রাশিয়ার সাথে সংঘাতের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আসা প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয়ের অস্থায়ী আইনি মর্যাদা বাতিল করার পরিকল্পনা করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ট্রাম্পের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং বিষয়টির সাথে পরিচিত তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, এসব ব্যক্তিকে সম্ভবত তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এপ্রিলের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে ইউক্রেনীয়দের যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগত জানানো হয়েছিল তার পুরো বিপরীত চিত্র দেখাতে যাচ্ছে এবার ট্রাম্প প্রশাসন।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে  ট্রাম্পের প্রকাশ্যে বিবাদের আগে ইউক্রেনীয়দের জন্য সুরক্ষা প্রত্যাহারের পরিকল্পিত প্রক্রিয়া চলছিল। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যাতে ১৮ লাখেরও বেশি অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি বাতিল করা হয়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বরাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বিভাগের কোনো ঘোষণা নেই। হোয়াইট হাউস এবং ইউক্রেনীয় দূতাবাস রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

২০ জানুয়ারি জারি করা ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ‘সব স্পষ্ট প্যারোল কর্মসূচি বন্ধ করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পের কর্মকর্তা এবং বিষয়টির সাথে পরিচিত এক সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসন চলতি মাসের মধ্যেই প্রায় পাঁচ লাখ ৩০ হাজার কিউবান, হাইতিয়ান, নিকারাগুয়ান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকের প্যারোল প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছে। 

রয়টার্সের দেখা একটি অভ্যন্তরীণ আইসিই ইমেল অনুসারে, প্যারোল স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া অভিবাসীদের দ্রুত নির্বাসন প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী অভিবাসীদের প্রবেশের পর দুই বছরের জন্য দ্রুত নির্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা যেতে পারে, যাকে দ্রুত অপসারণ বলা হয়। 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

সংশোধন হন, না হলে সালথা ছাড়েন

ফরিদপুরের সালথায় নারী দিবস উপলক্ষে নেতাদের খামছাড়া চিঠি দেওয়ায় সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন করে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওয়ালি উজ জামান নামের কর্মী সালথা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা ডলিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে সংশোধন হতে বলেন। সেটি সম্ভব না হলে তাঁকে সালথা ছাড়তে বলেন।

স্থানীয়রা জানান, ওয়ালি উজ জামান উপজেলা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। সালথা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্কয়ার প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

ফেরদৌস আরা বলেন, নারী দিবস উপলক্ষে রাজনীতিকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। লোকবল সংকটে জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতার নামে চিঠি ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী নিতাইয়ের মাধ্যমে ওয়ালি উজ জামানের দোকানে পাঠানো হয়। ব্যস্ততার কারণে চিঠিটি খামে দেওয়া হয়নি। খামছাড়া চিঠি পেয়ে ওয়ালি উজ জামান তাৎক্ষণিক নিতাইকে হেনস্তা করেন। পরে আমাকে ফোন দিয়ে ধমকান।

জামায়াতের ওই কর্মীর কেন খামছাড়া চিঠি দেওয়া হয়েছে– উচ্চ স্বরে জানতে চান। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, কোন জিনিস কীভাবে পাঠাতে হয়, বুঝতে পারেন না? নেতাদের চিঠি খামে ভরে দিতে হয়। খামের টাকা নাই? বরাদ্দের টাকা যায় কোথায়? বিল-ভাউচার এতদিন যা খাইছেন, এখন বুঝেশুনে খাইয়েন।

ফেরদৌস আরা এসব কেন বলছেন– জানতে চাইলে ওয়ালি উজ জামান বলেন, ‘যা বলছি, ভালো করেই বলছি। ভদ্রলোকের মতো চিঠি পাঠাবেন। আপনি ইউএনওকে অভিযোগ করতে পারেন।’

কর্মকর্তার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি সংশোধন হয়ে যান। আওয়ামী লীগের সময় অনেক খাইছেন। আওয়ামী লীগের ভয় দেখিয়ে অনেক মানুষকে ল্যাংটা করেছেন। চেয়ারম্যানদেরও ল্যাংটা করেছেন। এখন ভালো হয়ে যান। সম্ভব না হলে সালথা ছাড়েন।’ তখন ফেরদৌস আরা জানান, তিনি ডিপার্টমেন্টের ইচ্ছায় সালথা আছেন। এবার জামায়াত কর্মী বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের; এটি আপনার বাজানের না।’

জানতে চাইলে ওয়ালি উজ জামান সমকালকে বলেন, ‘আমি কোনো দলের নই। উপজেলা জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারির খামছাড়া চিঠি দোকানে দিতে আসায় সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। ধমক দিইনি। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনিই শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছেন। তা ছাড়া ফেরদৌস আরা আওয়ামী লীগের দোসর। বিগত আমলে ক্ষমতা দেখিয়ে প্রতিদিন দুপুর ২টার পর অফিস করতেন।’

জামায়াতের উপজেলা আমির আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ইউএনও বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। ধমকাননি, তিনি জানতে চেয়েছিলেন। তার পরও বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব। তবে চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ভদ্রতা থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সালথার ইউএনও আনিছুর রহমান বালি জানান, মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ