আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারো অভিযান চালানোর অধিকার নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 6th, March 2025 GMT
ঈদে সড়কে চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারো অভিযান চালানোর কোনো অধিকার নেই। মব জাস্টিসের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটলে, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘মব জাস্টিসের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে যেন সড়কে চাঁদাবাজি, ছিনতাই না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’
জনবল ঘাটতিসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের সমস্যাসমূহ সমাধানের মাধ্যমে এটিকে আরো সক্রিয় করা গেলে পর্যটন খাত তথা দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এটি বড় অবদান রাখবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে। তাদের নিজস্ব কোনো থাকার জায়গা নেই। যানবাহনের সমস্যাসহ আরো কিছু সমস্যা রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তর একটা ভাড়া ভবনে অফিস পরিচালনা করছে। তাদের নিজস্ব ভবন দরকার। তা সত্ত্বেও তারা কিছু ভালো কাজ করছে। সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশকে আরো সক্রিয় করা গেলে অনেক বেশি বিদেশি পর্যটক আমাদের দেশে আসবে।’’
‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা অনেক কম হলেও ট্যুরিস্ট স্পটের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই তাদের জনবল বাড়ানো দরকার’’ বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে, উপদেষ্টা ট্যুরিস্ট পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মাইনুল হাসান। সভায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি পাওয়ার-পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আণবিক অস্ত্রে এগিয়ে পাকিস্তান, সার্বিক সক্ষমতায় ভারত
জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে গত মঙ্গলবার বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী এখন আলোচনায়। মালয়েশিয়াভিত্তিক ‘ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া’ শুক্রবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক (জিএফপি) ২০২৫’ অনুসারে করা ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে আছে পাকিস্তান। তবে সার্বিক সক্ষমতায় ভারত বেশি শক্তিশালী।
কাশ্মীরে হামলায় পাকিস্তানের মদদ থাকার অভিযোগ তুলে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। দেশটির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তানও। এমন প্রেক্ষাপটে দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়েছে।
জিএফপি সূচকে জনশক্তি, সামরিক সরঞ্জাম, অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক অবস্থাসহ ৬০টির বেশি বিষয়ের ভিত্তিতে ১৪৫টি দেশকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। সামগ্রিক র্যািঙ্কিংয়ে ভারত বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ ও সক্ষমতা সূচকে স্কোর ০ দশমিক ১১৮৪ (কম স্কোর মানে বেশি শক্তিশালী সেনাবাহিনী)। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান বিশ্বে ১২তম ও স্কোর ০ দশমিক ২৫১৩।
র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের এ অবস্থান দেশটির বড় জনসংখ্যা, বৃহত্তর প্রতিরক্ষা বাজেট ও বিস্তৃত পরিসরের সামরিক সম্পদের প্রতিফলন। অন্যদিকে, পাকিস্তান ছোট অর্থনীতির কারণে নানা সীমাবদ্ধতা ও বৈদেশিক সরবরাহকারী, বিশেষ করে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা সত্ত্বেও ভারতকে মোকাবিলায় কৌশলগত বিষয়গুলোয় মনোযোগী। ফলে নির্দিষ্ট খাতগুলোয় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে দেশটি।
সামরিক-বেসামরিক জনশক্তির দিক দিয়েও ভারত এগিয়ে রয়েছে। ভারতের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪০ কোটি, যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। সক্রিয় জনশক্তি ৬৬ কোটি ২০ লাখ ও সক্রিয় সেনা ১৪ লাখ ৬০ হাজার, যা বিশ্বে দ্বিতীয়। এ ছাড়া রিজার্ভ সেনা রয়েছে ১১ লাখ ৬০ হাজার (বিশ্বে সপ্তম)। আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য ২৫ লাখ ৩০ হাজার (বিশ্বে দ্বিতীয়)। মোট সামরিক (সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনী) জনবল ৫১ লাখ।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের জনসংখ্যা ২৫ কোটি ২০ লাখ (বিশ্বে পঞ্চম)। সক্রিয় জনবল ১০ কোটি ৮০ লাখ। সক্রিয় সেনা ৬ লাখ ৫৪ হাজার (বিশ্বে সপ্তম)। রিজার্ভ সেনা ৬ লাখ ৫০ হাজার। রেঞ্জার্স, ফ্রন্টিয়ার কোরসহ মোট সামরিক শক্তি ১৭ লাখ (সক্রিয়, রিজার্ভ ও আধা সামরিক বাহিনী)।
ভারতের জনবল পাকিস্তানের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি এবং রিজার্ভ ও আধা সামরিক বাহিনীও বড়। পাকিস্তান যদিও কম জনবল নিয়ে কাজ করে, তবে তাদের মধ্যে অনিয়মিত বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে।
প্রতিরক্ষা বাজেটেও এগিয়ে আছে ভারত। দেশটির বাজেট (২০২৫-২৬) ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর তৃতীয়)। এটি জিডিপির ২ দশমিক ১ শতাংশ। এ ব্যয় পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
পাকিস্তানের বাজেট ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার (অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শীর্ষ দেশের তালিকায় নেই)। এ ব্যয় জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বৈদেশিক সামরিক সহায়তা ১০ কোটি ডলার (মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে)।
ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট পাকিস্তানের ছয় থেকে আট গুণ। দেশ দুটির সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে স্থলবাহিনী। দেশ দুটির রয়েছে ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত। দু’দেশের মধ্যে ১৯৪৭, ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালে প্রচলিত ঘরানার যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে। ভারতের ট্যাঙ্ক ৪ হাজার ৬১৪টি। সাঁজোয়া যান ১ লাখ ৫১ হাজার ২৪৮টি। কামান ৯ হাজার ৭১৯টি। বিশেষ বাহিনীর মধ্যে আছে প্যারা এসএফ, ঘাতক ফোর্স, এমএআরসিওএস।
পাকিস্তানের ট্যাঙ্ক ৩ হাজার ৭৪২টি। সাঁজোয়া যান ৫০ হাজার (আনুমানিক)। কামান ৪ হাজার ৪৭২টি (৩৭৫ স্বয়ংক্রিয় হাউইটজারসহ)। ট্যাঙ্ক, সশস্ত্র যান ও কামানে সংখ্যাগত দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত। পাকিস্তানেরও ট্যাঙ্কবহর প্রতিযোগিতামূলক।
ভারতের মোট বিমান ২ হাজার ২২৯টি। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান ৫১৩ থেকে ৬০৬টি। পাকিস্তানের মোট বিমান ১ হাজার ৩৯৯ থেকে ১ হাজার ৪৩৪টি। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান ৩২৮ থেকে ৩৮৭টি।