জুমা’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্তে কাতারবদ্ধ হয়ে দুই রাকাতের যে ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, ইসলামের পরিভাষায় সেটিই সালাতুল জুমা বা জুমার নামাজ। জুমার নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব জুমার নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র আল-কোরআনে ‘জুমা’ (জমায়েত) নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। সেটি ৬২ নম্বর সুরা। তাতে জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহ বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এ-ই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
আরও পড়ুনজান্নাত লাভের পথ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় বাতলে দিলেন রাসুল (সা.)১৮ এপ্রিল ২০২৪
জুমার নামাজের আজান দেওয়ার পর সব বৈষয়িক কাজ স্থগিত রেখে নামাজ আদায় করার জন্য আল্লাহ সবাইকে মসজিদে কাতারবন্দী হওয়ার আদেশ দিয়েছেন। এর পরের আয়াতেই বলা হয়েছে, ‘নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)। অর্থাৎ আল্লাহর হক আদায় করার মাধ্যমে আখিরাতের সম্পদ অর্জন করার পর আবার দুনিয়ার সম্পদ তথা স্বাভাবিক রুটিরুজির অন্বেষণে ছড়িয়ে পড়তে বলা হচ্ছে।
জুমার নামাজ সম্পর্কে হাদিস জুমার দিনটি এবং এই দিনের আমল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এককভাবে অন্য কোনো দিন বা দিনের নামাজ নিয়ে এত বর্ণনা আর পাওয়া যায় না। আমলের দিক থেকে আল্লাহ তাআলা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন, জুমা তার অন্যতম।
আরও পড়ুনঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক পাঠের গুরুত্ব২০ এপ্রিল ২০২৪হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে প্রথম মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল;
দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল;
তৃতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং সে যেন একটি ছাগল কোরবানি করল।
অতঃপর চতুর্থ যে ব্যক্তি মসজিদে গেল, সে যেন একটি মুরগি সদকা করল।
আর পঞ্চম যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ডিম সদকা করল।
এরপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুতবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে যায়।’ (বুখারি: ৮৮১)
আরও পড়ুনদরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত ২১ এপ্রিল ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ন একট র জন য আল ল হ মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
টাকার লোভ দেখিয়ে ভারতে পাচার, মুক্তিপণ দাবি
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দুই যুবককে কাজ দেওয়ার কথা বলে ভারতে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বড়লেখা থানায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। আব্দুল মালিক নামে এক আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পাচারের শিকার দুই যুবক হলেন– বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাদির ও পূর্ব সাতকরাকান্দি গ্রামের আব্দুল শুক্কুরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন। গ্রেপ্তার আব্দুল মালিক ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলো– সরফ উদ্দিন নবাব, ফখর উদ্দিন, আব্দুল খালিক, কুটু মিয়া, আদুল শুকুর, খয়রুল ইসলাম, ইছহাক আলী, ইমাম উদ্দিন ও রুবেল আহমদ। এ ছাড়া আটজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল রাতে আসামিরা ডিমাই গ্রামের আব্দুল কাদিরের বাড়িতে যায়। তারা কাজ আছে জানিয়ে গভীর রাতে আব্দুল কাদির ও তাঁর প্রতিবেশী আব্দুল আজিজের ছেলে শাহিনকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। একই গ্রুপ (আসামিরা) গিয়াস উদ্দিন নামে আরও এক যুবককে তাঁর বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। পরদিন দুপুরে শাহিন কৌশলে আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্বজনদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি জানান, আসামিরা আব্দুল কাদির ও গিয়াস উদ্দিনকে টাকার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাঁকেও নিতে চেয়েছিল, তবে তিনি কৌশলে পালিয়ে এসেছেন। এর আগে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তাঁকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী আব্দুল কাদিরের মা নেছা বেগম বলেন, ‘শাহিন ফিরে এসে তাদের ওপর চালানো নির্যাতনের খবর জানায়। এর মধ্যে আমার ছেলে আব্দুল কাদির ও গিয়াসের ওপর ভারতে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে দেখতে পাই। এর পর আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমার কাছে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে। টাকা না দিলে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।’
বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকার জানান, এ ঘটনায় রোববার মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক আসামিকে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।