কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরে নির্বাচন, বেশি চাইলে জুনের মধ্যে
Published: 6th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের আগে কম সংস্কার চায় তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি একটু বেশি সংস্কার চায় তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রাক্তন দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মিলাম ও ড্যানিলোভিচের সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস কূটনীতিকদের বলেন, ছয়টি কমিশনের সুপারিশ করা সংস্কারের বিষয়ে সংলাপ শেষ হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। জুলাই সনদ আমাদের পথ দেখাবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদে প্রদত্ত সুপারিশের কিছু অংশ বাস্তবায়ন করবে এবং বাকিগুলো রাজনৈতিক সরকারগুলো বাস্তবায়ন করবে।
দুই প্রাক্তন কূটনীতিক প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাধীনতা অধিকারের কাজ এবং দেশকে গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এর কাজ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন। এ সময় ড.
রাষ্ট্রদূত মিলাম ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশে ব্যাপক সংস্কার বাস্তবায়ন এবং সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বড় সুযোগ এনে দিয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-রাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিচ বলেন, ভুয়া সংবাদ এবং বিভ্রান্তির হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের ইতিবাচক বক্তব্য এবং গুরুতর প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তারা বর্তমান বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং বহুল নির্যাতিত মিয়ানমার শরণার্থীদের জন্য সাহায্য হ্রাসের প্রভাব, পূর্ববর্তী শাসনামলে চুরি হওয়া কোটি কোটি ডলার পুনরুদ্ধার, সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রচেষ্টা এবং আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও আলোচনা করেন।
রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের সভাপতি এবং নির্বাহী পরিচালক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স র জন য ইউন স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভ্যাটিকানের মানব ভ্রাতৃত্ব সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ভ্যাটিকান সিটিতে আগামী ১২-১৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য মানবভ্রাতৃত্ব বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।
ভ্যাটিকানের ফন্ডাজিওনে ফ্রাতেল্লি তুত্তির মহাসচিব ফাদার ফ্রান্সেস্কো ওক্কেত্তা বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে এই আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
সাক্ষাতের সময় ওক্কেত্তা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের বৈশ্বিক প্রভাবের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “আপনি একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, আপনি এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব।”
আরো পড়ুন:
চীনের গ্রাম ও নগরায়নের সমন্বিত উন্নয়ন নিয়ে ঢাকায় সেমিনার
গঙ্গার পানি প্রবাহ খতিয়ে দেখলেন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা
মানব ভ্রাতৃত্ব বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনকে একটি ঐতিহাসিক আয়োজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যেখানে বিশ্বনেতা, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং চিন্তাবিদরা একত্রিত হবেন ঐক্য, শান্তি ও সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য।
এই আয়োজনে ‘টেবিলস অব হিউম্যানিটি’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি খসড়া করা হবে, যেখানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সার্বজনীন নীতিমালা নির্ধারণ করা হবে এবং পোপ ফ্রান্সিসের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী একটি নতুন মানব সনদ গঠনের দিকনির্দেশনা থাকবে।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে এক বিশাল জনসমাগমের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা এই সম্মেলনের অন্যতম বৃহৎ আয়োজন হবে। পাশাপাশি, এতে বৈশ্বিক কনসার্ট, আলোচনা সভা ও প্রতীকী মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা থাকবে, যা মানব ভ্রাতৃত্বের মূলনীতিগুলোকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করবে।
ওক্কেত্তা অধ্যাপক ইউনূসকে জানান, বিশ্বের বিশিষ্ট নেতারা এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন।
সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস পোপ ফ্রান্সিসের সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং তার প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “তিনি একজন অসাধারণ মানুষ।”
জবাবে ওক্কেত্তা বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা শুধু আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে আসিনি বরং বাংলাদেশকে সমর্থন, যত্ন ও ভালোবাসা জানাতেও এসেছি।”
অধ্যাপক ইউনূস এই আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমি এই সম্মেলনের জন্য আগ্রহী হয়ে অপেক্ষা করছি।”
ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসের ‘থ্রি জিরো প্রিন্সিপল’-শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ-এর প্রতি স্বীকৃতি প্রদান করেছে, যা তার রূপান্তরমূলক নেতৃত্ব ও ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বিশ্ব গঠনের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
ঢাকা/হাসান/এসবি