সিলেটে চাঁদাবাজির ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, তদন্তে স্বেচ্ছাসেবক দল-ছাত্রদলের কমিটি
Published: 6th, March 2025 GMT
সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় তিন ঘণ্টা ধরে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ভারতীয় চোরাচালানের চিনি পাচারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত বুধবার বিকেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও কারও নাম জানা যায়নি। তবে সংঘর্ষ থামাতে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার বেলা সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেমে থেমে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, তামাবিল-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায়ই ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাই পণ্য সিলেট শহরে ঢোকে। তবে শহরে ঢুকতে গেলে দাসপাড়া এলাকাসহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে কিছু ব্যক্তিকে চাঁদা দিতে হয়। কিছুদিন আগে দাসপাড়া এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী কয়েকটি ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করে। এ টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই বুধবার সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাদিমপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সায়েম এবং সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জুয়েলের ভাগনে নয়নের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি হয়। পরে এতে যুক্ত হন দাসপাড়া ও চকগ্রামবাসী। এ দুই গ্রামবাসীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ধীরে ধীরে দুই গ্রামের পক্ষে-বিপক্ষে আশপাশের আরও তিনটি গ্রামের মানুষ যোগ দেন। পরে পাঁচ গ্রামের কয়েক শ মানুষ থেমে থেমে সংঘর্ষ চালান।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চললেও খুব বেশি মানুষ আহত হননি। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় রাতেই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। সংগঠনের জেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল ও সদস্যসচিব শাকিল মোর্শেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত শেষ করে এ ঘটনার মূল কারণ উদ্ঘাটন এবং সংঘর্ষের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেউ জড়িত কি না, তা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।
একইভাবে জেলা ছাত্রদলও চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটিকে সংঘর্ষের ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন ও ছাত্রদলের কেউ জড়িত কি না, তা খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতেই এ তথ্য জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ঘটন য় ছ ত রদল র ক ও ছ ত রদল দল র ক তদন ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনএসিডব্লিউসির তত্ত্বাবধানে ‘ইন্ডাস্ট্রি সেফটি ট্রেনিং’ অনুষ্ঠিত
শিল্পপ্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ‘ইন্ডাস্ট্রি সেফটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ-২০২৫’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রশিক্ষণে দেশের স্বনামধন্য রাসায়নিক শিল্পকারখানা ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানিকারকসহ মোট ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি) ও আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি (আইইউপিএসি) যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে হন্ডুরাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেসিয়া রোমিরো এবং যুক্তরাজ্যের মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেমদা গ্যারলিক ভার্চ্যুয়ালি ক্লাস পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. ইকবাল রউফ মামুন ও বিএনএসিডব্লিউসির কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপদ ব্যবহার এবং এ–সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান বাংলাদেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সহকর্মীদের মধ্যে অর্জিত জ্ঞান বিতরণ করে দেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। রসায়নকে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করতে হবে।
পরে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।