রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা ঘেরাওয়ের পর অন্য মামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী মো. বিচ্ছাদকে (৫০) আবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে নিজ বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবার মো. বিচ্ছাদকে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার মো. বিচ্ছাদ নগরের বোয়ালিয়া থানার কেদুর মোড় মহল্লার বাসিন্দা। এর আগে গত সোমবার বিচ্ছাদকে ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেন স্থানীয় লোকজন। পরদিন মঙ্গলবার বোয়ালিয়া থানা-পুলিশ তাঁকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। তবে জামিন পেয়ে বিচ্ছাদ সেদিনই এলাকায় ফেরেন। এতে ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় লোকজন। রাতে তাঁরা বোয়ালিয়া থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানান।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ভাষ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার সময় আওয়ামী লীগের অন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন মো.

বিচ্ছাদ। ভিডিও ফুটেজেও তাঁকে দেখা গেছে। এরপরও তাঁকে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছিল না। এ ঘটনার জন্য তারা পুলিশকে দায়ী করে বিচ্ছাদকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদকে বদলি করা হয়। নতুন ওসি হয়ে আসেন পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাক হাসান। তিনি আসার পর আবার বিচ্ছাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নতুন ওসি মোস্তাক হাসান বলেন, রাতে কেদুর মোড়ের বাড়ি থেকেই বিচ্ছাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হয়। আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ছ ত র জনত র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সভায় হট্টগোল

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে যশোরে মতবিনিময় সভায় হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।

নেতা-কর্মীরা জানান, সাংগঠনিক কমিটি গঠন ও কার্যক্রম গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় নেতারা যশোরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক জুবায়ের হোসেন ও আবদুস শহীদ নাসিম, সংগঠক সুলতানা খাতুন জান্নাত এবং সদস্য শাহরিয়ার কবির। সভা চলাকালে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়া সদস্যসচিব জেসিনা মুর্শিদ। তাঁকে উদ্দেশ করে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। জেসিনা মুর্শিদ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ না করলে বিক্ষুব্ধ অংশগ্রহণকারীরা সভা বর্জনের হুমকি দেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে জেসিনা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বিষয়টি জানতে চাইলে জেসিনা মুর্শিদ বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকেও বলা হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে গেলে কয়েকজন নেতা-কর্মী আমাকে চলে যাওয়ার শর্ত দেন। তখন আমি আমার সহযোগীদের নিয়ে বেরিয়ে আসি। পরে রাতে কেন্দ্রীয় নেতারা আমার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন।’

জেসিনা মুর্শিদ চলে যাওয়ার পর সভায় ছাত্রসংসদের কমিটি গঠন ও কার্যক্রম নিয়ে নানা পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বক্তারা বলেন, সংগঠন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে। কোনো অপকর্মের স্থান এখানে হবে না। দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তাঁরা।

বক্তারা আরও বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আর কোনো জায়গা হবে না এবং কোনো রাজনৈতিক দলকে স্বৈরাচার হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে ছাত্রসমাজকে রাজপথে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকারও আহ্বান জানান তাঁরা।

প্রসঙ্গত, উপজেলা কমিটি গঠনসংক্রান্ত সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ৪ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেসিনা মুর্শিদের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ