‘রুটে পরিবর্তন, ভোলার গ্যাস খুলনার বদলে আগে যাবে ঢাকায়’ গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিএনপির নেতারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছেন তাঁরা।

বিবৃতিতে খুলনার বিএনপি নেতারা জানান, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ করার লক্ষ্যে ২০১২ সালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। স্থাপন করা হয় গ্যাস ট্রান্সমিশন ল্যান্ড ফিল্ডও। এরপর এক যুগ কেটে গেলেও খুলনার কোথাও সরবরাহ করা হয়নি গ্যাস। বছরের পর বছর এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে এলেও তা থেকেছে উপেক্ষিত। সম্প্রতি ব্যবসায়ীরা আবারও তাঁদের দাবি জোরদার করলে নতুন করে গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয় সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। প্রথম পর্যায়ে খুলনা বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় সরবরাহ করার কথা এ গ্যাস। কিন্তু এরই মধ্যে ভোলা-বরিশাল অংশ অপরিবর্তিত রেখে পেট্রোবাংলা ভোলা-বরিশাল-ঢাকা পাইপলাইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আত্মঘাতী ও খুলনা অঞ্চলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সুকৌশলে ধ্বংসের নীলনকশা মাত্র।

বিএনপি মিডিয়া সেল খুলনার আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বরিশাল-খুলনা পাইপলাইনও হবে, তবে প্রথম ধাপে ভোলা-বরিশাল-ঢাকা পাইপলাইন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুলনা বিএনপি অবিলম্বে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে প্রথম ধাপে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। আগামী জুন মাসে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের খবরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি বিসিক শিল্প এলাকায় বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার আশা ছিল তাঁদের। যেসব প্রতিষ্ঠান গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করেছে, ইতিমধ্যেই সেসব প্রতিষ্ঠান এনওসিও সংগ্রহ করেছে।

বিবৃতি থেকে জানা যায়, খুলনা শিল্পাঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসানের কারণে বন্ধ হয়েছে। গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হলে বন্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও চালু হবে। সেই সঙ্গে ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভের মুখ দেখবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান হবে। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে সম্ভাবনা বাড়বে।

বিএনপি নেতারা প্রথম ধাপে খুলনায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় খুলনাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।বিবৃতিতে সই করা নেতারা হলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (বকুল), তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী (হেলাল), মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা), জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান (মন্টু), মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন), জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবু হোসেন (বাবু) প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ র র ব এনপ ব এনপ র বর শ ল প রথম ব যবস প ইপল

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে

সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি খারাপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অর্থনীতি ধ্বংসের পথে নেই; অন্তর্বর্তী সরকার বরং অর্থনীতি উদ্ধার করেছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাওয়ায় মানুষের আয়ে প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিল্পকারখানা যেন চালু থাকে সেজন্য দাম যাই হোক, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। এজন্য এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখা হয়েছে।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় নেই। তবে ব্যবসাপাতিতে মন্দা, আয়ের উৎস কিছুটা কম। এ কারণেই কিছু মানুষ কষ্টে রয়েছে। এখনও নতুন কর্মসংস্থান কম হচ্ছে, যা নিয়ে একনেকেও কথা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সংশোধন করা হয়েছে। আগামীতে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্পে গতি আসবে। এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গার্মেন্টসে সরকার নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে। আরও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ খাত সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় দোষ রয়েছে, কিছু প্রতিষ্ঠানের পণ্যের চাহিদা তেমন নেই। এসব সমস্যা উত্তরণে বেসরকারি খাতের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।

বেক্সিমকোর ১৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকোর বিষয়টি আলাদা একটি চ্যালেঞ্জ। তাদের দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা সমস্যার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও তাদের প্রতি সরকারের নজর রয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকার টাকা দিচ্ছে। তবে সবাইকে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের দায় সরকারের ঘাড়ে দেওয়া ঠিক নয়। সরকারের টাকা মানে তো জনগণের টাকা; যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক বিষয়সহ নানা কাজে ব্যয় হয়। তিনি জানান, কাজহারা শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

পণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট। তবে আরেকটু ভালো হতে পারত। গত বছরের তুলনায় অনেক পণ্যের দাম এখন কম। আসন্ন গ্রীষ্মকালে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা নিয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এলএনজি সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। ধারাবাহিকভাবে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। দাম কম বা বেশি যা-ই হোক, সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করছে সরকার। আশা করা যায়, শিল্প ও মানুষের বাসাবাড়িতে বিদ্যুতের সমস্যা হবে না। 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি। দুই কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৯৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা। এর মধ্যে সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জি গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার থেকে কেনা হবে এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ)। প্রতি ইউনিট (এমএমবিটিইউ) ১৫ দশমিক ৭৩ মার্কিন ডলার দরে এ গ্যাস আমদানিতে স্থানীয় মুদ্রায় ব্যয় হবে প্রায় ৭৫৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। 

গুনভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কেনা হবে বাকি এক কার্গো। এতে ব্যয় হবে ৭৪১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৫ দশমিক ৪৭ ডলার। এর আগে গত কয়েক বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে বেশ কয়েক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

গতকালের সভায় টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে বিক্রির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। শেখ এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রি থেকে ৯৫ টাকা ৪০ পয়সা দরে এ ডাল কিনতে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাফকো থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতের আমদানি করা চাল স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে এক লাখ টন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের বিষয়টিও অনুমোদন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউক্রেনে ট্রাম্পের সহায়তা বন্ধে কতটা সুবিধা পাবে রাশিয়া
  • তথ্য কমিশন কার্যকর করতে অন্তর্বর্তী সরকার উদাসীন: তথ্য অধিকার ফোরাম
  • শিল্পে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে
  • রোজায় ত্বকের যত্নে সহজ টিপস
  • পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততা নিয়ে ক্যাবের উদ্বেগ 
  • ট্রাম্প সামরিক সহায়তা স্থগিতের আগে ইউক্রেনকে যেসব অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৬০ টাকা নির্ধারণ করে দিল প্রশাসন
  • গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুজন নিহত
  • ২ মাস চলে গেল, ৬ কোটির বেশি বই সরবরাহ হয়নি