সম্প্রতি গুলশানের এক বাসায় মব করে তল্লাশির নামে তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। একই দিন দুপুরে মব করে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজনকে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে এ দুই বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার এবং হাসপাতালে ভর্তি করে। এর আগের দিন সোমবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণার পর পিটুনিতে দুজন নিহত হন। এসব ঘটনা উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি দ্বিমত করব না, হচ্ছে। তবে যেখানে হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পুলিশের ওপরেও হামলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণ এমন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে অনেক সময় কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সব সময় কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করা যায় না।’ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

গত ছয় মাসে মব জাস্টিস কমছে না। বাসা-বাড়িতে ঢুকে মব জাস্টিসসহ বিদেশিদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের কন্ট্রোল করার জন্য মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন যেমন বড় ভূমিকা পালন করেন, এক্ষেত্রে আপনাদেরও (সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে মব জাস্টিসের মতো ঘটনা না ঘটে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর আছে। যে জায়গায় (মব) হচ্ছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা (মব জাস্টিস) না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বাসা-বাড়িতে হুট করে অভিযানের নামে লুটপাটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো অভিযান চালানোর কারও এখতিয়ার নেই।

মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি হচ্ছে, সামনে ঈদ। কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে যেন না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মহাসড়কে ডাকাতির রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী জোনেই ডাকাতির সংখ্যাটা একটু বেশি, টাঙ্গাইলেও একটুখানি বেশি। ডাকাতি যেন না হয় সেজন্য ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা আগের চেয়ে অনেক তৎপর হচ্ছে।

ঈদে চাঁদাবাজির বিষয়ে এক প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ঈদে চাঁদাবাজি যেন না হয় এবং ছিনতাই যেন না হয়- এজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের নিজেদের কোনো থানার জায়গা নেই, ভাড়া ভবনে থাকছে তারা। পাশাপাশি যানবাহনেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যেই ট্যুরিস্ট পুলিশ ভালো কাজ করে যাচ্ছে।

আমাদের দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় হলে বিদেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে আসবে। অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে বলেও উল্লেখ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র মব জ স ট স

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জেএসডির বৈঠক

সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির বৈঠক হয়েছে। 

রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের এল. ডি. হলে এই বৈঠক হয়ে বলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সাংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য দেওয়া হয়েছে।

জেএসডির সঙ্গে আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে। জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণতা দিতে রাষ্ট্র সংস্কার দরকার।

“গত ৫৩ বছর ধরে আমরা এমন শাসন ব্যবস্থা দেখেছি, যা ফ্যাসিবাদ তৈরি করতে পারে। এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন,” যোগ করেন তিনি।

জেএসডি'র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে দলটির সিনিয়র সভাপতি তানিয়া রব, অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, অ্যাডভোকেট কে এম জাবির, মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী এবং ডা. হেলালুজ্জামান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। 

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালার ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত  ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ১৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।

ঢাকা/এএএস/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার ভালো সমাধান
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতেই থাকবে?
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জেএসডির বৈঠক
  • পুনর্বহালের দাবি জানালেন অপসারিত কাউন্সিলররা
  • আমরা জুলুম করে রাজনীতি করতে চাই না : নাহিদ ইসলামের বাবা 
  • ‘সিন্ধু দিয়ে হয় আমাদের পানি, নয় তাদের রক্ত বইবে’, ভারতকে বিলাওয়ালের হুঁশিয়ারি
  • সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
  • প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা জরুরি
  • অজ্ঞাত স্থানে বসে পরিষদ চালান ৩ চেয়ারম্যান
  • সৌদি আরবে ‘চীনের প্রভাব ঠেকাতে’ তৎপর ট্রাম্প, দিচ্ছেন অস্ত্রের বিরাট চালান