নতুন দল গড়ে তোলার দিকেই সরকারের সব মনোযোগ: সিপিবি সভাপতি
Published: 6th, March 2025 GMT
‘সব দিক থেকে সরকারের ব্যস্ততা হলো আরেকটি নতুন শক্তি, নতুন দল গড়ে তুলতে হবে। এই দিকেই সরকারের সব কর্মকাণ্ডের মনোযোগ’—এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। সংস্কারের কথা বললেও সংস্কারের দিকে সরকারের মনোযোগ আছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
সিপিবির ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্যে এ কথা বলেন মোহাম্মদ শাহ আলম। দিবসটি উপলক্ষে এর আগে সকাল আটটায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কার্যালয়ের নিচে অস্থায়ী শহীদবেদি তৈরি করে গত ৭৭ বছরে আত্মত্যাগকারী দলের নেতা-কর্মীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান সিপিবি নেতারা। এ ছাড়া সারা দেশে পার্টির পতাকা উত্তোলন, সমাবেশ-র্যালি-মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
বক্তব্যে সিপিবি সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘অনেকে সবকিছু ’২৪ থেকে শুরু করতে চায়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা ও শেখ হাসিনার বিরোধিতা কি এক? মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে শেখ হাসিনা।’ বিভিন্ন ঘটনার জন্য শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী মনোভাব ও স্বৈরতন্ত্রকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘এই যে ওরা মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে সাহস দেখাচ্ছে, ’৭২–এর সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেবে, ৩২ নম্বর ভেঙে দিচ্ছে, লালনের অনুসারীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে, মাজার ভেঙে দিচ্ছে, একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে। করতে পারছে কেন? এসবের দায় কার? এর জন্য দায়ী শেখ হাসিনা।’
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে শত্রু ছিল স্বৈরাচার ও স্বৈরতন্ত্র। এরপর আমাদের শত্রু সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ।’
ভোট হলেই পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। তবে ভোটের ধারায় এলে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করা যাবে বলে উল্লেখ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। তিনি বলেন, ‘ভোট হলে কিছুটা জবাবদিহির মধ্যে হয়তো আনতে পারব। অপশক্তি, অপকর্ম ঠেকাতে পারব।’
গত সাত মাসে বাংলাদেশে যেসব অপকর্ম হয়েছে, সেগুলোর দায় অন্তর্বর্তী সরকারের বলে অভিযোগ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বা সম্মতি ছাড়া এসব ঘটনা ঘটতে পারে না। আজকে সংস্কারের নামে আমরা নতুন নাটক দেখতে পাচ্ছি।’
অন্তর্বর্তী সরকার কথা রাখছে না অভিযোগ করে রুহিন হোসেন আরও বলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে সংলাপে বসেনি।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আলোচনায় নেতারা বলেন, ১৯৯০–এর গণ-অভ্যুত্থান ও ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র ও বৈষম্য মুক্তির কথা সামনে এলেও এই ধারায় দেশকে অগ্রসর করার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুরোনো ব্যবস্থা বহাল রেখেই পথ চলছে। এমনকি বাজারব্যবস্থাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। নিত্যপণ্যের দামের লাগাম টানা যায়নি। জনজীবনে এখনো স্বস্তি ফিরে আসেনি। জানমালের নিরাপত্তাহীনতা চলছে। দখলদারি দৈনন্দিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ভোটের গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে এনে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা আহ্বান জানান তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি
"আমিষেই শক্তি, আমিষেই মুক্তি" প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে পবিত্র রমজান উপলক্ষে মাসব্যাপী সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি শুরু হয়।
রোববার (৬ মার্চ) সকালে সদর উপজেলা কার্যালয় চত্বরে পল্লী উন্নয়ন ভবনের সামনে মাসব্যাপী এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মান্নান মিয়া।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইউনুস আলী, জেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. কবির উদ্দিন আহমেদ ও মাজ এগ্রো এর সত্ত্বাধিকারী লিংকন কাজীসহ জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইউনুস আলী বলেন, সুলভ মূল্যে জনসাধারণের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ। এই কর্মসূচির আওতায় রমজান উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রয় করা হবে।