ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় একটি বাড়িতে কালো ডিম পাড়ছে একটি পাতিহাঁস। কয়েক দিন ধরে উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের সরদারডাঙ্গী মহল্লার বাসিন্দা ইয়াসিন সরদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ব্যতিক্রমী ডিম দেখতে ইয়াসিন সরদারের বাড়িতে ভিড় করেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা।

ইয়াসিন সরদার জানান, বছরখানেক আগে পাশের বাড়ি থেকে ছয়টি হাঁসের বাচ্চা কেনেন তিনি। ইতিমধ্যে বাচ্চাগুলো বড় হয়ে ডিম দিতে শুরু করে। সবগুলো হাঁস সাদা রঙের ডিম দিলেও একটি হাঁস হঠাৎ করে কালো রঙের ডিম পাড়া শুরু করে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে কালো ডিম দেখে আমরা অবাক হয়ে যাই। সাধারণত এমন ঘটনা ঘটে না। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ মেনে আমরা কালো রঙের ডিম খাওয়া শুরু করি।’

ইয়াসিন সরদার বলেন, ‘প্রথম দিন কালো ডিম দেখে সাপের ডিম ভেবে না খেয়ে রেখে দিয়েছিলাম। তবে একই হাঁস পরপর একাধিক কালো ডিম দেওয়ায় আমরা নিশ্চিত হই, এটি সাপ বা অন্য কোনো প্রাণীর ডিম না। প্রথম কয়েক দিন একেবারে কালো ডিম দেয়। সপ্তাহখানেক পর ডিমের রং ধূসর হতে শুরু করে। এখন হাঁসটি ডিম পাড়া বন্ধ রেখেছে।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সব্যসাচী মজুমদার বলেন, জেনেটিক কারণে হাঁসের ডিমের রং কালো হতে পারে। তবে ডিম খেতে কোনো সমস্যা নেই। রঙের জন্য ডিমের পুষ্টিগুণে কোনো প্রভাব পড়ে না। এটি বিরল হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা আইসিসিতে পাঠানোর আহ্বান টবি ক্যাডম্যানের

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মামলা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান।

বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইউক্রেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই আইন বিশেষজ্ঞ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি এই সুপারিশ তুলে ধরেন। খবর বাসসের

বৈঠকে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সহযোগিতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এছাড়া বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর ছত্রছায়ায় থাকা অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিপূরক বিচারব্যবস্থার আওতায় আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বৈঠকের শুরুতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) কার্যক্রমের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাইব্যুনালটি পূর্ববর্তী সরকার, বিশেষত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত নৃশংসতার বিচার করছে।

বৈঠকে বিভিন্ন আইনি কাঠামো, নতুন সংযোজন ও অতীতের স্বৈরাচারী শাসন থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জি৩৭ চেম্বার্সের প্রধান টবি ক্যাডম্যান আইসিটির আইনি ও বিধিবদ্ধ কাঠামো সংশোধনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করা দরকার যাতে এটি আগের স্বৈরাচারী শাসনের ধারাবাহিকতা মনে না করা হয়।

এছাড়া মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত বিষয় ও প্রমাণ গ্রহণের নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার বিষয়েও আলোচনা হয়, যাতে ন্যায়বিচার ও সুবিচারের সর্বোচ্চ মান বজায় থাকে।

ড. ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তাদের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'বিশ্বের জানা উচিত এক হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী, বিক্ষোভকারী ও শ্রমিকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল কে এবং মূল অপরাধীরা কারা। জাতিসংঘের তদন্ত দল শেখ হাসিনা সরকারের আসল চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন আমাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।'

বৈঠকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও চুরি হওয়া সম্পদ উদ্ধারের পদক্ষেপ, আইসিটি ও প্রসিকিউশন টিমের সম্পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা, সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদান, অভিযুক্তদের জন্য সুবিচার নিশ্চিতে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়া আগের সরকারের আমলে লুট হওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ