Risingbd:
2025-03-06@18:10:22 GMT

নতুন অস্ত্র তৈরি করছে ইরান

Published: 6th, March 2025 GMT

নতুন অস্ত্র তৈরি করছে ইরান

ইরানের সেনাবাহিনী এবং ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস গত তিন মাস ধরে বৃহৎ আকারের সামরিক মহড়ায় নতুন প্রতিরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক অস্ত্র প্রদর্শন ও পরীক্ষা করছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো এবং সামরিক স্থাপনাগুলিতে বোমা হামলার হুমকির মধ্যে দেশটি আরও একটি অস্থির বছরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান ইসরায়েলের উপর তৃতীয়বারের মতো বড় সামরিক হামলা চালানোর প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে। একতেদার, জোলফাকার এবং গ্রেট প্রফেট - এই মহড়াগুলো ইরান, ওমান সাগর এবং উত্তর ভারত মহাসাগরজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অস্ত্র পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, ইরান ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের প্রতি তার অবাধ্যতা বজায় রাখতে চায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির অধীনে তার সাথে আলোচনা করতে অস্বীকার করছে এবং পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।

আইআরজিসি তিনটি প্রধান ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাঁটি উন্মোচন করেছে। কমান্ডাররা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এই ঘাঁটিকে ‘ক্ষেপণাস্ত্র মেগাসিটি’ বলে অভিহিত করেছে। এই ঘাঁটির ভেতরে কয়েক ডজন ব্যালিস্টিক প্রজেক্টাইল দেখা যাচ্ছিল।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

খোররামশাহর-৪, একটি তরল জ্বালানি রকেট যার পাল্লা ২০০০ কিলোমিটার, তরল জ্বালানি রকেট জাহাদ, যা ওয়ারহেড সহ এক হাজার কিলোমিটার (৬২১ মাইল) পর্যন্ত যেতে পারে, কঠিন জ্বালানি-চালিত রকেট এল৩৬০,  যা 150 কেজি বিস্ফোরক বহন করে ১৮০ কিলোমিটার  যেতে পারে এবং দুই-পর্যায়ের রকেট কদর,   যা দুই কিলোমিটার দূর আঘাত হানতে পারে।

ইরান একটি মহড়ার অংশ হিসেবে শত্রুপক্ষের ড্রোনকে আটকাতে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি নতুন রাশিয়ান তৈরি ইয়াক-১৩০ ব্যবহার করেছিল। ইরান দীর্ঘদিন ধরে অর্ডার করেও পায়নি এমন উন্নত সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমানের পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মস্কো থেকে সাবসনিক দুই আসনের ইয়াক-১৩০ জেটটি সরবরাহ করা হয়েছিল।

রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াও ইরানের কাছে নিজেদের তৈরি বাভার-৩৭৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। এটি ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ধ্বংস করতে সক্ষম। ইরানের অস্ত্রাগারে বছরের পর বছর ধরে থাকা আরো বিভিন্ন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৫-খোরদাদ, মাজিদ, আরমান, জুবিন এবং তোন্ডার।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেন। ঢাকার রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তাঁর এ ঘোষণার পর স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম ত্বরান্বিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি।
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়। এতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। এক পর্যায়ে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হলে বঙ্গবন্ধু ২ মার্চ ঢাকায় ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতালের ডাক দেন। ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের বিশাল সমাবেশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। সেখানেই বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেওয়ার কথা জানান।

৭ মার্চ বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে ওঠেন। ফাল্গুনের সূর্য তখনও মাথার ওপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। দরাজ কণ্ঠে তাঁর ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি...।’ এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ প্রায় ১৮ মিনিটের ভাষণ। ভাষণে বঙ্গবন্ধু সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভায়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিতে চাই– আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোনো কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’

বঙ্গবন্ধু সেদিন সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও এটি ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের গ্রিন সিগন্যাল। এই ভাষণে ছাত্র-জনতা স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসজুড়ে ভাষণটি ছিল লড়াকু মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পথনির্দেশ।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ