আমরা যদি সেই দেশ প্রেমে নিজেদের জাগ্রত করতে না পারি। আমরা যদি আকাদের প্রতিটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমাদের আন্তরিকতা প্রকাশ করতে না পারি। আমরা মনে করি তাহলে তাদের প্রতি যথাযথ ভাবে সম্মান দেখানো হবে না। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় জেলা প্রশাসক এই কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা আরও বলেন, ২৫ শে মার্চ বাঙালী জাতিকে মেরুদণ্ডহীন করার লক্ষ্যে পৃথিবীর ইতিহাসে নির্মম এবং নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিলো সেজন্য আমরা পাক হানাদার বাহিনীকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। আমরা বিশ্বাস করি তারা যে উদ্দেশ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো তারা তাদের সফলতা পায়নি। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। 

আমরা বিশ্বাস করি আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ প্রেমের যে কাব্য রচনা করে ছিলো। আমারা যারা দেশ গড়ার দায়িত্ব নিয়েছি তাদের মধ্যে যদি দেশ প্রেম জাগ্রত না হয় তাহলে আমাদের সে লক্ষ্য, যে লক্ষ্য নিয়ে তারা মুক্তিযদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো দেশের স্বাধীনতার জন্য। দেশকে অন্য একটি দেশের বৈষম্য থেকে, তাদের নির্যাতন থেকে কথা ভাবে দূর করে আমাদের একটি নতুন দেশ দেওয়ার জন্য তারা ঝাপিয়ে পড়েছিলো। 

আমরা যদি সেই দেশ প্রেমে নিজেদের জাগ্রত করতে না পারি। আমরা যদি আকাদের প্রতিটি জাতীয় অনুষ্ঠানে আমাদের আন্তরিকতা প্রকাশ করতে না পারি। আমরা মনে করি তাহলে তাদের প্রতি যথাযথ ভাবে সম্মান দেখানো হয় না আমরা বিশ্বাস করি,আমাদের এই ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রোগ্রাম যেটি আমরা সকাল বেলা তোপধ্বনির মাধ্যমে আমরা শুরু করবো এরপর ফুল দেওয়া থেকে শুরু করে সব গুলো কার্যকমে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করবো। 

আমরা চাই সেদিন পুরো নারায়ণগঞ্জে নতুন জাতীয় পতাকা উড়বে। আমরা নতুনত্বের স্বাদ নিয়ে এবার স্বাধীনতা দিবস পালন করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি আপনারা এগিয়ে আসবেন। এই দিবসের ভাবগাম্ভীর্যতা রক্ষা করে এবং গুরুত্বকে উপলিব্ধি করে এবং আমাদের আগামী প্রজন্মকে বুঝাতে হবে, যে এই দেশ স্বাধীন এমনিই হয়নি।

অনেক ত্যাগ অনেক রক্তের বিনিময়ে এই দেশে স্বাধীনতা এসেছে। এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে কমিটমেন্ট ছিলো দেশের প্রতি আমরা যদি আমাদের দেশকে সেই উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই আমরা যে ধরনের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের নৈতিকতার মানদণ্ডে সবাইকে পরিচিত হতে হবে।

তিনি বলেন, আমার খুব খারাপ লাগে কেনো জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য কমিটি গঠন করা লাগবে? কেনো আমার এইটুকু নৈতিকতা থাকবেনা।কেনো বিশেষ দিনে খাবার দিবে সেটি আমার টিম দিয়ে পাঠাতে হবে। সেই নৈতিকতার মানদণ্ডে কেনো উত্তীর্ণ হবো না। এটি আমার দায়িত্ব,আমার কর্তব্য এটি আমার করতে হবে। আজব কেনো সেটি আমাকে চাপিয়ে দিতে হবে।

আমরা কবে এই চাপানো থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। নিজের কাধে দায়িত্ব নিয়ে আমাদের কাজ করতে পারবো। আমরা নিজের কাধে দায়িত্ব নিয়ে এই দেশ গড়ার কাজে একভূত হয়ে কাজ করতে হবে। যদি সেটি না পারি আমাদের সেই কাঙ্খিত সমাজ আমারা বিশ্বের সাথে যে প্রতিযোগিতায় থাকতে চাই সেটি আমরা থাকতে পারবো না। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.

আলমগীর হুসাইনের সঞ্চলনায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, জেলা সিভিল সার্জন আ.ফ.ম মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ-পরিচালক (উপ- সচিব) ড. মো. মনিরুজ্জামান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, জেলা কমান্ড্যান্ট আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কানিজ ফারজানা শান্তা, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব রাজিব, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন, জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার, জেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. নুরুল হুদা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব শ ব স কর আম দ র ন ত কত

এছাড়াও পড়ুন:

ত্বকী হত্যার ১২ বছর পূর্তিতে তার কবরে বিভিন্ন সংগঠনের ফুল

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ত্বকীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন। পরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। 


বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পুরান বন্দরের কাদরিয়া ভান্ডার সিরাজ শাহার আস্তানায় ত্বকীর সমাধিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। 

ত্বকীর কবরে যা ফুল দিয়েছেন

প্রথমে ত্বকীর কবরে ফুল দেন তার বাবা সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, পরে  জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, খেলাঘর আসর জেলা কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হিমাংশু সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর জেলা সভাপতি জাহিদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাসুম সেকান্দার, বাসদ নেতা ও সাবেক ১৫ নম্বর ওয়ার্ড সিটি কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, সামাজিক সংগঠন সমমনার পক্ষ থেকে দুলাল সাহা, গোবিন্দ সাহা, সেলিম ভূঁইয়া, প্রথম আলো নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, মহানগর কমিটির নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলা কমিটির সভাপতি ফারহানা মানিক, ক্রান্তি খেলাঘর আসরের পক্ষ থেকে প্রণয় ও আদনান। এ সময় সেখানে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।


২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নগরীর শায়েস্তা খাঁন রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।


এ ঘটনায় নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তৎকালীন সরকার আমলে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। সেই মামলায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে উঠে আসে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এর আগে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে অভিযান চালায় র‌্যাব।


হত্যাকান্ডের এক বছর পর ২০১৪ সালে ৮ মার্চ তৎকালিন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসানও সংবাদ সম্মেলন করে উল্লেখ করে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বড় ভাই  প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরীসহ ১১ জন কিশোর ত্বকী হত্যায় অংশ নেয়। জানানো হয় দ্রুত আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হবে। কিন্তু হত্যাকান্ডের ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। তবে এরই মধ্যে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালিন সরকার দায়িত্ব নিলে র‌্যাব ত্বকী হত্যা মামলায় নতুন করে আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তাদের মধ্যে আজমেরী ওসমানের গাড়ীচালক ও সহযোগীরা রয়েছে। তবে পালিয়েছে আজমেরীসহ আরও অনেকে।


মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব-১১’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, এই মামলাটির তদন্ত আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছি। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিহত ত্বকীর বাবার সঙ্গে আমাদের সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে। তিনিও আমাদেরকে এই মামলায় সহায়তা করছেন। ৫ আগষ্টের পর থেকে আমরা এই মামলায় আরো ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদেরকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা নিয়ে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত শেষ হওয়া মাত্রই অভিযোগ পত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সম্মানে বিএনপির ইফতার
  • শহরের যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান, জরিমানা
  • মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযান, যানজট মুক্ত রূপগঞ্জ
  • ত্বকী হত্যার ১২ বছর পূর্তিতে তার কবরে বিভিন্ন সংগঠনের ফুল
  • চারদিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফিরলেন মির্জা ফখরুল
  • চাঁদা না দেওয়ায় ভেঙে ফেলা হলো সীমানাপ্রাচীর
  • ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে রাজনীতি স্থগিত ঘোষণা, নিষিদ্ধ করার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • মির্জা ফখরুলকে দেখতে হাসপাতালে রিজভী
  • ময়মনসিংহে ৫ কলেজে ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা