ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের ম্যাচে গেল ২ মার্চ অলিম্পিক লিওঁ’র কোচ পাউলো ফন্সেকা লাল কার্ড দেখেছিলেন। আর সেই এক লাল কার্ডে ৯ মাস নিষিদ্ধ হলেন তিনি।
ব্রেস্টের বিপক্ষের ওই ম্যাচে পেনাল্টি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে রেফারির সঙ্গে তর্ক শুরু করেছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে রেফারিকে মাথা দিয়ে আঘাতও করে বসেন। রেফারি বেনোয়া মিয়ে’র সিদ্ধান্ত ভিএআরের মাধ্যমে বদলে গেলেও রেফারির প্রতি ফন্সেকা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোয় তাকে লাল কার্ড দেখাতে বাধ্য হন। সেই ম্যাচে লিওঁ ২-১ গোলে ব্রেস্টকে হারিয়েছিল। কিন্তু লাল কার্ড দেখে তাদের কোচ ৯ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হলেন।
ফ্রেঞ্চ ফুটবল লিগ এক বিবৃতিতে জানায়, পর্তুগালের এই কোচ চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ম্যাচ অফিসিয়ালদের কাছ থেকে দূরে থাকবেন এবং ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাকে ড্রেসিংরুম, মাঠ কিংবা টানেলেও যেতে পারবেন না।
আরো পড়ুন:
আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের দল ঘোষণা, ফিরলেন নেইমার
বিশ্বকাপের চেয়ে ‘দ্বিগুণ প্রাইজমানি’ থাকছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে
ক্লাব লিওঁ ফন্সেকার শাস্তিকে অবশ্য ‘অভূতপূর্ব’ বলে উল্লেখ করেছে। ফন্সেকার অধীনে লিওঁ ৫ ম্যাচ খেলে ৩টিতে জয় ও ২টিতে হেরেছে। বর্তমানে লিওঁ ২৪ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ ওয়ানের পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
ফন্সেকা ছাড়াও অলিম্পিক মার্শেইয়ের সভাপতি পাবলো লোঙ্গোরিয়াও সম্প্রতি ১৫ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হন।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম, ফলশ্রুতিতে পরিবর্তন দেখলাম
জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে সতর্ক করার পর সরকার পরিবর্তন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হার্ডটক অনুষ্ঠানে ফলকার টুর্ক এ কথা বলেছেন। বিবিসির ওয়েবসাইটে বুধবার হার্ডটক অনুষ্ঠানের এই পর্ব প্রকাশ করা হয়। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকারভিত্তিক এই অনুষ্ঠানে ফলকার টুর্কের সঙ্গে কথা বলেন বিবিসির উপস্থাপক স্টিফেন সাকার।
অনুষ্ঠানে গাজা, সুদান, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে স্টিফেন সাকার ফলকার টুর্ককে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও মূল্যবোধ মেনে এসব পরিস্থিতি সমাধানে জাতিসংঘকে ক্ষমতাহীন মনে হচ্ছে। এর জবাব দিতে গিয়ে উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন ফলকার টুর্ক।
ফলকার টুর্ক বলেন, ‘আমি আপনাকে উদাহরণ দিচ্ছি, যেখানে এটা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। আমি গত বছরের বাংলাদেশের উদাহরণ দিচ্ছি। আপনি জানেন জুলাই–আগস্টে সেখানে ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।’ বাংলাদেশে তখন শেখ হাসিনার সরকার আমলে ছাত্রদের আন্দোলন দমনে ব্যাপক নিপীড়ন চলছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের জন্য বড় আশার জায়গা ছিল আসলে আমরা কী বলি, আমি কী বলি, আমরা কী করতে পারি এবং আমরা ওই পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করি।
আমরা প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করি, যদি তারা এতে জড়িত হয়, তার অর্থ দাঁড়াবে তারা হয়ত আর শান্তিরক্ষী পাঠানোর দেশ থাকতে পারবে না। ফলশ্রুতিতে আমরা পরিবর্তন দেখলাম।’ ফলকার টুর্ক বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিলেন, তিনি আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে বললেন, আপনি কি একটি তথ্যানুসন্ধানী দল পাঠাতে পারেন, পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দিতে পারেন এবং সেখানে যা ঘটছি, তা তদন্ত করতে বললেন। আমরা এগুলোই করেছিলাম। এবং এটা কার্যত সাহায্য করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি গত বছর বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমরা একটি অবস্থান নেওয়ায়, আমরা কথা বলায় এবং তাদেরকে সহযোগিতা করায় ছাত্ররা আমাদের প্রতি খুব কৃতজ্ঞ ছিল।’
সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের বিষয়ে ফলকার টুর্ক বলেন, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা হবে। কারণ, ইউএসএআইডি এবং বিদেশি সহায়তা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সুদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ফলকার টুর্ক বলেন, সিরিয়ায় মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পাশের দেশগুলোতে থাকা সহিংসতার শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সিরিয়া ও লেবাননের ক্ষেত্রে এটা রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে তাঁরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর উল্লেখ করে ফলকার টুর্ক বলেন, সেখানে যা ঘটছে, তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।