বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিরত রাখা হয়েছে : রাজিব
Published: 6th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেছেন, বাংলাদেশের একটি প্রজন্মকে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস থেকে তাদেরকে বিচ্যুত করা হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিরত রাখা হয়েছে।
আমরা চাই আগামী দিনে সঠিক ইতিহাস এটা কোন ব্যক্তিগত, যেটা আগে ভুল যারা করেছেন সেটা যেনো আর না হয়। আগামী দিনে যাতে ছাত্রছাত্রীরা সঠিক ইতিহাসটা জানে। সেটা পাঠ-পুস্তকের মধ্যে হোক কিংবা পরিবেশের মধ্যে হোক। দেখা গিয়েছিল এখানে যারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিল তারা সঠিক শিক্ষাটা প্রদর্শন না করে সেখানে তারা দলীয় লেজুর ভিত্তিক করতে অনেকে বেশি স্বাচ্ছন্ন বোধ করতেন। সেই বিষয়টি থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতিমূলক সভায় বক্তব্যেকালে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের এখানে যারা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন রয়েছেন ২০২৪ এর শহীদদের যেই আত্মত্যাগ রয়েছে তাদের যে স্বপ্ন রয়েছে নতুন রূপে বাংলাদেশকে দেখার যে স্বপ্ন সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য আপনারা যেমন পরিশ্রম করছেন ঠিক একইভাবে আপনারা যারা রাজনৈতিক দলের কর্মী রয়েছি আমরা আপনাদের কাঁধে কাঁধ রেখে সেটাকে বাস্তবায়ন করতে চাই।
আমাদের সকলের সাথে সকলের সহমর্মিতা ও সবার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দেখেছি জাতীয় দিবসগুলোতে অনেক সময় ব্যক্তিগত বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়। নিজের আইডেন্টিকে তুলে ধরা হয়। সুতরাং আমাদের মনে রাখতে হবে জাতীয় দিবস গুলো সবার, সবাই যাতে এখানে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দায়িত্ব।
বিভিন্ন মতামতা দর্শের পার্থক্য থাকবে বিভিন্ন দলের মতোপার্থক্য থাকবে। এক সময় এখানে যেটা করা যায় নাই, এখন কিন্তু আমরা নতুন বাংলাদেশ রূপে দেখতে চাই এখন যদি আমরা পূর্বের জিনিসগুলো আবারও নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এটা কিন্তু কারোই কাম্য না।
তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের তাকে বারে বারে আসি কারণ আমরা নারায়ণগঞ্জকে ভালবাসি। সবার আগে দেশ এবং দেশের জনগণ আগে। আমরা নারায়ণগঞ্জ থাকি সবার আগে নারায়ণগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জের মানুষ। নারায়ণগঞ্জে যে কোন বিষয় যেমন একজন রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসাবে স্বাচ্ছন্ন বোধ করি অন্য দলের নেতাকর্মীরাও নারায়ণগঞ্জে ভালোবাসেন এবং নারায়ণগঞ্জের সুনাম যেন সবার উপরে থাকে সে প্রত্যাশা আমাদের সকলের মাঝে আছে।
একটি আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলতে আমরা যেন সকল ভেদাভেদ বলে রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী রয়েছি এবং প্রশাসনে কর্মকর্তারা মানুষের যে প্রত্যাশাটা রয়েছে আমরা যেন সেইভাবে সফলতার সঙ্গে কাজ করতে পারি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন থানা কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী-চিহ্নিত অপরাধীরা
নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আওতাধীন সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে বিতর্কিতরা স্থান পেয়েছে। বিশেষ করে সদর থানা কমিটিতে রড চোর ও মাদক ব্যবসায়ীদের স্থান দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শাখাওয়াত ইসলাম রানা ও সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু।
রানা একাধিকবার মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে পরিবহন সন্ত্রাসেরও অভিযোগ রয়েছে। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল সদর থাকা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও বন্দর উপজেলা শাখার ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয়।
জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক ও মাহবুব হাসান জুলহাসকে সদস্য সচিব করে সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হয়। এই কমিটির চার নম্বর যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল শেখ দুই বছর আগে রড চোরের দায়ে এলাকাবাসীর কাছে আটক হয়েছিলেন।
সেই ভিডিও এখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়েরও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে অর্থের বিনিময়ে জুয়েলকে কমিটিতে পদ দিয়েছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রানা। এই কমিটির ছয় নাম্বার সদস্য নুরুজ্জামান টনি কুখ্যাত সন্ত্রাসী আজমীর ওসমানের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে ১৮নং ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসারও অভিযোগ রয়েছে। তাকে সদর থানার সদস্য করার পাশাপাশি ১৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি করতে চাইছেন রানা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও বন্দর উপজেলা কমিটি নিয়েও বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বন্দর উপজেলা আহবায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক মোবরক মাহমুদ পবন গত বছর এক হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম, বন্দর উপজেলার ৯ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মস্তান ও সদস্য মো. নুরুল ইসলাম খানের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এতে দেখা যায় একটি পোস্টারে ২১শে ফেব্রুয়ারির শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান শামসুল আলম। তাতে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও জয়ের ছবি রয়েছে। এ ছাড়াও সেই পোস্টারে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়ার ছবি রয়েছে।
অন্যদিকে বন্দর উপজেলা কমিটিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে তোলা নুর মস্তান ও মো. নুরুল ইসলাম খানের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম খান এবং বন্দর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নূর মস্তানকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে তারা। এতেও দমানো যাচ্ছে না শাখাওয়াত হোসেন রানাকে।
জানাগাছে, বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটিতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের স্থান দিতে উঠে পরে লেগেছেন তিনি। রানা নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টরগুলোতে ওসমানদের মতই মাফিয়া রূপে আবির্ভাব হচ্ছেন। এসব সেক্টরগুলোকে দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। যতই দিন যাচ্ছে, ততই রাজনৈতিক বেপরোয়া হয়ে উঠছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের এ নেতা।
গত ৫ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত রানার বিরুদ্ধে ডজন ডজন অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে থানাও বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসারও অভিযোগ করেছে। এর আগে কমপক্ষে দুইবার মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রানা। বিস্তর অভিযোগ থাকার পরেও থানা পুলিশ কোন এক রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে দেখা যাচ্ছে না। তাই নানা অপকর্ম করেও বহাল থাকছেন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ বিএনপির বেশির নেতাকর্মীকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে মাদকের মামলায় ফাসিয়েছে। রানার বিষয়টিও তেমন। তবে কারো বিরুদ্ধে যদি এসব অভিযোগ প্রমানিত হয় হাতলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিবো। কারো অপরাদের দায় স্বেচ্ছাসেবক দল নিবে না।
তথ্য সূত্র: মানবজমিন