তেহরানে ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ সন্ধ্যায় মালয়েশিয়াকে ৫২-১২ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে আজই দুপুরে প্রথম ম্যাচে টুর্নামেন্টে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬৪-২৩ পয়েন্টে।

মালয়েশিয়া তাদের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে ৪৫-২৪ পয়েন্টে হেরেছে। টানা দুই হারে সেমিফাইনালের লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে মালয়েশিয়া। অন্যদিকে দুই ম্যাচে এক জয়ে শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে আছে লাল–সবুজের মেয়েরা। সাত বছর পর শুরু হওয়া এশিয়ান নারী কাবাডিতে ব্রোঞ্জ পদকের আশা নিয়ে তেহরান গেছে বাংলাদেশ।

মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে ২৭ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের, মালয়েশিয়ার পাঁচ। দ্বিতীয়ার্ধেও একতরফা খেলেছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া কোনোমতে দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছে।

আগামীকাল শুক্রবার গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বেলা দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সাত দলের টুর্নামেন্টে  ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক ইরান, নেপাল ও ইরাক।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ পাঁচবার হয়েছে। চারবারই চ্যাম্পিয়ন ভারত। একবার দক্ষিণ কোরিয়া। ২০০৫ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট আর ২০০৮ সালে তৃতীয় টুর্নামেন্টে খেলেছে বাংলাদেশ। প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পায়। ২০০৭, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি।

ইরানের নিয়ম অনুযায়ী, নারীদের ম্যাচে কোনো পুরুষ থাকতে পারেন না। সে হিসেবে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার সুবিমল দাস (মূলত কোচ) ছিলেন অডিটরিয়ামের বাইরে। কোচ হিসেবে ডাগআউটে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের হয়ে দুটি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা শাহনাজ পারভীন মালেকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা আইসিসিতে পাঠানোর আহ্বান টবি ক্যাডম্যানের

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মামলা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান।

বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইউক্রেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই আইন বিশেষজ্ঞ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি এই সুপারিশ তুলে ধরেন। খবর বাসসের

বৈঠকে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সহযোগিতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এছাড়া বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর ছত্রছায়ায় থাকা অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিপূরক বিচারব্যবস্থার আওতায় আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বৈঠকের শুরুতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) কার্যক্রমের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাইব্যুনালটি পূর্ববর্তী সরকার, বিশেষত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত নৃশংসতার বিচার করছে।

বৈঠকে বিভিন্ন আইনি কাঠামো, নতুন সংযোজন ও অতীতের স্বৈরাচারী শাসন থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জি৩৭ চেম্বার্সের প্রধান টবি ক্যাডম্যান আইসিটির আইনি ও বিধিবদ্ধ কাঠামো সংশোধনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করা দরকার যাতে এটি আগের স্বৈরাচারী শাসনের ধারাবাহিকতা মনে না করা হয়।

এছাড়া মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত বিষয় ও প্রমাণ গ্রহণের নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার বিষয়েও আলোচনা হয়, যাতে ন্যায়বিচার ও সুবিচারের সর্বোচ্চ মান বজায় থাকে।

ড. ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তাদের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'বিশ্বের জানা উচিত এক হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী, বিক্ষোভকারী ও শ্রমিকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল কে এবং মূল অপরাধীরা কারা। জাতিসংঘের তদন্ত দল শেখ হাসিনা সরকারের আসল চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন আমাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।'

বৈঠকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও চুরি হওয়া সম্পদ উদ্ধারের পদক্ষেপ, আইসিটি ও প্রসিকিউশন টিমের সম্পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা, সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদান, অভিযুক্তদের জন্য সুবিচার নিশ্চিতে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়া আগের সরকারের আমলে লুট হওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ