বাগেরহাটের রামপালে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে উপজেলার ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামপাল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন ও সদস্য সচিব কাজী জাহিদুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ চলছিল। উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এ বিরোধ চরমে পৌঁছায়। এর জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন- উপজেলা বিএনপির কর্মী আল আমিন, আজমল শেখ, শহিদ ব্যাপারী, আবুল কালাম, বাবুল শেখ, শামীম শেখ, আহম্মদ আলী, ইসমাইল শেখ, আশরাফ আলী, তাহিদুল ইসলাম, হোসাইন শেখ, তারেক শেখ, ফারুক হোসেন, আবুল কালাম, শহিদুল ইসলাম, মাহিদ শেখ ও ছাত্রদল নেতা আবু তালেব এর বাবা নজরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিনের সমর্থকরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সাথে নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের ১৬ জন আহত হয়েছেন।”

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, “জাহিদুলের লোকজন ছাত্রদল নেতা আবু তালেবের বাবাকে মেরে আহত করেছে এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে। এই ঘটনা নিয়েই মূলত উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আমি পুলিশকে জানিয়েছি এবং সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছি।”

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সেলিম রেজা বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শহিদুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ দ ল ইসল ম ব এনপ র স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পদাবলি

নামো বৃষ্টি নামো কোলাহল
বিমল গুহ 

এখনও দাঁড়িয়ে আছি একা বারান্দায় ঝুমবৃষ্টির আশায়
একপায়ে স্থির– বায়ুমুখী– ডালপালাহীন শীর্ণ বৃক্ষের মতন সারাক্ষণ।
খরায় শুষ্কমেঘ শিকড়-বাকড় পোড়ামাটি করকরে হাওয়া বয়
উশকোখুশকো পরিবেশ অবসাদে ক্লান্ত করে মন
অভ্যন্তরে ডিগবাজি খায় স্বপ্নকুঁড়ি– নব পল্লবের শোভা– নব বনাঞ্চল! 
বিস্তীর্ণ শস্যের মাঠ কান আলগা করে শোনে মেঘের গর্জন
প্রকৃতিও জেনে যায় বৃষ্টি হবে মরুর চাতালে সহসাই।
উঁকি দেয় মেঘ– ঝিরঝির ঝিরঝির অন্তরালে দোলে দূর বিস্তীর্ণ
প্রান্তর
ঋতু বদলের লোভে বৃক্ষ যেমন প্রতি কাণ্ডে থোকা থোকা
পল্লবের বোল মেলে ধরে উড্ডীন পাখির আকারে–
সেরকম বৃষ্টির প্রতীক্ষা নিয়ে সারাবেলা বসে থাকে খাঁখাঁ প্রান্তর। 

ভোর হতে-না-হতেই আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে জমে ওঠে
বৃষ্টিমেঘমালা;
দীর্ঘ অপেক্ষার পর শীর্ণকাণ্ড বৃক্ষসারি ঝুমবরিষনের আশায়
চোখ খুলে হেসে ওঠে– চারপাশ মউলের গন্ধে ছেয়ে যায়;
বৃষ্টির প্রতীক্ষায় থাকে পরিবেশ– তরুসারি– নবীন পল্লব।
ভূপ্রকৃতি বৃষ্টি চায়– কলকল স্রোত– বিপুল বর্ষণ– চায় কোলাহল  
চায় মেঘেদের মেলা আকাশে আকাশে ঝিরি হাওয়ার নাচন।

মেঘেদের সম্ভাবনা বুকে পুষে জেগে থাকে শুষ্ক হাওয়া, রোদ;
বৃষ্টি চায় ঊষর প্রকৃতি, চায় ঝুম বরিষন মেঘের মল্লার; 
বিস্তীর্ণ প্রান্তর আজ মরুর আকার নিয়ে জেগে আছে বৃষ্টির আশায়
গাছপালা শীর্ণ শাখা মেলে তাকিয়ে রয়েছে দূর মেঘে
বৃষ্টির নবছন্দে তৃণগুল্মসারি যেন সরস প্রশাখা খুলে দাঁড়ায়
আবার
বৃষ্টিমেঘের আশ্বাসে– নব সমারোহে– নব কোলাহলে।
তখন উঠবে হেসে শস্যের প্রান্তর নব শিহরণে– 
বাঁধভাঙা কলরোলে নামবে জোয়ার মুগ্ধ ভরবেলা পুরোটা
চাতাল জুড়ে  
নব আনন্দে পুনর্বার– প্রস্ফুটিত হবে স্বপ্নকুঁড়ি প্রান্তরে প্রান্তরে।

 

ব্যাবেল
জুনান নাশিত

ঐক্যের বিপরীতে দাঁড়ালে পাহাড়ের গল্পগুলোও নিচু হয়ে যায়। সূর্যাস্তের যে ছায়া দূরের তেপান্তর ছাড়িয়ে আরও দূর দিগন্তে মিশে যাবে বলে সটান দাঁড়ায়, সেও একদিন দূর্বাঘাসে লটকে থেকে বিন্দুর চোখে অবলীলায় মিলিয়ে যায়। 
ঐক্যের বিপরীতে দাঁড়ালে স্মৃতিগুলো খানখান, যেন তারা শত টুকরার জমিন। ভিন্নতর ব্যাকরণ মেনে পাতাহীন রোদ্দুরের ঝাঁজালো দিনে তুমি দাঁড়াতে পারো একা, তাতে যে ফাটল তাতে যে ব্যাকুল বেদনার নিঃসরণ গাঙ্গেয় দ্বীপজুড়ে বয়ে যাবে, তাকে ঠেকাবে কী দিয়ে?
তারচে এসো,
মৌলিক ভঙ্গিমায় দাঁড়াই
যত্রতত্র অকথ্য শল্যের বীজ
ছড়িয়ে দেওয়ার চেয়ে 
এক হই
একক ও অবিভাজ্যতায় পলির ভেতরে বুনি 
বহু কাঙ্ক্ষিত চেতনার নিঃশব্দ ব্যাবেল।
 

 

আত্মখুন
সঞ্জয় দেওয়ান 

ধূসর ইতিহাসের কানাগলিতে নিঃশব্দে আমার জন্ম
ইতিহাসের সদর দরজায় সযত্নে বেড়ে ওঠা
প্রাচীন মিথের সিঁড়ি বেয়ে আমাকে গ্রহণ করে আদি অন্দরমহল
রাজসিক অঙ্গের মিথুনে
আন্দোলিত হয় কামশয্যা
ঈর্ষার অনলে চৌদ্দ বছর নির্বাসনে পোড়ে যুগল শরীর
ধর্ষকামের ফাঁদে পোড়ে সোনার লঙ্কা
অগ্নিস্নানে ভিজে আমার কৃশ দেহ
সময়ের স্রোতধারা কচুরিপানার মতো ভাসিয়ে নেয় তপোবনে
বারো বছরের অরণ্যবাস দেখায় নতুন পথের দিশা
উপেক্ষার ভার বইতে বইতে আমার শরীর বটবৃক্ষের মতো ভারী, অনড়, নিশ্চল
পুরানের পাতালে আমি সেদিন সত্যি স্বেচ্ছাচারী ছিলাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ