীর্ণ-শীর্ণ সাদা কোটের পাশে দুলছে। ডান হাত কনুই থেকে বাঁকিয়ে একটু ঝুঁকে থাকা পিঠের ওপর ছোট যে থলে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা, সেটা ধরে আছে। সুতার কাপড়ের থলেটায় আঁকা লাল গোলাপ ফুলের ছবি এখন বিবর্ণ। থলেটা তার পায়ের তালে তালে এপাশ থেকে ওপাশে দুলছে। থলেটি তার বন্দিশিবিরে কাটানো কষ্ট আর পরিশ্রমের দিনগুলির প্রতিমূর্তি। মাঝে মাঝে সে পাটে বসা সূর্যের দিকে তাকাচ্ছে। আবার ফাঁকে ফাঁকে সে গাছের বেড়া দেওয়া জমির দিকে দেখছে, সেখানে মৃতপ্রায় ফসলের, ভুট্টা, শিম আর মটরশুঁটির ক্ষেত। সবকিছু তার কাছে কেমন যেন বিপন্ন লাগছে। কামাউয়ের কাছে এটা নতুন কিছু না। তার মনে আছে, মাউমাউদের আগমনের আগেও বসতি এলাকার বিস্তৃত সবুজ মাঠের তুলনায় গিকুয়াদের জমিগুলো এ রকম শুষ্ক আর বিবর্ণই দেখাত।
বাম দিকে একটা পথ মোড় নিয়েছে। সে একটু ইতস্তত বোধ করলেও আবার মনকে প্রবোধ দিল। এই প্রথমবারের মতো তার চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। কারণ, এই পথ ধরেই গেলে সামনে উপত্যকা; তারপর তার গ্রাম। বাড়ির কাছাকাছি চলে আসার এই অনুভূতিতে ক্লান্ত পথিকটিকে দূরে তাকিয়ে কোথায় যেন কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে গেল। সবুজে ঘেরা উপত্যকাটি আশপাশের এলাকা থেকে একদম আলাদা। এখানে সবুজ ঝোপ, গুল্ম-লতা বেড়ে উঠেছে। এর মানে হনিয়া নদী এখনও বয়ে চলে।
সে আরও দ্রুত পা ফেলতে লাগল; যেন সে হনিয়া নদী নিজ চোখে না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাসই করতে পারছে না। হ্যাঁ, হনিয়া আছে। হনিয়া এখনও প্রবাহিত হয়। এই সেই হনিয়া, যার ঠান্ডা সজীব পানিতে সে প্রায়ই নাক ডুবিয়ে গোসল করত। পাথর ছুঁয়ে ছুঁয়ে হনিয়ার সর্পিল গতিতে বয়ে চলা, এর কলতান তার হৃদয়ে একটা উষ্ণ দোলা দিয়ে গেল। একটা বেদনাবিধুর উচ্ছ্বাস বয়ে গেল তার মাঝে। ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে এলো। অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস.
কিছু মহিলা নদীতে জল তুলছিল। সে একটু উত্তেজিত হয়ে গেল। কারণ, তাদের মধ্যে তার এলাকার দু’একজনকে সে চিনতে পেরেছে। যার মধ্যে মধ্যবয়সী ওয়াংজিকুও ছিল। যার বধির ছেলেটা তার গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গিয়েছিল। এই গ্রামের সবার সাথেই মহিলাটির সখ্য। সবার বিপদে-আপদে সে হাসিমুখে এগিয়ে আসে। আচ্ছা, তারা কি তাকে কাছে টেনে নেবে? তারা কি তাকে একজন বীরের সম্ভাষণ জানাবে? সে সেরকমই ভাবছে। সে কি তার এলাকাজুড়ে সবার প্রিয় ছিল না? সে কি এই ভূখণ্ডকে মুক্ত করতে লড়েনি? সে দৌড়ে গিয়ে চিৎকার করে বলতে চাইল, ‘এই যে আমি! আমি ফিরে এসেছি!’ কিন্তু সে নিবৃত্ত হলো, কারণ সে একজন পুরুষ।
তাদের কয়েকজন জিজ্ঞাসা করল, ‘তুমি ভালো আছো?’ আর বাকি সব ক্লান্ত, জীর্ণবেশের মহিলারা তার দিকে নীরবে চেয়ে রইল যেন তাকে স্বাগত জানানোর কোনো মানে নেই। কিন্তু কেন? সে কি এতদিন বন্দিশিবিরে থাকেনি? তার সব স্পৃহা উবে গেল। সে ফিসফিস করে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমরা আমাকে চিনতে পারোনি?’ তারা আবার তার দিকে তাকাল, একটা নীরব ঠান্ডা রুক্ষ দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে থাকল, যেন তারা ইচ্ছে করেই তাকে চিনতে পারছে না। অবশেষে ওয়াংজিকু তাকে চিনতে পারল। কিন্তু তার কণ্ঠে না আছে কোনো উত্তেজনা না আছে কোনো আগ্রহ। শুধু বলল, ‘ওহ, কামাউ তুমি! আমরা ভেবেছিলাম তুমি–!’ সে চুপ করে গেল। কামাউ তাদের মাঝে কিছু একটা টের পেল– বিস্ময় নাকি ভয়? সে জানে না। কিন্তু তাদের তাকানো দেখে সে এটা বুঝল যে, তার অজ্ঞাত কোনো গোপন বিষয় তাদের আড়ষ্ট করে ফেলেছে।
আমি হয়তো আর তাদের কেউ না; তার কাছে মনে হলো। যাই হোক তারা তাকে নতুন গাঁয়ের সন্ধান দিল। পাতলা করে ছড়িয়ে থাকা বিক্ষিপ্ত কুঁড়েঘরের সেই পুরোনো গাঁ আর নেই।
তিক্ততা আর প্রতারিত হওয়ার অনুভূতি নিয়ে সে প্রস্থান করল। পুরোনো গ্রামটাও তার জন্য অপেক্ষা করেনি! হঠাৎ করে, সে তার পুরোনো বাড়ি, বন্ধুবান্ধব, সবকিছুর জন্য কেমন যেন কাতর হয়ে পড়ল।
তার বাবার কথা মনে পড়ল, মায়ের কথা এবং– এবং – না, সে তার সম্পর্কে ভাবতে সাহস করছে না। তবু সবকিছু ছাপিয়ে তার মনে পড়ল মুথোনির কথা। মুথোনি কেমন ছিল সেই দিনগুলিতে, সেই কথা। তার হৃৎস্পন্দন দ্রুততর হলো। সে একটা অবদমিত ইচ্ছা অনুভব করল, সঙ্গে শিহরণ! আরও দ্রুত হাঁটতে লাগল। স্ত্রীর কথা মনে পড়ায় নদীর ঘাটের সেই মহিলাদের সে ভুলে গেল। সে আর মুথোনি মাত্র দুই সপ্তাহ একসাথে থাকতে পেরেছিল। তারপর উপনিবেশের দাপট তাদের আলাদা করে দিল। অন্যদের মতোই তাকেও খুব শিগগিরই কোনো বিচার ছাড়া বন্দিশিবিরে রুদ্ধ করে রাখা হলো। বন্দি দিনগুলিতে সে শুধু তার গাঁ আর মুথোনির কথাই ভাবত সে সময়।
অন্যরাও ঠিক তার মতো ছিল। তারা নিজেদের মধ্যে ফেলে আসা বাড়ি, গ্রাম নিয়ে আলোচনা করত। একদিন সে মুরাঙ্গার এক বন্দির সাথে কাজ করছিল। তার নাম নউগে। হঠাৎ নউগে পাথর ভাঙা থামিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তারপর রিক্ত-বিদীর্ণ চোখে উদাস দূরে তাকিয়ে।
–‘কী হয়েছে, ভাই? কোনো সমস্যা?’ কামাউ জিজ্ঞাসা করল।
–‘একটা বাচ্চাসহ আমার স্ত্রীকে রেখে এসেছি। জানি না তারা কেমন আছে।’
আরেকজন বন্দি অনুনয়ের সুরে বলল, ‘আমিও আমার বাচ্চাসহ স্ত্রীকে রেখে এসেছি। সেদিনই আমার আদরের সন্তানটির জন্ম হয়। আমরা খুব আনন্দ করছিলাম। কিন্তু সেই দিনই আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় ...।’
এভাবে তারা কথা বলতেই থাকত। সবাই সেই দিনটির কামনা করত, যেদিন তারা বাড়ি ফিরবে। তারপর আবার নতুন করে জীবন শুরু হবে।
কামাউ নিজেও তার স্ত্রীকে রেখে এসেছিল। যদিও তাদের কোনো সন্তান ছিল না। সে তখনও মোহরানার সবটা শোধ করতে পারেনি। কিন্তু এখন সে নাইরোবিতে যাবে তার পর বাকিটা মুথোনির বাবাকে পারশোধ করে দেবে। সে এক নতুন জীবন শুরু করবে। তাদের কোলে একটা ফুটফুটে ছেলে আসবে, তারা তাকে নিজের বাড়িতে বড় করে তুলবে। এ রকম চোখে হাজারো স্বপ্নের ফুলঝুরি নিয়ে সে হাঁটতে লাগল। সে দৌড়াতে চাইল– না, সে উড়ে যেতে চাইল, যদি পারত। সে পাহাড়ের চূড়ার কাছাকাছি চলে এসেছে। তার হঠাৎ মনে হলো, যদি তার ভাই বা বোনের সাথে দেখা হয়ে যায়! তারা কি তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করবে? কিন্তু যা কিছুই হোক, সে কখনোই তাদের বলবে না, সেই প্রহারের কথা, সেই বন্দিজীবনের কথা, সেই আসকারির কথা যার প্রহরায় সে রাস্তায়, খনিতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করত, আর একটু অবসর নিতে গেলেই, সে মারতে উদ্যত হতো। সে অনেক অপমান সয়েছে, কিন্তু কখনও প্রতিবাদ করেনি। প্রতিবাদের কি দরকার ছিল? কিন্তু তার মন, পৌরুষত্বের সমস্ত শক্তি বিদ্রোহ করত, রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ত।
একদিন এই সাদা মানুষেরা চলে যাবে।
একদিন তার মানুষেরা মুক্ত হবে! তারপর, তার পর– জানে না সে কী করবে। কিন্তু সে আশ্বস্ত হয়ে উঠল যে কেউ আর কখনও তার পুরুষত্বকে লুটিয়ে দিতে পারবে না। সে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে থামল। নিচে সমতল ভূমি আর তার সম্মুখে নতুন গাঁ। সারি সারি নিবিড় মাটির কুঁড়েঘর অস্তায়মান সূর্যের নিচে চুপ করে আছে। বেশ কিছু ঘর হতে কালো-নীল ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠতে উঠতে পুরো গাঁটাকে রহস্যময় আধারের রঙে ঢেকে ফেলেছে। আর তার ওপরে গাঢ় রক্তিম ডুবমান সূর্যটা আঙুলের মতো চিকন যে আলোকচ্ছটা ছড়াচ্ছে তা ধূসর কুয়াশার সাথে মিশে দূরের পাহাড়গুলো আবৃত করে রেখেছে।
গ্রামের রাস্তায় অনেক নতুন মুখের দেখা পেল। তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে সে তার বাড়ি খুঁজে পেল। সে বাড়িতে না ঢুকে উঠোনের প্রবেশমুখে থামল এবং জোরে দীর্ঘ একটা শ্বাস নিল। এটা তার বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের মুহূর্ত। তার বাবা একটা তিন পায়া টুলের ওপর বসে আছে। তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। বৃদ্ধ মানুষটির ওপর কামাউয়ের দয়া হলো। যাই হোক, তিনি বেঁচে আছেন,– হ্যাঁ- তার ছেলের ফিরে আসা দেখার মতো সুযোগ তার হয়েছে।
– ‘বাবা!’
বৃদ্ধ লোকটি কোনো জবাব দিল না। শুধু অদ্ভুত এক শূন্য দৃষ্টিতে কামাউয়ের দিকে চেয়ে থাকল। কামাউ অধৈর্য হয়ে উঠল, একটু বিরক্তও হলো। তিনি কি তাকে চিনতে পারেননি? তিনিও কি নদীর পারে দেখা হওয়া মহিলাদের মতো আচরণ করবেন?
রাস্তায় ছেলেমেয়েরা খেলছিল। একজন আরেকজনকে ধুলো ছুড়ছিল। সূর্যটা এতক্ষণে ডুবে গিয়েছে এবং মনে হচ্ছে চারদিকে যেন জ্যোৎস্নার আলোয় ভরে গিয়েছে।
–‘বাবা, তুমি আমাকে চিনতে পারোনি?’
সে আশাহত হলো। ক্লান্তি অনুভব করল। তারপর সে দেখল তার বাবা হঠাৎ পাতার মতো কাঁপতে শুরু করছে। তার দিকে অবিশ্বাস্য দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। চোখে স্পষ্ট ভয়। তার মা এলো, তার ভাইয়েরাও। সবাই চারপাশে জড়ো হলো। বৃদ্ধ মা তাকে জড়িয়ে ধরে ফোঁপাতে লাগল।
–“আমি জানতাম, আমার ছেলে আসবে। আমি জানতাম সে মরেনি।”
–“তোমাকে কে বলেছে আমি মারা গেছি?”
–“কারানজা, নগুউর ছেলে।”
কামাউ সব বুঝতে পারল। কেন তার পিতা কাঁপছে, নদীর ঘাটের মহিলারা কেন ওরকম আচরণ করেছে। কিন্তু একটা বিষয় সে বিস্মিত না হয়ে পারল না, কারানজা আর সে তো কখনোই এক বন্দিশিবিরে ছিল না। সে যেভাবে হোক ফিরে এসেছিল।
সে মুথোনিকে দেখতে চাইল। সে এখনও বের হয়ে আসেনি কেন? সে চিৎকার করে বলতে চাইল, ‘আমি এসেছি, মুথোনি, এই যে আমি।’ সে চারদিকে তাকাল। তার মা বুঝতে পেরে তার দিকে চোখ রেখে স্বাভাবিকভাবে বলল,–‘মুথোনি চলে গেছে।’
কামাউ অনুভব করলো ঠান্ডা কিছু একটা যেন তার পাকস্থলীতে জেঁকে বসেছে। সে গাঁয়ের কুঁড়েঘরগুলোর দিকে, শুষ্ক জমির দিকে তাকাল। সে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাইল। কিন্তু সাহস করল না। তার এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না মুথোনি চলে গেছে। কিন্তু সেই নদীর ঘাটের মহিলাদের, তার বাবা-মায়ের চোখ বলছে মুথোনি চলে গেছে।
তার মা বিবৃতির সুরে বলল, ‘সে আমাদের একটা ভালো মেয়ে ছিল। সে তোর জন্য অপেক্ষা করেছে, এই শুষ্ক জমির অনুদারতাকে মাথা পেতে গ্রহণ করেছে। তারপর একদিন কারানজা এসে বলল, ‘কামাউ মারা গেছে’। তোর বাবা তার কথা বিশ্বাস করল। সেও বিশ্বাস করল। তবে এক মাস তোর জন্য উদগ্রীব হয়ে রইল। কারানজা নিয়মিত আসত। তুই তো জানিস, তোরা একই ক্লাবের ছিলি। তারপর মুথোনির কোলজুড়ে এক ফুটফুটে সন্তান এলো। আমরা চেয়েছিলাম সে থাক। কিন্তু কোথায় জমি? কোথায় ফসল? কনসলিডেশনের পরে তো আমাদের শেষ সম্বলটুকুও হারালাম। আমরা তাকে কারানজার সাথে যেতে দিলাম। অন্য মেয়েদের তো আরও খারাপ অবস্থা– শহরে চলে গেছে। শুধু অক্ষম আর বৃদ্ধরাই এখানে পড়ে আছে।’
সে আর শুনতে পারছিল না। পেটের ভিতরের ঠান্ডাটা আস্তে আস্তে তীব্র জ্বালায় পরিণত হলো। সবার প্রতি তার মনটা বিষিয়ে উঠল, তার মা-বাবার প্রতিও। সবাই তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তারা সবাই এক। আর কারানজা বরাবরের মতো তার শত্রুই রয়ে গেল। এটা ঠিক যে পাঁচ বছর কম সময় নয়। কিন্তু সে কেন চলে যাবে? তারাই-বা তাকে যেতে দেবে কেন? সে কিছু বলতে চাইল। হ্যাঁ, সে বলবে,– অভিশাপ দেবে সবাইকে, নদীর ঘাটের ওই মহিলাদের, এই গ্রামকে আর এর সব মানুকে। কিন্তু সে পারল না। একটা অসহ্য যন্ত্রণা তার শ্বাসরোধ করে ফেলল।
–‘তুমি- তুমি আমার জিনিস দিয়ে দিলে।’ সে ফিসফিস করে বলল।
–‘শোন বাছা, বাছা–।’
দিগন্তজুড়ে বড় হলুদ চাঁদ উঠেছে। সে কিছু না শুনে প্রস্থান করল আর হনিয়া নদীর তীরে আসা পর্যন্ত থামল না।
তীরে দাঁড়িয়ে সে দেখল নদীর স্রোত নয় বরং তার সব আশাই যেন মাটির ওপর দিয়ে ভেসে চলে যাচ্ছে। নদীটি অবিরাম একঘেয়েমি কলতান করে দ্রুত বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। বনে ঝিঁঝি পোকা একটানা ডেকে চলেছে। ওপরে চাঁদ উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে। সে কোটটা খুলে ফেলতে চাইল। শক্ত করে ধরা থলিটি কাঁধ থেকে পড়ে গেল। কী হতে যাচ্ছে কামাউ তা বুঝে ওঠার আগেই, থলেটি নদীতে গড়িয়ে পড়ল। কিছুক্ষণের জন্য সে হতবাক হয়ে গেল এবং থলেটি তুলতে উদ্যত হলো। সে কী দেখাবে তাকে– ওহ, সে কি এত তাড়াতাড়ি তুলে গেছে? তার স্ত্রী চলে গেছে। ছোট ছোট জিনিস যা তাকে অদ্ভুতভাবে তার কথা মনে করিয়ে দিত এবং যেগুলো সে এত বছর আগলে রেখেছে, সব ভেসে গেল। কিন্তু তারপর, সে জানে না কেন যেন সে খুব স্বস্তিবোধ করতে লাগল, সে আত্মচিন্তায় মগ্ন হয়ে পড়ল। সে কোট পরতে পরতে বিড়বিড় করে বলল, ‘সে আমার জন্য কেন অপেক্ষা করবে? আর সব পরিবর্তনকে আমার ফিরে আসা পর্যন্ত কেনই-বা অপেক্ষা করতে হবে?’ v
নগুগি ওয়া থিয়াঙ্গো [জন্ম: ৫ জানুয়ারি ১৯৩৮] : কেনিয়ার কথাশিল্পী
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বন দ শ ব র নদ র ঘ ট র ত র মন র জন য ত রপর র ওপর একদ ন সবক ছ
এছাড়াও পড়ুন:
চবির ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৩২.০৬ শতাংশ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত 'এ' ইউনিটের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অথবা ভেরিফাইড ফেইসবুক পেজ থেকে ফলাফল দেখা যাবে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৯ হাজার ৪১১ জন; পাসের হাস শতকরা ৩২ দশমিক ০৬ শতাংশ। অকৃতকার্য হয়েছেন ৫৯ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী। মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করা শিক্ষার্থী পেয়েছেন ৯৭ দশমিক পাঁচ নম্বর।
বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রকৌশল ও মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ নিয়ে গঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের 'এ' ইউনিট।
ভর্তি পরীক্ষার কো-অর্ডিনেটর ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সানাউল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে মিটিং করে সাবজেক্ট চয়েস ও ভর্তি কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।'
ফলাফল দেখুন এখানে।