বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় হাটবাজারের ইজারার দরপত্র দাখিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার দরপত্র দাখিলের শেষ দিনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে দরপত্র দাখিল ঘিরে সাধারণ ইজারাদারদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দরপত্র দাখিল কার্যক্রম স্থগিত করে প্রশাসন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ২০২৬ সালের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত (বাংলা ১৪৩২ সন) এক বছরের জন্য উপজেলার বালুয়া, কাঁচারী, পাকুল্যা, চরপাড়া, করমজা, ভেলুরপাড়া ও হরিখালি—এই সাতটি হাটবাজার ইজারা দিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রশাসন। ঘোষিত শিডিউল অনুযায়ী, আজ বেলা একটা পর্যন্ত প্রথম দফা দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল। এরপর ২০ মার্চ দ্বিতীয় দফা ও ১০ এপ্রিল তৃতীয় দফা দরপত্র দাখিলের দিন ধার্য আছে। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বাধায় দরপত্র কিনেও উপজেলা প্রশাসন চত্বরে রাখা নির্ধারিত বাক্সে ফেলতে পারেননি বলে অভিযোগ সাধারণ ইজারাদারদের।

ইজারা নিতে আগ্রহী এমন কয়েকজন বলেন, আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা ছিল। সকাল থেকেই উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নেন বিএনপি ও যুবদলের নেতারা। পাকুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম দরপত্র দাখিল করতে গেলে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মিজানুর রহমান, বালুয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পাভেল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাজু আহমেদের নেতৃত্বে বাধা দেওয়া হয়। তখন উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে নেতাদের হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা হাটবাজার ইজারা কমিটি মৌখিকভাবে দরপত্র দাখিল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে।

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবদুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, হাটবাজার ইজারার দরপত্র ফেলতে যাওয়া ব্যক্তিদের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল হয়। বিক্ষুব্ধ লোকজন দরপত্র ফেলায় বাধাদানে জড়িত ব্যক্তিদের ধোলাই দিয়েছেন। বাধাদানে জড়িত ব্যক্তিরা বিএনপি ও যুবদলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করায় তাঁরা বিব্রত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইজারা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কাউকে দরপত্র ফেলতে বাধা দেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁরা দরপত্র দাখিল করতে গেলে অচেনা কিছু লোক বিএনপি-যুবদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে।

বালুয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘যারা শিডিউল ফেলতে বাধাদানের অভিযোগ করেছে, তারাই আমাদের শিডিউল ফেলতে বাধা দিয়েছে। বিনা দোষে আমাদের ওপর হামলা ও মারধর করেছে।’

সোনাতলার ইউএনও স্বীকৃতি প্রামাণিকের সরকারি মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইজারা কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দরপত্র দাখিলে বাধাদানের অভিযোগ ওঠায় ইজারা কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী, দরপত্র দাখিলের আরও দুই দিন নির্ধারণ করা আছে। সেই কারণে দরপত্র বাতিলের প্রয়োজন হবে না।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর সোনাতলা পৌরসভার ঢালাই রাস্তা নির্মাণের সাতটি প্যাকেজের প্রায় ৯ কোটি টাকার দরপত্র দাখিলে বাধা ও লাইসেন্স আটকে রেখে নিজেদের মধ্যে কাজ ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠেছিল বিএনপি ও যুবদলের একাংশের নেতাদের বিরুদ্ধে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দরপত র দ খ ল ক দরপত র দ খ ল র র দরপত র য বদল র ব এনপ র শ ড উল র ইজ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার এক কলেজশিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী (১৮) বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন। এজাহারে তিনি বলেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে ‘ক্রনিক ধর্ষণ’ করেছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সাজিদ হাসান। তিনি দামুড়হুদা উপজেলা সদরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাজিদ হাসান শিক্ষকতার পাশাপাশি শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ান। ভুক্তভোগী ছাত্রী ২০২০ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাজিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এইচএসসি পাসের পর তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে বিয়ের কথা বলে সাজিদ হাসান ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ছাত্রী বিয়ের কথা বললে তিনি নানা টালবাহানা করে এড়িয়ে যান।

সাজিদ হাসানের সহকর্মীরা জানিয়েছেন, সাজিদ বিবাহিত। তাঁর ৯ ও ৬ বছর বয়সী দুটি মেয়ে আছে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কখনো দামুড়হুদা, কখনো দর্শনায় বসবাস করেন।

গতকাল রাতে মামলার খবর জানাজানি হলে অভিযুক্ত প্রভাষক সাজিদ হাসান আত্মগোপনে চলে যান। অভিযোগের বিষয়ে জানতে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সাজিদ হাসান যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, সেটার অধ্যক্ষ প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তিনি বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্রকে জানিয়েছেন।

ইউএনও তিথি মিত্র বলেন, মামলার বিষয়টি জানার পর প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং আজকেই জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গরুর হাট বসাতে শ্মশান ভরাট
  • দিনাজপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২০০ বস্তা চাল জব্দ
  • দিনাজপুরে চালকলের গুদামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫ হাজার কেজি চাল জব্দ
  • পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুটের অভিযোগ
  • লোডশেডিং সীমিত রাখার চেষ্টা করা হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা
  • ধামরাইয়ে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত
  • শ্রীপুরে বনের জমি উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান
  • সড়কে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ, নির্মাণকাজ আটকে দিলেন ইউএনও
  • গাজীপুরে বনভূমি থেকে ৫৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
  • চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা