ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সৌজন্যে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সামনের পথ স্পষ্ট, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্র, জবাবদিহি, আইনের শাসন, সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবতা সমুন্নত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্য কেবল তার জনগণই নির্ধারণ করবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের বিশ্বব্যাপী বন্ধু ও অংশীদারেরা আমাদের সম্মিলিত বিকাশের জন্য অ-হস্তক্ষেপ, সার্বভৌমত্ব এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিশ্বব্যাপী নিয়মগুলোকে সম্মান করবে। গণতন্ত্র ও উদার বাণিজ্য অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমাদের অঞ্চলের সম্মিলিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই।’

ইফতারের আগে বিএনপির মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ডেপুটি হেড অব মিশন জন ড্যানিলোভিচসহ রাশিয়া, জাপান, সংযুক্ত আবর আমিরাত, নরওয়ে, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনীতিকেরা অংশ নেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা কূটনীতিকদের নিয়ে আলাদা টেবিলে বসেন।

এ ছাড়া ইফতারে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মনিরুজ্জামান, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুজনের সম্পাদক ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পাদকদের মধ্যে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দেশ রূপান্তর সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ডেইলি সান সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, মোস্তফা ফিরোজ ও লেখক জাহেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার ও জহির উদ্দিন স্বপন, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শামা ওবায়েদ, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন অংশ নেন।

ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা নৈশভোজে অংশ নেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক টন ত ক ব এনপ র আম দ র আবদ ল ইফত র আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন দল গড়ে তোলার দিকেই সরকারের সব মনোযোগ: সিপিবি সভাপতি

‘সব দিক থেকে সরকারের ব্যস্ততা হলো আরেকটি নতুন শক্তি, নতুন দল গড়ে তুলতে হবে। এই দিকেই সরকারের সব কর্মকাণ্ডের মনোযোগ’—এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। সংস্কারের কথা বললেও সংস্কারের দিকে সরকারের মনোযোগ আছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

সিপিবির ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্যে এ কথা বলেন মোহাম্মদ শাহ আলম। দিবসটি উপলক্ষে এর আগে সকাল আটটায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কার্যালয়ের নিচে অস্থায়ী শহীদবেদি তৈরি করে গত ৭৭ বছরে আত্মত্যাগকারী দলের নেতা-কর্মীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান সিপিবি নেতারা। এ ছাড়া সারা দেশে পার্টির পতাকা উত্তোলন, সমাবেশ-র‌্যালি-মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

বক্তব্যে সিপিবি সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘অনেকে সবকিছু ’২৪ থেকে শুরু করতে চায়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা ও শেখ হাসিনার বিরোধিতা কি এক? মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে শেখ হাসিনা।’ বিভিন্ন ঘটনার জন্য শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী মনোভাব ও স্বৈরতন্ত্রকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘এই যে ওরা মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে সাহস দেখাচ্ছে, ’৭২–এর সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেবে, ৩২ নম্বর ভেঙে দিচ্ছে, লালনের অনুসারীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে, মাজার ভেঙে দিচ্ছে, একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে। করতে পারছে কেন? এসবের দায় কার? এর জন্য দায়ী শেখ হাসিনা।’

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে শত্রু ছিল স্বৈরাচার ও স্বৈরতন্ত্র। এরপর আমাদের শত্রু সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ।’

ভোট হলেই পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। তবে ভোটের ধারায় এলে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করা যাবে বলে উল্লেখ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। তিনি বলেন, ‘ভোট হলে কিছুটা জবাবদিহির মধ্যে হয়তো আনতে পারব। অপশক্তি, অপকর্ম ঠেকাতে পারব।’

গত সাত মাসে বাংলাদেশে যেসব অপকর্ম হয়েছে, সেগুলোর দায় অন্তর্বর্তী সরকারের বলে অভিযোগ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বা সম্মতি ছাড়া এসব ঘটনা ঘটতে পারে না। আজকে সংস্কারের নামে আমরা নতুন নাটক দেখতে পাচ্ছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার কথা রাখছে না অভিযোগ করে রুহিন হোসেন আরও বলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে সংলাপে বসেনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

আলোচনায় নেতারা বলেন, ১৯৯০–এর গণ-অভ্যুত্থান ও ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র ও বৈষম্য মুক্তির কথা সামনে এলেও এই ধারায় দেশকে অগ্রসর করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুরোনো ব্যবস্থা বহাল রেখেই পথ চলছে। এমনকি বাজারব্যবস্থাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। নিত্যপণ্যের দামের লাগাম টানা যায়নি। জনজীবনে এখনো স্বস্তি ফিরে আসেনি। জানমালের নিরাপত্তাহীনতা চলছে। দখলদারি দৈনন্দিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ভোটের গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে এনে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা আহ্বান জানান তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নৈতিকতার মানদণ্ডে সবাইকে পরিচিত হতে হবে : ডিসি
  • নতুন দল গড়ে তোলার দিকেই সরকারের সব মনোযোগ: সিপিবি সভাপতি
  • চারদিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফিরলেন মির্জা ফখরুল
  • দেশকে চার প্রদেশে বিভক্ত করার প্রস্তাব কতটা যৌক্তিক
  • চাঁদা না দেওয়ায় ভেঙে ফেলা হলো সীমানাপ্রাচীর
  • এনসিপির সেকেন্ড রিপাবলিক নিয়ে যে প্রশ্ন
  • ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে রাজনীতি স্থগিত ঘোষণা, নিষিদ্ধ করার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • ১৪ দলের শরিকরা দুঃখ প্রকাশ করে ফিরতে চায় রাজনীতিতে
  • মির্জা ফখরুলকে দেখতে হাসপাতালে রিজভী