আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের বেশ কিছু ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। আবার একক গ্রুপ যে পরিমাণ ঋণ নিতে পারে, তার চেয়ে অনেক বেশি ঋণ নিয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের ঋণগুলোকে একাধিক গ্রুপ হিসেবে ভাগ করেছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক একাধিক ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বলেছে, বসুন্ধরা সংশ্লিষ্ট সব ঋণ একক গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত হবে।

এমন পরিস্থিতিতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান  আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী ও কবির আহাম্মদসহ ঊর্ধ্বতন অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্র জানায়, বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে বলা হয়েছে, বসুন্ধরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এসব আলাদা গ্রুপ হিসেবে দেখাতে চায় তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, তাদের (বসুন্ধরা গ্রুপ) দেখানো সবগুলো গ্রুপকে এক গ্রুপ হিসেবেই চিহ্নিত হবে। পাশাপাশি খেলাপি হয়ে পড়া ঋণ সহজ শর্তে পুনঃ তফসিল করার দাবি জানায় বসুন্ধরা গ্রুপ।

সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ না হয়, এটা সরকারের চাওয়া। এ জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বাত্মক সহায়তা করে যাবে। তবে খেলাপি হয়ে পড়া ঋণ পুনঃ তফসিল করতে হলে এককালীন টাকা জমা দিতে হবে, যা তারল্যসংকটে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। এমন বার্তা বসুন্ধরা গ্রুপকে দেওয়া হয়েছে।

গত অক্টোবরে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ তাঁদের পরিবারের আট সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত নভেম্বরে আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের বিদেশে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ নভেম্বর এ আদেশ দেন আদালত। পরিবারের অন্য সদস্যরা হলেন আহমেদ আকবর সোবহানের চার ছেলে সাদাত সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সায়েম সোবহান আনভীর ও সাফওয়ান সোবহান এবং তিন পুত্রবধূ সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান, সাবরিনা সোবহান ও ইয়াশা সোবহান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মিথ্যা মাদক মামলা দেওয়ার অভিযোগে ভৈরব থানার এসআই ক্লোজড

অটোরিকশা চালক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ভৈরব থানার এসআই আল মামুনকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী (বিপিএম সেবা) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মাদকের সঙ্গে কোন আপস নয়। ৪ এপ্রিল দুপুরে ভৈরবের একটি পরিবার এসআই আল মামুনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে জানতে পেরেছি। এ ঘটনার পর এসআই আল মামুনকে ভৈরব থানা থেকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, ৮ মার্চ রাতে মাদক কারবারি আকবর আলীর ঘর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসআই শ্যামল ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় আকবর ও তার স্ত্রী রুবি বেগমের নামে মামলা না দিয়ে উল্টো তারই ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী স্মৃতি বেগমের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন এসআই আল মামুন ও এসআই শ্যামল। টাকা না দেওয়ায় অটোচালক মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রীকে এসআই আল মামুন গ্রেপ্তারের হুমকি দেন বলে তারা অভিযোগ করেন।

পরে ১১ মার্চ রাত ১টায় এসআই আল মামুন অটোচালক মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক করে পুনরায় ১ লাখ টাকা দাবি করে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য প্রতিবেশির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়া পান অটোচালক ও তার স্ত্রী। 

এ বিষয়ে ৪ এপ্রিল বিকেলে এসআই আল মামুন ও এসআই শ্যামল দেবনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেন, এসআই আল মামুন মাদক কারবারি আকবর ও তার স্ত্রী রুবি বেগমের সঙ্গে যোগসাজশে তাদের মামলায় আসামি করেন।

সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের নজরে আসে। ওই রাতেই এসআই আল মামুনকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার বাদী শ্যামল চন্দ্র দেবনাথ। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

এ বিষয়ে শ্যামল চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে কথা হলে তিনিও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদক উদ্ধারের ১ দিন পর মাদক মামলা দায়ের করেছি। কার মাদক দিয়ে কাকে মামলা দিয়েছি তখন তো কেউ এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিথ্যা মাদক মামলা দেওয়ার অভিযোগে ভৈরব থানার এসআই ক্লোজড