ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করা রুয়েটের ৪ শিক্ষক-কর্মকর্তার গুরুদণ্ড
Published: 6th, March 2025 GMT
জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে থাকা চার শিক্ষক-কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড দিয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)। জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, আন্দোলন দমনে সংশ্লিষ্টতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রুয়েট সিন্ডিকেট।
চারজনের মধ্যে তিনজনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অপরজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন- রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ও রুয়েটের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিদ্ধার্থ শংকর সাহা; প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী ও রুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান নিবিড় এবং পদার্থবিদ্যা বিভাগের ডাটা প্রসেসর ও কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি মো.
এছাড়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক হারুন অর রশিদকেও তার চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ আছে। এছাড়া রুয়েটে নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
রুয়েটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘গত বছরের জুলাই-আগস্টে সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, নির্যাতন-সহিংসতায় সম্পৃক্ততা, আওয়ামী সরকারের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার অভিযোগও আছে এই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে তাদের গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।’’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘‘বরখাস্ত হওয়া রুয়েট কর্মকর্তা নাঈম রহমান নিবিড় ও মহিদুল ইসলাম গত ৪ আগস্ট ধারালো অস্ত্রসহ রুয়েটের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া ও বোমা হামলায় সংশ্লিষ্টতা দৃশ্যমান হয়। আর শিক্ষক সিদ্ধার্থ শংকরকে জুলাইবিরোধী অবস্থান, আন্দোলনে আহত ও নিহতদের অবমাননার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা হয়েছিল। তাকে বরখাস্তের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন এবং প্রশাসনের কাছে আবেদনপত্র দেন।’’
ঢাকা/কেয়া/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত অবস থ ন বরখ স ত
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, পরীক্ষা ১২ এপ্রিল
কৃষি গুচ্ছভুক্ত নয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর গুচ্ছ পদ্ধতির নেতৃত্বে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। এ উপলক্ষে সব কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) রেজিস্ট্রার অফিসের সভা কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন।
তিনি বলেন, “এ বছর নয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র ও ১৩টি উপকেন্দ্রে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা একযোগে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের কমপক্ষে ১ ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে বলা হবে। বিশেষ করে ঢাকায় একই দিনে ‘মার্চ টু গাজা’ কর্মসূচির কারণে সড়কে যানজটের সম্ভাবনা থাকায় সময় নিয়ে বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্র পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাকৃবি ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “এ বছর গুচ্ছ পদ্ধতিতে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বমোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৩টি। এর বিপরীতে ৯৪ হাজার ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী আবেদন করেছে। আবেদনকারীদের মধ্যে ৪৬ হাজার ৯৩২ জন ছাত্র এবং ৪৭ হাজার ৮৮ জন ছাত্রী রয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রতিটি আসনের জন্য প্রতিযোগিতা করছে ২৫ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) নয়টি কেন্দ্রে ও ১৩টি উপকেন্দ্রে বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সম্ভাব্য আগামী ১৫ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম এবং শিক্ষা বিষয়ক শাখার এডিশনাল রেজিস্ট্রার মো. সারওয়ার জাহান।
বাকৃবি কেন্দ্রে নিরাপত্তার বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদারে ভর্তি পরীক্ষার দিন বেলা ১২টার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও পরীক্ষার আগেরদিন রাত থেকে সবগুলো স্থানে বিশেষ করে নদের পাড় এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। সন্ধ্যা ৭টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নদে কোনো নৌকা চলাচল করতে দেওয়া হবে না।”
প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বনের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রশ্নফাঁস যাতে কোনোভাবেই না হয়, সে বিষয়ে সর্বদা নজর রাখা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র প্রতিটি কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে কতদূর এবং কোথায় প্রশ্নপত্র যাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়াও সর্বদা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশের আগে তাদের পুরোপুরিভাবে তল্লাশী করা হবে, যাতে কোনো ডিভাইস বা পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বনের জন্য কোনো উপকরণ তাদের কাছে না থাকে।”
কৃষি গুচ্ছের অওতাভূক্ত নয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী