মেট্রোরেলে নারীদের কোচে উঠে পড়া পুরুষ যাত্রীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল থেকে উত্তরাগামী ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে নিলুফার পারভিন মিতু নামে এক যাত্রী ফেসবুকে বিষয়টি তুলে ধরেন, যা নজরে এসেছে মেট্রোরেল পরিচালনা কর্তৃপক্ষেরও। বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

পেশায় চিকিৎসক নিলুফার পারভিন ‘বাংলাদেশ মেট্রোরেলওয়ে ইনফরমেশন’ নামে ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, ‘বুধবার বিকেলে তিনি মেট্রোরেলে উঠেছিলেন ফার্মগেট স্টেশন থেকে। নারীদের জন্য সংরক্ষিত একমাত্র বগিতে ১০-১২জন পুরুষ ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে তারা এক শিশুসহ নারীদের শ্লীলতাহানি করেন।’

ঘটনার বর্ণনায় নিলুফার বলেন, ‘ফার্মগেট স্টেশন ছাড়ার পর এক নারী কাঁদতে কাঁদতে দরজার দিকে এসে ট্রেন থেকে বের হওয়ার জায়গা দিতে বলেন। সে সময় কারণ জানতে চাইলে ওই নারী ও তার শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা জানান।’

নিলুফার আরও বলেন, ‘ওই নারী বলছিলেন, তার মেয়ে ও তাকে বাজেভাবে অ্যাবিউজ করা হয়েছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি নারীদের কামরায় কীভাবে সম্ভব। পরে ওই নারী পেছনের দিকে দেখেন, সেখানে ১০-১২ পুরুষ যাত্রী ছিল। তারাই মেয়েদের হয়রানি করছিলেন।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রভা মাহবুব বলেন, ‘কারওয়ানবাজার থেকে ট্রেনে ওঠার পর তিনি ওই বগিতে কয়েকজন পুরুষকে দেখতে পান। ফার্মগেট স্টেশন পার হওয়ার পর একটি মেয়ে চিৎকার করে উঠলে তার মা বিষয়টি নিয়ে অন্যদের কাছে নালিশ করেন। ওই ঘটনার পরপর বাচ্চাটির মা-ও কান্নাকাটি শুরু করেন। তখন সবাই মিলে ওই বগি থেকে পুরুষদের নেমে যেতে বলেন। আগারগাঁও থেকে দু–তিনজন করে তারা নেমে গেছেন, সবার শেষে মিরপুর ১০ নম্বরে যারা ছিলেন, তাদেরকে অন্য কম্পার্টমেন্টে পাঠানো হয়।’

ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তায় গত তিন দিন ধরে পুলিশ আছে। বিষয়টি জানার পর ইনভেস্টিগেশন করছি। তবে কোন স্টেশনের ঘটনা, কোন স্টেশনে গিয়ে উনারা অভিযোগ করেছেন, সেটা পোস্টে না থাকায় বিস্তারিত জানতে পারছি না। তারা যদি যোগাযোগ করে তাহলে হয়ত পুরো বিষয়টি জানা যাবে। এ নিয়ে এমআরটি পুলিশের ডিআইজির সঙ্গেও কথা বলেছি।’

নারীদের কামরায় পুরুষ ওঠা নিষেধের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এরপরও তা না মানা দুঃখজনক। এটা মেনে চলা উচিত। কিন্তু অনেকের ক্যারেক্টারই হয়ে গেছে আইন অমান্য করা। এমন হলে কীভাবে চেইঞ্জ করব! মেট্রোরেলে পুলিশ এরই মধ্যে দায়িত্ব পালন করছে। তারা যেন নারীদের নির্ধারিত কামরার পাশের কামরায় অবস্থান করেন সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

তৃতীয় পক্ষের অ্যাপে মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং

বিকাশের মতো তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মে উচ্চ মূল্যে মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। ‘মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং: এ কল ফর রেগুলেটরি অডিট অ্যান্ড কনজিউমার প্রোটেকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোবাইল অপারেটর অ্যাপে তালিকাভুক্ত দাম এবং বাহ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে চার্জ করা মূল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এ তথ্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাকেজগুলো অনুমোদিত মূল্যের চেয়ে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি হারে বিক্রি হয়েছিল। মোবাইল অপারেটরের নিজস্ব অ্যাপে ৩০ দিনের ৪৫ জিবি ডেটা প্যাকের দাম ছিল ৪৯৭ টাকা, কিন্তু একই প্যাকটি বিকাশের মাধ্যমে ৫৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি।

১৯৮ টাকায় তালিকাভুক্ত একটি ৭ দিনের ২৫ জিবি প্যাক বিকাশের মাধ্যমে একই দামে ২০ জিবি প্যাক হিসাবে বিক্রি হয়েছিল, যা ৮০ শতাংশ ওভারচার্জ।

২২৭ টাকা মূল্যের একটি সাত দিনের ৪০ জিবি প্যাক বিকাশে একই মূল্যের জন্য ৩৫ জিবি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিত্তি মূল্যের তুলনায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি।

৭  দিনের ১০ জিবি এবং ৩-দিনের ৫ জিবি বিকল্পগুলোসহ অন্যান্য প্যাকেজগুলোও ৫৫ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জে বিক্রি হয়েছে।
ফয়েজ আহমেদ লেখেন, বিটিআরসিতে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের অধীনে একটি সুষ্পষ্ট প্রাইসিং রেগুলেশন রয়েছে। তার তোয়াক্কা না করে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাক্কলন অতিরিক্ত মূল্য আদায় গ্রাহকস্বার্থ ও রাষ্ট্রের সার্বিক স্বার্থবিরোধী বলেই বিবেচিত হওয়া উচিত। বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের রেগুলেটরি শাস্তির মুখোমুখি করা দরকার বলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ