মসজিদে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০
Published: 6th, March 2025 GMT
মসজিদে তারাবির জামাত থেকে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের গোকুলনগর গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। যদিও পুলিশ ধারণা করছে, খেলার ছলে কোনো কুকুর মসজিদের বারান্দা থেকে স্যান্ডেল নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গোকুলনগরে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে আব্দুল মালেকের লোকজনের সঙ্গে আমজাদ হোসেনের পক্ষের বিরোধ চলছে। গ্রামের মসজিদে উভয় পক্ষের লোকেরাই তারাবির নামাজ পড়ছেন। কয়েকদিন ধরে মালেকের সমর্থকদের স্যান্ডেল নামাজ পড়ার সময় মসজিদের সিঁড়ি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার রাতেও তাদের কয়েকজনের স্যান্ডেল হারানো যায়। বিষয়টি নিয়ে নামাজের পর মালেকের সমর্থকদের সঙ্গে আমজাদের পক্ষের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ১০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম, সুজন বিশ্বাস, উত্তম বিশ্বাস, রিপন বিশ্বাসের নাম জানা গেছে। আহত ব্যক্তিদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, গোকুলনগর গ্রামে তারাবির নামাজের সময় সম্ভবত কুকুর খেলার ছলে স্যান্ডেল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রামের এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করতে থাকে। বিষয়টি এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ স ঘর ষ মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যের ওপর হামলা
ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এবার ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের রানি কমলাপতি রেলস্টেশনে (পুরোনো নাম হাবিবগঞ্জ স্টেশন) রেলওয়ে পুলিশের এক উর্দিধারী কর্মীর ওপরে হামলা হয়েছে।
পুলিশের সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা জানিয়েছে, তিনজন তরুণ একজন রেলওয়ে পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই তরুণেরা তাঁর ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেছেন। তরুণেরা তাঁকে গালিগালাজ এবং আপত্তিকর ধর্মীয় মন্তব্য করেন। ওই পুলিশ সদস্যের নাম নজর দৌলত খান।
গত শনিবার দিবাগত রাত দুটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত তরুণদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি দুজন এখনো পলাতক। তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানায়, হেড কনস্টেবল নজর দৌলত এবং তাঁর দল দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে স্টেশন চত্বরে গিয়েছিলেন। তাঁরা যখন এ কাজ করছিলেন তখন নজর দৌলত একটি থেমে থাকা গাড়ির মধ্যে একদল তরুণকে মদ্যপান করতে দেখেন। তিনি তাঁদের চলে যেতে বললে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণেরা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালায়।
গতকাল রোববার ঘটনার একটি ভিডিও ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিও পুলিশের কাছেও স্বাভাবিকভাবে পৌঁছায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণেরা শুধু নজর দৌলতকে মারধরই করেননি, তাঁর ধর্ম উল্লেখ করে অবমাননাকর মন্তব্যও করেছেন।
সন্দীপ ও কমল রঘুবংশী নামের নজর দৌলতের অন্য দুই সঙ্গী কনস্টেবল তাঁকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্ত তরুণদের একজন তাঁদের বলে, ‘তোমরা হিন্দু ভাই, তোমরা এখান থেকে সরে যাও।’
ওই তরুণ আরও বলেন, ‘হিন্দু ভাইয়েরা বুদ্ধিমান আর এই লোক (দৌলত খান) তাদেরই বক্তৃতা দিচ্ছে।’
রেলওয়ে স্টেশনে আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মদ্যপ তরুণেরা পুলিশের জিপের দরজা জোর করে খুলছেন এবং কনস্টেবলকে গাড়ির ভেতরে ঢুকে মারধর করছেন।
উপপরিদর্শক (এসআই) রামদয়ালকে উদ্ধৃত করে দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত তিন তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জিতেন্দ্র যাদব নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর দুই পলাতক সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস থেকে এখন পর্যন্ত মুসলিম সমাজের ওপরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কখনো ধর্মীয় সম্পত্তি, কখনো মাদ্রাসা বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সমাজের স্কুল, কখনো তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সাধারণ মানুষের ওপরে হামলার ঘটনা প্রবলভাবে বেড়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
তবে একজন পুলিশ কর্মীকে বেছে নিয়ে নির্দিষ্টভাবে হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভবত এই প্রথম ঘটল।