Risingbd:
2025-03-06@16:21:36 GMT

পাট দিবসে পাটকথন

Published: 6th, March 2025 GMT

পাট দিবসে পাটকথন

প্রায় ৩ হাজার বছর আগে থেকেই বাংলায় পাটের চাষ শুরু হয়েছিল। তখন গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে পাট চাষ হত। উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ায় এবং গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের দোআঁশ মাটিতে ভালো ফলন হয় এই আঁশ জাতীয় উদ্ভিদের। আর সে অনুযায়ী পূর্ববাংলা ও পশ্চিমবঙ্গেই পৃথিবীর সিংহভাগ পাট উৎপাদিত হয়ে থাকে। এছাড়াও চীন, ব্রাজিল ও থাইল্যান্ডসহ বেশকিছু অঞ্চলে পাটের চাষ হয়। 

চৈত্র-বৈশাখ মাসে পাট বোনা শুরু হয়। বীজ থেকে চারা আসতে সময় লাগে ৩-৫ দিন। শাক খাওয়ার উপযোগী হয় ১৫-১৬ দিনে। পাট গাছ পরিণত হতে সময় লাগে সাড়ে ৩ মাস থেকে ৪ মাস। কাটা পাট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয় ২২-২৫ দিন। পঁচানোর পর আঁশ পাটকাঠি থেকে আলাদা করে রোদে শুকাতে হয়। পাটের রঙ সাদাটে বা হালকা লালচে হলে ভালো দাম পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৭ মণ পাটের উৎপাদন হয়।

পাটকে বাগানের এক প্রকার উদ্ভিদ বলে গণ্য করা হত। যার পাতা সবজি এবং ঔষুধ রূপে ব্যবহৃত হতো।  যদিও এখনো হয়। পাট পাতা বা শাক খুব সুস্বাদু খাবার। আর এর ঔষধি গুণ তো রয়েছেই। তবে বর্তমানে পাটের চাষ করা হয় মূলত এর তন্তুর জন্য। 

পাট এক প্রকার দ্বিবীজপত্রী আঁশযুক্ত গাছ। এর ছাল বা বাকল থেকেই আসে সোনালি আঁশ এবং ভেতরের শক্ত অংশটি কাঠি। প্রাচীন কালে এই কাঠিকে বলা হতো নালিতা। কোন কোন অঞ্চলে একে নল, নলখাগড়া টাঙ্গি বা টাঙ্গা বলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে পাটকাঠি রূপার কাঠিতে পরিণত হয়েছে।

উষ্ণ আবহাওয়া এবং মৌসুমী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে বাংলাদেশে পাটের ফলন সব থেকে বেশি হয়। এমনকি এই আবহাওয়ার কারণেই বাংলাদেশে পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জাতের পাট উৎপন্ন হয়। মূলত বছরে একবার পাট চাষ হয়। 

পাললিক বেলে দোআঁশ, এঁটেল দোআঁশ, নদীর অববাহিকার মাটিতে পাট ভালো জন্মে, যার পিএইচ পরিসীমা ৪.

৮ থেকে ৫.৮ এর মধ্যে থাকে।

পাট চাষের জন্য অনুকূল পরিবেশ হলো ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা। ৭০-৯০ শতাংশ আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং বপনের সময় পাটের জন্য বার্ষিক ১৬০-২০০ সেমি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। খুব উঁচু নয় আবার নিচু নয়, অর্থাৎ বৃষ্টির পানি যেখানে খুব বেশি সময় স্থায়ী হয় না এমন জমিতে পাট চাষ করা ভালো।

বাংলাদেশে ময়মনসিংহ, রংপুর, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া অঞ্চলে পাটের চাষ ভালো হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায়ও পাট চাষ করা হয়। 

পাটের ইংরেজি শব্দ ‘জুট’ (Jute)। কিন্তু জুট শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে অনেকের মতে উরিয়্যা শব্দ ‘ঝুট’ বা সংস্কৃত শব্দ জট থেকে ইংরেজি জুট শব্দের উৎপত্তি। 

বাংলাদেশে বিভিন্ন জাত মিলিয়ে শ’খানেক জাতের পাট পাওয়া যায়। আগেকার সময়ে পাটের আলাদা কোন শ্রেণি বিভাগ ছিল না, কিন্তু বিভিন্ন নামে ডাকা হত। তন্মধ্যে ধলসুন্দর, বাউ, বিদ্যাসুন্দর, কেউত্রা, পাইধা, কাজলা, কাটাইওবা উল্লেখযোগ্য। তবে বাণিজ্যের উদ্দ্যেশে দুই প্রকারের পাট বেশি ব্যবহৃত হয়। সেগুলো হলো- সাদা পাট বা তিতা পাট, যা বৈজ্ঞানিক নাম করকোরাস ক্যাপসালারিস এবং তোষা পাট বা মিঠা পাট, যার বৈজ্ঞানিক নাম করকোরাস ওলিটোরিয়াস। এছাড়া মেস্তা নামের পাটও জনপ্রিয়, যার বৈজ্ঞানিক নাম হিবিসকাস ক্যানাবিনাস।

তবে যেসব দেশে পাটের চাষ হয় না, সেখানে পাটের বিকল্প হিসেবে কেনাফ নামের এক প্রকার উদ্ভিদের আঁশ ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশেও কিছু এলাকার মাটিতে এই কেনাফ চাষ করা হয়। পাটের মানের ভিত্তিতে কেনাফকে নিম্ন মানের পাট ধরা হয়। বাংলাদেশে একটা সময় সবথেকে বেশি চাষ হতো সাদা পাট যদিও বর্তমানে তোষা পাট বেশি চাষ করা হয়।

সাদা পাটের আদি আবাস বা উৎপত্তি স্থল হলো চীন, তোষা পাটের আদি নিবাস মিসর, মেস্তার আদি নিবাস হলো ভারত এবং কেনাফ এর উৎপত্তি স্থল চীন ও থাইল্যান্ড। বিভিন্ন ধরনের পাটের উৎপত্তি বা আদি নিবাস যে দেশই হোক না কেন বাংলাদেশের থেকে ভালো ভালো মানের পাট আর কোন দেশে উৎপাদন হয় না। এ বছরও বাংলাদেশ ভালো মানের পাট উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বা অঞ্চলের আবহাওয়া, মাটি, পানি একেক রকম। যার জন্য পাটের আঁশের গুণাগুণ ভিন্ন হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়ার এই ভিন্নতার জন্য পাটের আঁশের মানের তারতম্যের ভিত্তিতে পাটকে অঞ্চলভিত্তিক পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

এর মধ্যে বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল জেলায় উৎপাদিত পাট কে জাত পাট বলা হয়। এ অঞ্চলে উৎপাদিত সাদা ও তোষা পাটের আঁশ খুবই শক্ত। জাত পাট অন্য সকল পাটের থেকে উজ্জ্বল হয়ে থাকে এবং এ অঞ্চলের পাটের তৈলাক্ততা বেশি।

বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় উৎপাদিত পাট মূলত হার্ড ডিস্ট্রিক্ট পাটের অন্তর্গত। হার্ড ডিস্ট্রিক্ট পাট জাত পাটের মতো একই শক্তি সম্পন্ন। তবে জাত পাটের তুলনায় কিছুটা কম সুক্ষ্ম। হার্ড ডিস্ট্রিক্ট অঞ্চলে তোষা পাট বেশি হয়। পাটের উজ্জ্বলতা ও তৈলাক্ততা অধিক হয়। এ অঞ্চলের তোষা পাটের রং উজ্জ্বল কাঁচা সোনা বর্ণের।

বৃহত্তর পাবনা জেলায় উৎপাদিত পাটকে ডিস্ট্রিক্ট পাট বলা হয়। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম পাড় অঞ্চলে উৎপাদিত পাট ডিস্ট্রিক্ট পাটের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও নোয়াখালী, সিলেট, পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত পাটকে ডিস্ট্রিক্ট পাট হিসেবেই ধরা হয়। এ অঞ্চলের পাটের আঁশ কিছুটা মোটা হয়। উজ্জ্বলতা এবং  তৈলাক্ততাও কিছুটা কম। তবে পাটের আঁশের শক্তি জাত পাটের মতোই। এ জাতের সাদা পাটের রঙ সাদাটে এবং তোষা পাটের রঙ বাদামী বা ফ্যাকাশে লাল হয়।

এছাড়া বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, বরিশাল, খুলনা অঞ্চলে উৎপাদিত পাটকে বলা হয় সফট ডিস্ট্রিক্ট পাট। পাটের আঁশ অপেক্ষাকৃত মোটা, তবে নরম। পাটের আঁশের উজ্জ্বলতা ও তৈলাক্ততা তুলনামূলকভাবে কম। বৃহত্তর রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া অঞ্চলের পাটগুলো নর্দান পাটের অন্তর্গত। তবে একই এলাকার কিছু স্থানে ভিন্নধর্মী কিছু পাট উৎপাদন হয়। এ জাতের পাটও অপেক্ষাকৃত মোটা। উজ্জলতা ও তৈলাক্ততাও কম। 

পাট বাংলাদেশের বহুমুখী পণ্য তৈরির প্রধান কাঁচামাল। প্যাকেজিং শিল্পে ব্যবহার্য অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ আঁশ হলো পাট। বাংলাদেশের ১৯টি পণ্যের প্যাকেজিং মোড়কের জন্য পাটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে পাট এখন প্যাকেজিংয়ে সীমাবদ্ধ নেই। পাট থেকে নতুন নতুন ফেব্রিক্স তৈরি হচ্ছে এবং তা পরিধানের যোগ্যও।

পাট থেকে নতুন নতুন পণ্য তৈরির গবেষণা চলছে বহু আগে থেকেই। এরই ধারাবাহিকতায় পাট থেকে তৈরি হয়েছে রেসিং কার, শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক, বায়োপলি, ঢেউটিন এবং জুটেক্স নামক এক প্রকার ফেব্রিক্স, যা বাঁধ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও গবেষণার ফলে নিত্য নতুন পণ্য পাচ্ছি আমরা।

২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে বিজেএমএ ও বিজেএসএ এর তথ্য মতে (জুলাই/২০২৩- ফেব্রুয়ারি/২০২৪) বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত পাটজাত পণ্যের পরিমাণ ৩.৪৪ লাখ মেট্রিক টন। মোট রপ্তানির পরিমাণ ১.০৩ লাখ মেট্রিক টন। মোট রপ্তানি আয় ৯৬.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ ১০৫৮.৯৮ কোটি টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে পাট উৎপাদন ১৮ শতাংশ কমে ৭৫ লাখ ৬৫ হাজার বেলে নেমেছে। 

পাটশিল্পের গবেষণা, ইনোভেশন তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, জেডিপিসি, বিজেএমসি একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছর ৬ মার্চ জাতীয় পাটদিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও জেডিপিসির যৌথ উদ্যোগে পাট পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও জাতীয় পাট মেলার আয়োজন করা হয়েছে জেডিপিসি প্রাঙ্গণে। আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত চলবে এ মেলা। 

বাংলার পাটের অতীত সুনাম যেমন রয়েছে, তেমনি পাট শিল্পের ভবিষ্যতও উজ্জ্বল। মাঝে কয়েক দশক পাটের উত্থান-পতন দেখেছে বিশ্ববাসী। তরুণ উদ্যোক্তারা নতুন নতুন ইনোভেশন, ফিউশনের মাধ্যমে পাটশিল্পে নতুনত্ব নিয়ে এসেছে, যা বিশ্ববাজারেও সমাদৃত হচ্ছে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, বাংলাদেশ আবারও সোনালী আঁশের ও রুপার কাঠি খ্যাত পাট নিয়ে বিশ্বে মাথাউঁচু করে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশে পাটশিল্পের সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাও রয়েছে। সব সমস্যাকে ছাপিয়ে পাট শিল্পের সোনালী সুদিন ফিরে আসবে, জাতীয় পাট দিবসে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

(লেখক: উদ্যোক্তা, ওনার ও ডিজাইনার, জুট হ্যাভেন)

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎপ দ ত প ট প ট উৎপ দ ত ল ক তত ব যবহ র উৎপত ত চ ষ কর র জন য র উৎপ

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ কমল ১১ হাজার কোটি টাকা

শিক্ষা খাতের উন্নয়ন বরাদ্দে বড় ধরনের কাটছাঁট করা হয়েছে। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমেছে ১১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ২০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। মূল এডিপিতে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সরকার সর্বশেষ এডিপি নিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি পাস হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও প্রতিবছর বছরের মাঝখানে সংশোধিত এডিপিতে এই দুটি খাতের ওপর বেশি কোপ পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

কিন্তু এবার ব্যতিক্রম পরিস্থিতি ছিল। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গণ-অভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়েছিল শিক্ষার্থীদের হাত ধরে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে। মূলত সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বাতিলের দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়। কারণ, বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী মনমতো চাকরি বা কাজ পান না। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারত্ব হার সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পরও ভালো চাকরির জন্য দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়ার সময় দেখা গেল, এবারও অন্য বছরের মতো বড় ধরনের কাটছাঁট করা হলো শিক্ষা খাতে।

কেন কমানো হলে শিক্ষা খাতের উন্নয়ন বরাদ্দ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে তার বেশ কয়েকটি কারণ জানা গেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ খরচ করার মতো সক্ষমতা নেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে কয়েকটি নতুন কারণও। যেমন বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ঠিকাদারেরা শিক্ষা খাতসহ অন্যান্য প্রকল্পে কাজ করছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ঠিকাদারকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আবার অনেক প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষা খাতের প্রকল্পের অগ্রগতি বেশ কম। তাই বছরের অর্ধেক পার হওয়ার পর বরাদ্দ কমানোর বিকল্প ছিল না।

এবারই প্রথম নয়, প্রতিবার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানো হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছিল। ওই বছর সংশোধিত এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ১৭ হাজার ২২৩ কোটি টাকা।

তলানির ১০টি দেশের একটি বাংলাদেশ

শিক্ষা খাতের উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ সম্ভব নয়। শিক্ষা এমন একটি বিষয়, যা অন্য সব খাতকে স্পর্শ করে। তাই শিক্ষার উন্নয়নে অর্থ ব্যয়কে একধরনের বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কোন দেশ শিক্ষা খাতে কত খরচ করে, তার একটি পরিসংখ্যান রয়েছে বিশ্বব্যাংকের তথ্যভান্ডারে। সেখানে দেখা যায়, বিশ্বব্যাংকের ১৮৯টি সদস্যদেশের মধ্যে জিডিপির অনুপাতে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে কম খরচ করে, এমন ১০টি দেশের একটি বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, বাংলাদেশ শিক্ষা খাতে জিডিপির ২ শতাংশের কম খরচ করে। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) তা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশের পেছনে আছে বারমুডা, হাইতি, মৌরিতানিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, মোনাকো, পাপুয়া নিউগিনি, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদান। এসব দেশের বেশির ভাগই অতি দারিদ্র্য হিসেবে পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জিডিপির অনুপাতে শিক্ষায় বরাদ্দ অন্তত ৬ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। সেটি করতে হলে বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি কৃষি ঋণ বিতরণ
  • দেশে ১০ দিনে চারবার কম্পন, বিপদের লক্ষণ
  • শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ কমল ১১ হাজার কোটি টাকা
  • সিলেটে আবারো ভূমিকম্প অনুভূত 
  • রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
  • মুনাফা কমলেও লভ্যাংশ বেশি দেবে ইউনিলিভার কনজ্যুমার
  • চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাড়ছে রপ্তানি
  • অনলাইন: ফেব্রুয়ারিতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে পৌনে ৩ শতাংশ
  • সাত মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোতে শীর্ষে যে ১০ দেশ