ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে উত্ত্যক্তকারী মোস্তফা আসিফকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিন দেওয়ায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের পদত্যাগ দাবি করেছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো. আনিছুর রহমান ও সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ড.

আসিফ নজরুল আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, অপরাধী ও উগ্র উত্ত্যক্তকারী একের পর এক জামিনে মুক্তি পাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুসলিম ছাত্রীকে উত্ত্যক্তকারী মোস্তফা আসিফকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এই আসামি ওই ছাত্রীর পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী এ নিয়ে প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট দেন এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ

ঢাবিতে নির্মাণ হবে নতুন ১০টি আবাসিক হল

শিক্ষার্থীরা আসামি আসিফকে আটক করে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করলে সেখানে তিনি সবার সামনে হেনস্তার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আসামি আসিফকে মুক্ত করতে শাহবাগ থানায় একদল উগ্রপন্থী উপস্থিত হয়ে অন্তত ৮ ঘণ্টা অবস্থান করে।

পরবর্তীতে দেখা যায় হেনস্তার শিকার ছাত্রী মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং আসামি আসিফ জামিনে মুক্তি পান। তখন তাকে ফুলের মালা পরিয়ে কোরআন হাতে ধরিয়ে উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, যা ঘটেছে তা পূর্ব পরিকল্পিত নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, পূর্ব পরিকল্পিত নাটকের প্রধান এপিসোড হলো- উগ্রপন্থীদের দাবির মুখে অজামিনযোগ্য মামলায় দ্রুততার সঙ্গে আসামিকে জামিন প্রদান এবং উগ্রপন্থীদের উল্লাস। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এর দায় কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।

এ পরিস্থিতিকে উগ্রপন্থা ছড়িয়ে মুসলমানদের হত্যাযোগ্য করার গভীর নীল নকশার অংশ দাবি করে এর নেপথ্যে আসিফ নজরুলের ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর আগে হত্যার ভিডিও পাওয়া গেছে: ট্রাইব্যুনালকে প্রসিকিউশন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৫ মে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ সোমবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আজ এই মামলাটি ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকার দুই নম্বরে ছিল। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল আজ। তবে আজ শুনানিতে প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালকে বলা হয়, লাশ পোড়ানোর আগে হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে।

শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের একটি নতুন ভিডিও পাওয়া গেছে। তাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও এক মাস সময় প্রয়োজন।

পরে ট্রাইব্যুনাল সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মে তারিখ ধার্য করেন।

মামলার আসামি হিসেবে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, সাবেক উপপরিদর্শক মালেক ও সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদারকে আজ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

শুনানি শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনের সময়ের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেটা যাচাইবাছাই করা হচ্ছে।

মিজানুল ইসলাম আরও বলেন, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন আজ ধার্য ছিল। তাঁরা যখন তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করছিলেন, সেই মুহূর্তে হঠাৎ করে একটা তথ্য আসে। তাঁরা একটা ভিডিও শনাক্ত করতে পেরেছেন। তাঁরা উদ্ধারও করেছেন। এতে দেখা গেছে যে, এইখানে (আশুলিয়ায়) কারা কীভাবে হত্যা করেছেন। সেই বিষয়টা তাঁদের সামনে এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত সমাপ্ত করার জন্য কিছুদিন সময় দরকার।

এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সব মিলিয়ে সময়ক্ষেপণ হয়ে যাচ্ছে নাকি? একটি ভিডিও একেবারে শেষের দিকে এসে পেলেন, ৮ মাস পেলেন না। এর ব্যাখ্যা কী?

আরও পড়ুনআশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত গ্রেপ্তার১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত একটা চলমান প্রক্রিয়া। এখন কোনো তথ্য যদি আমাদের সামনে আসে নতুন করে, সেই তথ্য ইগনোর (উপেক্ষা) করে তো আমরা তদন্ত রিপোর্ট (প্রতিবেদন) দাখিল করতে পারব না। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্টের জন্য এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই সময়টা প্রয়োজন। এটা বিচারকে বিলম্বিত করার জন্য না, ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’

আরও পড়ুনআশুলিয়ায় ভ্যানে লাশ পোড়ানো: সাবেক এমপি সাইফুল ও চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ